প্রবাসী কর্মীদের মৃত্যুর প্রধান কারণ উচ্চ অভিবাসন ব্যয় তথা বেশি টাকা খরচ করে বিদেশ যাওয়া। কর্মীরা বিদেশ যায় চড়া সুদে ঋণ করে। বিদেশ থেকে থেকে যে টাকা পাঠায় তা দিয়েও সুদ শোধ হয় না। কর্মী সবসময় মরিয়া থাকে বিদেশে যাওয়ার খরচ তুলতে। আর সেটিই তাদের মৃত্যু ডেকে আনে বলে জানান জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য ও সাবেক প্রবাসী কল্যাণ সচিব সেলিম রেজা।

বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক গবেষণা সংস্থা রামরুর আয়োজিত ‘উপসাগরীয় অঞ্চলে প্রবাসী কর্মীদের স্বাস্থ্য সেবাপ্রাপ্তি’ বিষয়ক কর্মশালায় তিনি এ কথা জানান।

কর্মশালায় আরও বক্তৃতা করেন অভিবাসন উন্নয়ন সংক্রান্ত সংসদীয় ককাসের সভাপতি ব্যারিস্টার শামীম হায়াদ পাটোয়ারি, মহাসচিব মাহজাবিন খালেদ, সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রানা মোহাম্মদ সোহেল, রামরুর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সি আর আবরারসহ অভিবাসন খাতে অংশীজনরা।
কর্মশালায় প্রকাশিত রামরুর গবেষণায় বলা হয়েছে, সৌদি আরব, কাতারসহ উপসাগরীয় অঞ্চলের ছয়টি দেশে অভিবাসী শ্রমিকরা কম বেতন পান। তাঁরা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ঝুঁকিতে রয়েছেন। এসব দেশে প্রবাসী কর্মীর স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া কঠিন।  গবেষণার তথ্য তুলে ধরেন সি আর আবরার।

মেহের নেগার নামে এক সৌদি প্রবাসী নারী কর্মীর ওপর কর্মক্ষেত্রে নির্যাতনের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে গবেষণায়। এসেছে জাকিয়ার (ছদ্মনাম) কথাও। সৌদিতে গিয়ে তার স্তন ক্যান্সার ধরা পড়লে কফিল (নিয়োগকারী) চিকিৎসা করায়নি। বরং তাঁকে নিয়োগে যে খরচ হয়েছে, তা তুলতে দেশে আসতে দেয়নি। আটকে নির্যাতন করে। আর নাটোরের ইমদাদুল হক ফিরেছেন পঙ্গু হয়ে।

গত ডিসেম্বরেও উপসাগরীয় অঞ্চলে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সেবায় ঘাটতি নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে রামরু। বুধবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক হাজার ১০১ জন কুয়েত অভিবাসী স্বল্প বেতনের শ্রমিকের ওপর সমীক্ষা চালানো হয়েছে। নথিপত্রের অভাবে তারা সরকারি হাসপাতাল এবং ক্লিনিকে সেবা নিতে পারেন না। অনেক কর্মী বৈধও নন। অনেকের কাজের পারমিট নেই। অথবা পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তারা চিকিৎসা পান না। আবার অনেক কর্মী বৈধভাবে উপসাগরীয় দেশে গেলেও কফিল কাজের অনুমতি নবায়ন করে না। ফলে শ্রমিকরা অবৈধ হয়ে পড়েন। তারা যে মজুরি পান, তাতে চিকিৎসকরা খরচ বহন করা সম্ভব নয়।