সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করাসহ চার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে তারা শাহবাগ মোড়ে বসে পড়েন। এর ফলে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। 

পরে ৯ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন, আব্দুর রহমান (২৭), আরিফ হোসেন (২২), আবু বকর ছিদ্দিক (৩০), রোকন হোসেন (৩০), শরিফুল হাসান শুভ (৩২), তাসনিমুল হাসান অর্ণব (২৭), রাকিবুল হাসান (২৮), মো.মামুন রশিদ রতন (৩০) ও মো. জাকির হোসেন (২৯)। শাহবাগ থানা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

'সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদের' সদস্যসচিব মোহাম্মদ রাসেল সমকালকে বলেন, পুলিশ আমাদের ওপর লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দিয়েছে। আমাদের কয়েকজন আহত হয়েছেন। 

এর আগে, দুপুরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শাহবাগ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। বাধা পেয়ে সেখানেই বসে পড়েন তারা। পরে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে খোলা চিঠি লিখে বেলুনে বেঁধে তা উড়িয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে ত্রিশোর্ধ্বরা শিক্ষাসনদ ছিঁড়ে ফেলেন।  

আন্দোলনকারীদের দাবির মধ্যে আরও রয়েছে, চাকরিতে আবেদন ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা, অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধি এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে বঙ্গবন্ধুর নামে ‘বঙ্গবন্ধু ল’ কমপ্লেক্স (বঙ্গবন্ধু চেয়ার এবং একটি ম্যুরাল) স্থাপন করা।

সংগঠনের আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম শুভ বলেন, বর্তমান সরকার ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ২০১১ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসরের বয়স দুই বছর বৃদ্ধি করে ৫৭ থেকে ৫৯ বছর করা হলেও চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হয়নি। ফলে দেশে বাড়ছে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা।

তিনি আরও বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পদযাত্রা করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের বাধা দেওয়ায় আমরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করি। পরে পুলিশ আমাদের সরিয়ে দিয়েছে। 

ডিএমপি রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মো. আশরাফ হোসেন, তারা শাহবাগ অবরোধ করলে পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয়। প্রতিমন্ত্রী তাদের সঙ্গে এক ঘণ্টা কথা বলেন এবং তাদের দাবির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলে আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করেন। প্রতিমন্ত্রীর কথায় আশ্বস্ত হয়ে তারা প্রথমে চলে যেতে চাইলেও পরে আবারও শাহবাগ অবরোধ করেন। আমরা তাদের হুইসেল বাজিয়ে ও সতর্ক করে সেখান থেকে সরিয়ে দিই। তাদের ওপর কোনো ধরনের লাঠিচার্জ করা হয়নি।

বিষয় : বয়সসীমা ৩৫ শাহবাগ মোড় অবরোধ

মন্তব্য করুন