ঢাকা শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

করোনা সন্দেহে মাকে ফেলে গেল ছেলে, পুলিশ নিল হাসপাতালে

করোনা সন্দেহে মাকে ফেলে গেল ছেলে, পুলিশ নিল হাসপাতালে

ফাইল ছবি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২০ | ০৯:০০ | আপডেট: ৩০ নভেম্বর -০০০১ | ০০:০০

কয়েকদিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন ৫৫ বছর বয়সী মনোয়ারা বেগম। রাজধানীর মিরপুর এলাকার একটি বস্তিতে ছেলের সঙ্গে থাকেন তিনি। করোনার উপসর্গ থাকায় আক্রান্ত সন্দেহে তাকে অন্য কোথাও যাওয়ার পরামর্শ দেন বস্তির ঘরের মালিক।

এরপর নিজের ছেলেই তাকে ফেলে যান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে। সেখানে দু’দিন ধরে ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে ফুটপাতে পড়ে থাকেন হতভাগ্য মনোয়ারা। শনিবার বিষয়টি নজরে আসার পর দ্রুত তাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ।

ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই আবদুল খান জানান, করোনা আক্রান্ত সন্দেহে স্বজনরা তাকে হাসপাতালের নতুন ভবনের সামনে ফেলে গিয়েছিল। খবর পেয়ে দুপুরে তাকে এনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। তিনি করোনা আক্রান্ত কি না পরীক্ষার পর তা জানা যাবে। তবে তার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়।

ঢামেক সূত্র জানায়, মিরপুর কমার্স কলেজের পাশের বস্তিতে আবদুস সালাম নামে এক ব্যক্তির মালিকানাধীন ঘরে পরিবারের সঙ্গে থাকেন মনোয়ারা। তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার জয়রামপুর এলাকায়। সম্প্রতি শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় ঘরের মালিক তাকে বস্তিতে রাখা ঠিক হবে না বলে জানিয়ে দেন। তাকে অন্য কোথাও রেখে আসার কথাও বলেন। এরপর মনোয়ারার ছেলে মোজাম্মেল ও ঘরের মালিক সালাম তাকে হাসপাতালের সামনে ফেলে যান।

এ ঘটনাটি দু’দিন আগের বলে জানান মনোয়ারা। তবে অসুস্থ থাকায় তিনি তারিখটি পুরোপুরি নিশ্চিত করতে পারেননি। ফেলে যাওয়ার পর হতভম্ব অবস্থায় কী করবেন বুঝতে পারছিলেন না তিনি। শারীরিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় কাউকে ডেকে কিছু বলতেও পারেননি। আবার ফুটপাতে প্রায় সবসময়ই কিছু ভবঘুরে মানুষ থাকেন বলে তার বিষয়টি প্রথমে কেউ বুঝতে পারেননি। শেষে শনিবার তার অসুস্থতা নজরে আসে অ্যাম্বুলেন্স চালকদের। এরপর তারা পুলিশকে জানান। দুপুর দেড়টার দিকে তাকে উদ্ধার করে করোনা ইউনিটে ভর্তি করে পুলিশ। 

পুলিশ জানায়, মনোয়ারার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তার স্বজনদের খুঁজে বের করা হবে। এ ধরনের অমানবিক ঘটনার ব্যাপারে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। বস্তিতে রাখার ক্ষেত্রে সমস্যা হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে দিতে পারতেন স্বজনরা। তা না করে এমনভাবে রাস্তায় ফেলে যাওয়া গর্হিত অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।



আরও পড়ুন

×