ঢাকা বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

রাজউকের ঝিলমিল প্রকল্পে প্লটের চেয়ে বরাদ্দ বেশি

সংরক্ষিত কোটায় বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩২টি প্লট

রাজউকের ঝিলমিল প্রকল্পে প্লটের চেয়ে বরাদ্দ বেশি

ফাইল ছবি

অমিতোষ পাল 

প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২৪ | ০০:৫১ | আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৪ | ০৭:৩০

ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পের বিশেষ কোটার প্লট নিয়ে বিপাকে পড়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখার জন্য গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এসব প্লট বিভিন্ন ব্যক্তিকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে বরাদ্দ দেওয়া হলেও বাস্তবে এসব প্লটের অস্তিত্ব নেই। কারণ, সংরক্ষিত কোটায় থাকা প্লটের চেয়ে ৩২টি প্লট বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত বরাদ্দের কারণে যারা প্লট পেয়েছেন, তারাও পড়েছেন বিপাকে।

রাজউকের প্লট বরাদ্দ বিধিমালা অনুযায়ী, প্রতিটি আবাসন প্রকল্পে ১০ শতাংশ প্লট সংরক্ষিত থাকে। রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সরকার চাইলে কাউকে ওই সংরক্ষিত প্লট দেওয়ার সুপারিশ করতে পারে, যদি রাজধানীতে তাঁর থাকার ব্যবস্থা না থাকে। রাজউক তখন তাদের প্লট বরাদ্দ দিয়ে বাসস্থানের ব্যবস্থা করে। 

কেরানীগঞ্জে ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পে পাঁচ কাঠার প্লট আছে ৩৯৭টি এবং তিন কাঠার ১ হাজার ৭৩টি। এর মধ্যে পাঁচ কাঠার ৪০টি ও তিন কাঠার ১০১টি প্লট রাজউক বিধিমালার ১৩/এ ধারায় বরাদ্দের জন্য সংরক্ষিত ছিল। কিন্তু রাজউক ৪০টির জায়গায় ৭০টি ও ১০১টির জায়গায় ১০৩টি প্লট বরাদ্দ দিয়ে ফেলেছে। ২০১৯ সালের জুনে এসব বরাদ্দের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি ধরা পড়ার পর প্লট হস্তান্তরের বিষয়ে নিরীক্ষা শাখা থেকে আপত্তি দেওয়া হয়। এর পর প্লট হস্তান্তরের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। ফলে অনেকে পুরো টাকা জমা দিয়েও প্লট  রেজিস্ট্রি করে নিতে পারেননি। অনেকের বকেয়া কিস্তির টাকাও রাজউক নিচ্ছে না। এ অবস্থায় যারা প্লট বরাদ্দ পেয়েছেন, তারা পড়েছেন বিপাকে।

রাজউকের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, বিগত সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্লট দেওয়ার জন্য চিঠি আসে। ওই চিঠি পাওয়ার পর রাজউক প্রশাসনের প্লট বরাদ্দ দেওয়া ছাড়া গত্যন্তর ছিল না।

গত ৫ আগস্টের দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ১৩/এ ধারায় বরাদ্দ দেওয়া প্লটের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেন। ওই তালিকা তৈরির পর দেখা যায়, ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পে সংরক্ষিত কোটায় ৩২টি প্লট অতিরিক্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

প্লট পাওয়া একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আর্থিক সংকটের কারণে তিনি প্লটটি রেজিস্ট্রি করে নিতে পারেননি। বছরখানেক আগে রেজিস্ট্রি করে নিতে চাইলে রাজউক আপত্তি জানায়। তখন তিনি ঘটনাটি জানতে পারেন। এর পর থেকে রাজউকে ঘোরাঘুরি করছেন, কিন্তু প্লট রেজিস্ট্রি করে নিতে পারেননি। এখন শুনছেন তাদের প্লট বরাদ্দ বাতিল হয়ে যাবে।

এ প্রসঙ্গে রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে ইতোমধ্যে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি। আদালত যে নির্দেশনা দেবেন, সে অনুযায়ী রাজউক কাজ করবে।’

আরও পড়ুন

×