'নগর দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতির ঘাটতি রয়েছে'

সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২১ | ০৯:২১ | আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২১ | ০৯:২১
ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা ব্যবস্থাপনায় সরকারের সাফল্য নিয়ে বিতর্কের অবকাশ নেই। বরং এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্য বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে জাতিসংঘের সিভিল সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোকে নারী ও শিশুবান্ধব করার পাশাপাশি প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর বসবাসের উপযোগী করা হয়েছে। তবে নগর দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতিতে ঘাটতি রয়েছে। সম্প্রতি চট্টগ্রামে ড্রেনেজ ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে দু'জনের প্রাণহানির বিষয়ে সরকারি সংস্থাগুলো দায় এড়াতে পারে না। এ ছাড়া দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে প্রশংসিত হলেও এখন পর্যন্ত উপকূলীয় অঞ্চলে অনেক মানুষ দুর্যোগ ঝুঁকিতে বসবাস করছে।
শনিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে এফডিসিতে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, বর্তমানে দেশের ১৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ রয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিসিএস দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ক্যাডার চালুর প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন। বজ্রপাত ঝুঁকি কমাতে সারাদেশে এক কোটি তালগাছ রোপণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এরই মধ্যে ৩৮ লাখ তালগাছ লাগানো হয়েছে। তবে অনিয়মের কারণে সরকার তালগাছ প্রকল্প থেকে সরে এসে আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছে। বজ্রপাত ঝুঁকি নিরসনে ৪৭৬ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় সচেতনতা বৃদ্ধি, বজ্রপাতের আগাম সংকেত দেওয়া এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।
হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, দুর্যোগজনিত কারণে বাস্তুচ্যুত হয়ে অনেক মানুষ শহরে এসে ভিড় করছে। একই সঙ্গে নগর দুর্যোগ মোকাবিলায়ও আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন নগরের জলাবদ্ধতা বাসিন্দাদের দুর্বিষহ ভোগান্তিতে ফেলে দেয়।
অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ঝুঁকি কমাতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির পক্ষ থেকে ১০ দফা সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে- ২০২১-২৫ মেয়াদের জন্য নেওয়া জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ নিশ্চিত করা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের আলোকে জাতীয় পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তহবিল কার্যকর করা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ডিগ্রিধারীদের জন্য বিসিএস দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ক্যাডার চালু করা, দুর্যোগ-সংক্রান্ত গবেষণা কাজে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগকে সম্পৃক্ত করা, নগর দুর্যোগের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে সিটি করপোরেশন এলাকাগুলোয় ভূমিকম্প সহনীয়তা নিশ্চিত করা প্রভৃতি।
প্রতিযোগিতায় বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির বিতার্কিকদের পরাজিত করে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির বিতার্কিকরা চ্যাম্পিয়ন হন। অংশগ্রহণকারী দলের মধ্যে ট্রফি ও সনদ দেওয়া হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, ড. মেহরুবা, সাংবাদিক মাঈনুল আলম ও শাহরিয়ার অনির্বাণ।