- চাকরি
- শোকজ ছাড়া কর্মী অপসারণ করতে পারবে দুদক
চাকরি ফেরত পাবেন না শরীফ
শোকজ ছাড়া কর্মী অপসারণ করতে পারবে দুদক

কোনো ধরনের কারণ দর্শানো (শোকজ) ছাড়াই কোনো কর্মীকে চাকরি থেকে অপসারণের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিধি অবৈধ বলে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এছাড়া রায়ে বিধিটি নিয়ে দুদকের চাকরিচ্যুত উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনের করা রিটটিও পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন। এর ফলে কোনো ধরনের কারণ দর্শানো ছাড়াই কোনো কর্মীকে চাকরি থেকে অপসারণ-সংক্রান্ত দুদকের বিধিটি বহাল থাকছে।
২০০৮ সালের দুদক (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালার ৫৪ (২) বিধিতে বলা হয়েছে, ‘এই বিধিমালায় ভিন্নরূপ যা কিছুই থাকুক না কেন, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ না দর্শিয়া কোনো কর্মচারীকে নব্বই দিনের নোটিশ প্রদান করে অথবা নব্বই দিনের বেতন নগদ পরিশোধ করে তাকে চাকরি হতে অপসারণ করতে পারবে।’
আদালতে শরীফের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. সালাহউদ্দিন দোলন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মিয়া মোহাম্মদ ইশতিয়াক। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
রায়ের পরে খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, আপিল বিভাগের রায়ে বিধিটি বৈধতা পেয়েছে। অর্থাৎ বিধিটি বহাল থাকছে। তবে পূর্ণাঙ্গ রায় পেলে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত বলা যাবে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৮ সালের দুদক (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালার ৫৪ (২) বিধি অনুসারে মো. আহসান আলী নামের দুদকের এক কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছিল। তিনি ৫৪ (২) বিধির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেছিলেন। সে রিটে হাইকোর্ট ২০১১ সালের ২৭ অক্টোবর এ বিধি বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে দুদক লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে, যা ২০১৬ সালের নভেম্বরে খারিজ করেন আপিল বিভাগ। এর বিরুদ্ধে পরের বছর দুদক পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করে। পরে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর দুদককে আপিল করার অনুমতি দেন। আর এই আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়। পরে দুদক আপিল করে।
এদিকে দুদকের উপসহকারী পরিচালক পদ থেকে চাকরিচ্যুত মো. শরীফ উদ্দিনকে গত বছর ১৬ ফেব্রুয়ারি অপসারণ করলে তিনিও দুদক কর্মচারী বিধিমালার ৫৪ (২) বিধি ও চাকরিচ্যুতির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন। পরে ১১ এপ্রিল তা শুনানির জন্য ওঠে। কিন্তু তখন পর্যন্ত মো. আহসান আলীর মামলায় দুদকের দুদকের রিভিউ আবেদনের নিষ্পত্তি না হওয়ায় শরীফের রিটের শুনানি মুলতবি করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। পরে এ মুলতবি আদেশের বিরুদ্ধে গত বছর ১৬ জুন আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন শরীফ। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩ জানুয়ারি শরীফের সেই লিভ টু আপিল ও দুদকের আপিল শুনানির জন্য একসঙ্গে আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় উঠে। পরে আবেদন দুটির একসঙ্গে শুনানি শেষে রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।
মন্তব্য করুন