ভারত এমন একটি দেশ, যেখানে রাজনৈতিক নেতাদের ভাগ্য অনেকাংশে রেল ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে। দেশটির যোগাযোগ ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান মাধ্যম আন্তঃরেল ব্যবস্থা। রেল উন্নয়নে দেশটির সরকার প্রচুর বিনিয়োগ করলেও সিগন্যাল ব্যবস্থায় তেমন নজর নেই। ফলে প্রায়ই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয় দেশটির জনগণকে। খবর এনডিটিভি ও রয়টার্সের।

 ভারতে দুই দশকের বেশি সময়ের মধ্যে ভয়াবহতম ট্রেন দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে উদ্ধার কাজ রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় অন্তত ২৭৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। যদিও শনিবার নিহতের সংখ্যা ২৮৮ বলা হয়েছিল।

তবে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ আহত হওয়ায় নিহতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা করছেন উড়িষ্যার চিফ সেক্রেটারি প্রদীপ জৈন। উদ্ধার অভিযান শেষ হয়েছে বলে জানান তিনি। আহতদের মধ্যে প্রায় ৯০০ জন চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার। ২৬০ জনের চিকিৎসা চলছে। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

রাষ্ট্র পরিচালিত ইন্ডিয়ান রেলওয়েজ জানায়, প্রতিদিন তারা গড়ে ১ কোটি ৩০ লাখ যাত্রী পরিবহন করে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘটা ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনার জন্য রেলের পুরোনো অবকাঠামোকে দায়ী করা হচ্ছে। এ ছাড়া অগোছালো নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ চলছে। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে বলেও জানায় রেল কর্তৃপক্ষ। সংঘর্ষ কীভাবে হয়েছে এবং প্রথম কোন ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে, তা নিয়ে বিভিন্ন তথ্য রয়েছে। তবে ভারতীয় রেলওয়ের মুখপাত্র অমিতাভ শর্মা বলেন, করমণ্ডল এক্সপ্রেসই প্রথমে লাইনচ্যুত হয়।

রেলওয়ে বোর্ডের সদস্য জয়া ভর্মা সিনহা বলেন, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে এখন কম্পিউটার-নিয়ন্ত্রিত ট্র্যাক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের ওপর মনোযোগ দেয়া হয়েছে। একে ‘ইন্টারলকিং সিস্টেম’ বলা হয়, যা একটি ট্রেনকে একটি খালি রেললাইনের দিকে যেতে নির্দেশ করে, যেখানে দুটি রেললাইন মিলিত হয়েছে।

গতকাল টুইটারে রেলমন্ত্রী জানান, হাজারের বেশি মানুষ উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছেন। আমাদের লক্ষ্য বুধবার সকালের মধ্যে রেল যোগাযোগ পুনঃপ্রতিষ্ঠার কাজ সম্পূর্ণভাবে শেষ করা। রেললাইন মেরামতের কাজও করতে হবে।