ফুটপাত থেকে খোলা নালায় পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর মৃত্যুর পর নালাটির পাশে ইটের দেয়াল তুলে দেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে দেয়ালটি নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। 

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অনুরোধে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এই দেয়াল নির্মাণ করেছে বলে জানা গেছে। তবে ছাত্রীর মৃত্যুর পর দেয়াল তোলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

মাজার গেইট এলাকার বাসিন্দা মো. ফারুক সমকালকে বলেন, ‘নালায় নিরাপত্তা বেষ্টনী দেওয়া তাদের দায়িত্ব। এটি আগে কেন দেয়নি? আগে দিলে মেয়েটির মৃত্যু হত না। প্রতিটি কাজে মানুষের মৃত্যুর পরই কেন তাদের হুঁশ হয়।’

গত সোমবার রাত সোয়া ১০টার দিকে মামার হাত ধরে বাসায় ফেরার পথে নগরের আগ্রাবাদ মাজার গেইট এলাকায় ফুটপাত থেকে খোলায় নালায় পড়ে যায় শেহেরীন মাহমুদ সাদিয়া। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা চেষ্টার পর তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। 

সাদিয়া আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। নানা হাজী জামাল ও মামা জাকির হোসেনের সঙ্গে ওই রাতে চোখের চিকিৎসক দেখাতে নগরের উত্তর হালিশহরের বড়পোল এলাকার বাসা থেকে আগ্রাবাদ এসেছিলেন তিনি। 

এ নিয়ে গত ছয় বছরে খাল-নালায় পড়ে আট জনের মৃত্যু হয়। এভাবে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় নগরবাসীর মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে সাদিয়ার সহপাঠী ও এলাকাবাসী গত মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার নগরের আগ্রাবাদ ও হালিশহর এলাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।

সিটি করপোরেশন ও সিডিএ সূত্র জানায়, নালার মালিকানা নিয়ে পাল্টাপাল্টি বিরোধ থাকলেও গত বৃহস্পতিবার সেখানে নিরাপত্তা বেষ্টনীর দেওয়ার উদ্যোগ নেয় সিটি করপোরেশন। পরে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সিডিএর প্রকৌশলীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরপর নালার পাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। সিডিএর কোনো প্রকৌশলী এই বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী বিপ্লব দাশ সমকালকে বলেন, পথচারীদের চলাচলের সুবিধার্থে উন্মুক্ত নালাটির পাশে স্থায়ী নিরাপত্তা বেষ্টনীর উদ্যোগ নেওয়া হয়। দুর্ঘটনার পরদিন বাঁশ ও কাঠ দিয়ে অস্থায়ী বেষ্টনী দেওয়া হয়েছিল। আর স্থায়ী বেষ্টনীর বিষয়ে সিডিএকে অনুরোধ করলে তারা ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে তা নির্মাণ করে দেয়। অবশ্য সিডিএ না করলে নগরবাসীর স্বার্থে সিটি করপোরেশন তা করে দিত।

নগরের শেখ মুজিব সড়কের ওপর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করছে সিডিএ। 

বর্তমানে সড়ক ও দুই পাশের নালা সিডিএর আওতাভুক্ত বলে দাবি করে আসছে সিটি করপোরেশন। নালায় পড়ে ছাত্রীর মৃত্যুর পর এই ঘটনার জন্য সিডিএকে দায়ী করে সিটি করপোরেশন। 

তবে সিডিএর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনাস্থল তাদের প্রকল্পের আওতাভুক্ত নয়। এটি সিটি করপোরেশনের নালা।