মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছেন সৌরভ হাওলাদার। প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে চান্স পাওয়া মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে পারছেন না।

জাতীয় মেধাতালিকায় সৌরভের অবস্থান ১২৯৯তম। ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে। এমন সাফল্যে এলাকায় প্রশংসায় ভাসলেও কপালে চিন্তার ভাঁজ। কারণ, তাঁর দিনমজুর বাবা সংসার চালাতেই রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। ভর্তির বিপুল পরিমাণ অর্থ জোগাড় করার সামর্থ্য নেই তাঁর। স্থানীয়দের সাহায্য-সহযোগিতায় কোনোমতে এ পর্যন্ত এসেছেন তিনি।

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের মন্টু চন্দ্র হাওলাদার ও জুঁথিকা রানী হাওলাদার দম্পতির একমাত্র ছেলে সৌরভ।

তিনি বলেন, দিনমজুরি করে সংসার চালান বাবা। দীর্ঘদিন ধরে তিনি অসুস্থ। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই টিউশনি করছি। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পাওয়ায় কিছুটা সুবিধা হয়েছিল। মেডিকেল ভর্তির সুযোগ পেয়ে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করেছি, কিন্তু এত টাকা দিয়ে ভর্তি করানো পরিবারের পক্ষে অসম্ভব।

মন্টু চন্দ্র হাওলাদার বলেন, ছেলের লেখাপড়ার খরচ আমি দিতে পারিনি। দিনমজুরি করে যা আয় হয় তা দিয়ে কোনো রকম সংসার চালাই। দুই বছর ধরে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে এখন ঠিকমতো কাজ করতে পারছি না। এ কারণে বড় দুঃসময়ের মধ্যে আছি। 

স্থানীয় শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, সৌরভ অত্যন্ত মেধাবী। পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে এবং অষ্টম শ্রেণিতে উপজেলার মধ্যে প্রথম হয়ে বৃত্তি পেয়েছে। এসএসসি ও এইচএসসিতেও পেয়েছে জিপিএ-৫। কঠোর পরিশ্রমে ফলে সৌরভ মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। সমাজের বিত্তবানরা সহযোগিতার হাত বাড়ালে তার দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে পারে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারিহা তানজিল বলেন, সৌরভ উজিরপুরের গর্ব। আমরা তাকে সহযোগিতার চেষ্টা করব, যেন সে মেডিকেলে ভর্তিসহ তার পড়ালেখা নিশ্চিন্তে চালিয়ে যেতে পারে।

উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ সিকদার বলেন, সৌরভ উজিরপুরের মুখ উজ্জ্বল করেছে। খোঁজ-খবর নিয়ে তাকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করব।