আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেছেন, ‘আমাদের সংবিধান নিয়ে যারা কথা বলে তারা জাতীয় শত্রু। সংবিধান নিয়ে কথা বলার বিরুদ্ধে যে আইন রয়েছে সেই আইনে তাদের কেন গ্রেপ্তার করা হয় না? যারা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব দেশের অস্তিত্ব নিয়ে কথা বলে সেই আইনে কেন তাদের গ্রেপ্তার করা হয় না? কেন তাদের সেই আইনে শাস্তি দেওয়া হয় না? এটাই আজ আমাদের জিজ্ঞাসা। সেই আইন যথাযথ প্রয়োগ করে জনগণের সামনে স্বাধীনতাবিরোধীদের শাস্তি দেওয়া হোক।’

আজ বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আমরা ১৪ দল স্বাধীনতার পক্ষে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে এবং বঙ্গবন্ধু রচিত সংবিধান পক্ষে কাজ করে আসছি। আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অবিচলভাবে জাতীয় চার মূলনীতির ভিত্তিতে আমরা এগিয়ে যাব। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর কে ক্ষমতায় এল? খন্দকার মোস্তাক। আওয়ামী লীগ নেতা, অর্থাৎ একটা ধারণা দেওয়া হলো আওয়ামী লীগপন্থীরাই ক্ষমতায় আছে। তার আড়াই মাস পর ক্ষমতায় এলো জিয়াউর রহমান। পরিচয় কি? মুক্তিযোদ্ধা। কর্মকাণ্ড কী? কর্মকাণ্ড হচ্ছে অমুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূল্যবোধকে হত্যা করে এই দেশে পাকিস্তানি রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা। সেই লক্ষ্যে সেদিন ১৫ আগস্ট সংঘটিত করে এদের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।’

আমির হোসেন আমু বলেন, ‘সরকারে ছিল কে? ফখরুদ্দীনের পরিচয় ছিল কী? জিয়াউর রহমান কর্তৃক নিয়োজিত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিল কে? জেনারেল মতিন। পরিচয় কী? খালেদা জিয়ার সরকারের দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান। মঈন উদ্দিন কে? ছয় জনকে বাদ দিয়ে খালেদা জিয়া যাকে সেনাবাহিনী প্রধান করেছিলেন। সেদিন যে লোকগুলোকে নিয়ে সরকার গঠন করা হয়েছে তারা ছিল বিএনপিপন্থী।’

আমির হোসেন আমু বলেন, ‘পাকিস্তান আমল থেকে সামরিক সরকার যখন আছে তখন ইমিডিয়েট যে সরকার থাকে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলে। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, তাদের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি, তাদের সব কিছু নিয়ে আসে। আমরা গণতন্ত্র দেব– এই কথা বলে তারা আসে। কিন্তু এই সরকার যখন এল (ফখরুদ্দীন-মঈন উদ্দিন সরকার), তারা কিন্তু তখন যে সরকার ছিল (খালেদা জিয়া) তাদের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলেনি। প্রথমে গ্রেপ্তার করা হলো শেখ হাসিনাকে। তিনি ছিলেন বিরোধীদলের নেতা। খালেদা জিয়াকে কিন্তু গ্রেপ্তার করা হয়নি। তারপর সেই বিএনপিপন্থী সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয়ে তারা বুঝে গেছে বিএনপি জনগণের কাছ থেকে প্রত্যাখাত। এরপর থেকেই তাদের নির্বাচনে এত ভয়।’

আওয়ামী লীগের মুক্তিযদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যডভোকেট মৃনাল কান্তি দাসের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম,  বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, বাংলাদেশের গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন, গণআজাদী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এস কে সিকদার, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সভাপতি জাকির হোসেন, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী ফারুক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুুমায়ুন কবীর, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদসহ  ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।