ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

সংকটমোচনে শেখ হাসিনার জাদুকরি নেতৃত্ব

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন

সংকটমোচনে শেখ হাসিনার জাদুকরি নেতৃত্ব

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

নূহ্‌-উল-আলম লেনিন

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৩ | ১০:১৯ | আপডেট: ১৭ মে ২০২৩ | ১০:৪৪

কোনো বাঙালি, উপমহাদেশের অন্য কোনো রাজনীতিবিদ রাজনীতির কেন্দ্রীয় চরিত্র হিসেবে টানা ৪২ বছর ভূমিকা পালন করেছেন বলে আমার জানা নেই। ভারতের দুই প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও ইন্দিরা গান্ধীর রাজনৈতিক জীবনের পরিধি ৪২ বছর অতিক্রম করলেও, কেন্দ্রীয় চরিত্রে তাঁরাও ৪২ বছর ভূমিকা রাখার সুযোগ পাননি। জওহরলাল নেহরু ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম নেতা ছিলেন। কেন্দ্রীয় চরিত্রে ছিলেন মহাত্মা গান্ধী। নেহরু স্বাধীনতার আগে একবার ভারতীয় কংগ্রেস পার্টির সভাপতি ছিলেন। ভারতের স্বাধীনতার সময় কংগ্রেস সভাপতি ছিলেন মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। ইন্দিরা গান্ধীও একাধিকবার কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। নেহরু ১৯৪৭ থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত মাত্র ১৫ বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ইন্দিরা গান্ধী ১৯৬৬-১৯৭৭ পর্যন্ত ১১ বছর এবং ১৯৮০ থেকে ১৯৮৪ পর্যন্ত চার বছর অর্থাৎ প্রায় ১৫ বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। 

পক্ষান্তরে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বিশ্ব ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বরোচিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের পটভূমিতে ১৯৮১ থেকে গত ৪২ বছর ধরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এ উপমহাদেশই কেবল নয়, বর্তমান বিশ্বে আর কোনো দেশে একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলে এত দীর্ঘকাল সভাপতির দায়িত্ব পালনরত কারও নাম জানা নেই। অন্যদিকে ২০০৯ থেকে টানা ১৪ বছর এবং প্রথম মেয়াদে পাঁচ বছর অর্থাৎ মোট ১৯ বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন মাননীয় সংসদ সদস্য শেখ হাসিনা। সে-জন্যই বলেছি, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থেকে বা না-থেকে গত ৪২ বছর বাংলাদেশের রাজনীতির কেন্দ্রীয় চরিত্র।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন। দীর্ঘ প্রায় ছয় বছর বিদেশে নির্বাসিত থাকতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। নির্বাসনকালে, ১৯৭৭ সালে ইউরোপে বঙ্গবন্ধু-হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে তিনি বিশ্ব জনমত গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ব্রিটিশ ও ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য, নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী, বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ‘আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন’। সেই কমিশনের সদস্যদের বাংলাদেশে প্রবেশাধিকার দেয়নি সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান। ১৯৮১ সালের ১৭ মে তিনি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। অতঃপর নানা অঘটন-ঘটন, চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ৪২ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। এই ৪২ বছরে দু-দফায় ১৯ বছর রাষ্ট্র পরিচালনায় থেকেছেন শেখ হাসিনা। চমকপ্রদ সব সাফল্য বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে উন্নয়নশীল দেশের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। শেখ হাসিনার সরকারের সাফল্যগাথা নিয়ে আমরা নানা সময়ে, নানাভাবে আলোচনা করেছি। তবে আজকের আলোচনায় আমরা সংকটমোচনে তার কুশলী ও সাহসী নেতৃত্বের জাদুকরি ভূমিকা নিয়ে কিছুটা আলোকপাত করব।

বঙ্গবন্ধু-হত্যাকাণ্ড ও জেলে জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর স্বাভাবিকভাবে আওয়ামী লীগে নেতৃত্বের একটি প্রচণ্ড শূন্যতা চলছিল। এমন কী সেই শূন্যতা ছিল জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রেও। মহিউদ্দিন আহমেদ, বেগম জোহরা তাজউদ্দীন, আবদুল মালেক উকিল, আবদুর রাজ্জাক, ড. কামাল হোসেন, আবদুল মান্নান, বেগম সাজেদা চৌধুরী, জিল্লুর রহমান, তোফায়েল আহমেদ প্রমুখ নেতৃবৃন্দের কেউ-ই ব্যক্তিগতভাবে অথবা সম্মিলিতভাবে নেতৃত্বের সেই শূন্যতা পূরণ করতে পারেননি, ফলে তাঁরাই উদ্যোগ নিয়ে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি পদে নির্বাচিত করেন। হোটেল ইডেন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত দলীয় কাউন্সিলে তাঁর অনুপস্থিতিতে তিনি সর্বসম্মতিক্রমে দলের সভাপতি নির্বাচিত হন।

একটি রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম নেওয়া শেখ হাসিনার মূলধন ছিল ছাত্র আন্দোলনের সামান্য অভিজ্ঞতা। রাজনীতির কেন্দ্রে থাকলেও, ইতোপূর্বে তিনি কোনো রাজনৈতিক সংগঠন পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন না। কখনও কখনও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করলেও, রাজনৈতিক দল সামাল দেওয়ার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাও তাঁর ছিল না। কাজেই, দলের প্রবীণ নেতারা ভেবেছেন, রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাহীন শেখ হাসিনাকে তাঁরাই বুদ্ধিশুদ্ধি দিয়ে চালাবেন। এমন কী কেউ কেউ এটিও ভেবেছেন, শেখ হাসিনাকে সামনে রেখে তিনি বা তাঁরা-ই দলটি পরিচালনা করবেন। শেখ হাসিনা হবেন তাঁর বা তাঁদের আজ্ঞাবহ।

অনেকেই ভেবেছেন, সভাপতি হলেও শেখ হাসিনা হয়তো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাতৃভূমিতে ফিরে আসবেন না। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা সকল আশঙ্কা এবং অনিশ্চয়তার ঝুঁকি সত্ত্বেও ১৯৮১ সালের ১৭ মে এক বৃষ্টিমুখর দিনে ঢাকায় ফিরে আসেন। সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান নানাভাবে চেয়েছেন, শেখ হাসিনা যেন মাতৃভূমিতে ফিরে না আসেন। কিন্তু জিয়া ও সামরিক শাসকদের রক্তচক্ষু শেখ হাসিনাকে দমাতে পারেনি। আমি ‘সংকট ও সংকটমোচনে’ জননেত্রী শেখ হাসিনার পারদর্শিতার কথা বলতে চাচ্ছিলাম।

১৯৮১ সালে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনটাই ছিল তাঁর কাছে একটা চ্যালেঞ্জ। কতজন ‘মা’ পারেন, ১৫ আগস্টের মতো ট্র্যাজেডির পটভূমিতে একটা বৈরী পরিবেশে একা মাতৃভূমিতে ফিরে আসতে? একাধারে গভীর রাজনৈতিক সংকট এবং খোদ রাষ্ট্রযন্ত্রের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তাঁকে ঢাকায় ফিরতে হয়েছে। বাবা, মা, ভাই, চাচা, ভ্রাতৃবধূসহ পরিবারের ২২ জন মানুষের রক্তে সিক্ত বাংলাদেশে শূন্য হাতে ফিরে আসা কী খুব সহজ ব্যাপার? বুক ভরা সাহস ও দেশপ্রেম ছাড়া আর কোনো সম্পদ ছিল না তাঁর। বয়সই বা কত? মাত্র ৩৪ বছর। কোথায় থাকবেন, কীভাবে জীবন নির্বাহ করবেন, ছেলেমেয়েদের কী হবে– কোনো চিন্তাই তাঁকে তাঁর লক্ষ্যচ্যুত করতে পারেনি। আর কী কপাল দেখুন, তিনি স্বদেশে ফিরে আসার পর সামরিক শাসকদের অভ্যন্তরীণ কলহের কারণে স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামে নিহত হলেন। শেখ হাসিনা তখন জেলা সফরে বেরিয়েছেন। কাকতালীয় হলেও শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এবং মাত্র ১৩ দিনের মাথায় জিয়ার হত্যাকাণ্ড সামগ্রিকভাবে দেশ ও আওয়ামী লীগের সামনে বিশাল সংকট বয়ে আনে। বলা যেতে পারে, সে-সময় শেখ হাসিনাসহ দেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ঘটনার আকস্মিকতায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন! জেলা সফরের কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে শেখ হাসিনা ও তাঁর সফরসঙ্গীরা ঢাকায় ফিরে আসেন।

এ-সময় পর্দার আড়ালে প্রধান ‘নট’ হিসেবে আবির্ভূত হন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। উপ-রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারকে সিএমএইচ-এর রোগশয্যা থেকে উঠিয়ে এনে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। সংবিধানমতে, কিছুদিনের মধ্যেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেরও ব্যবস্থা করা হয়। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ফলাফল কী হতে পারে, শেখ হাসিনা তা আগেই অনুমান করেছিলেন। তবু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা ছিল সম্ভাব্য সামরিক শাসনের চেয়েও গণতন্ত্র চর্চায় সহায়ক। বিরোধী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ প্রার্থী দেওয়ার কৌশল ত্যাগ করে তিনি ড. কামাল হোসেনকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দান করেন। নির্বাচনে যথারীতি জেনারেল এরশাদের গোপন অভিলাষ অনুযায়ী বিচারপতি সাত্তারকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বিএনপি জয়লাভ করলেও দেশের বৃহত্তম দল হিসেবে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় তৃণমূল পর্যন্ত ড. কামাল হোসেনের একটি পরিচিতি দাঁড়িয়ে যায়।

ঐক্যের প্রতীক হিসেবে দলের সভাপতি নির্বাচিত হলেও, বাস্তবে আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতাদের একটি অংশ শেখ হাসিনাকে ঠিক মানতে পারছিলেন না। বস্তুত শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের আগে থেকেই আওয়ামী লীগে তীব্র দলীয় কোন্দল চলছিল। ফলে শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের আগেই আওয়ামী লীগে ভাগ বিভক্তি দেখা দিয়েছিল। ১৯৭৬ সালে জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনের আওতায় রাজনীতি করার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। রাজনৈতিক দলবিধি নামে একটি অর্ডিন্যান্স জারি এবং ঘরোয়া রাজনীতির সুযোগ দেওয়া হয়। সেই সুযোগে ১৯৭৭ সালের ৪ নভেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পুরুজ্জীবিত হয়। পুরোনো কমিটির সহসভাপতি মহিউদ্দিন আহমদকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সাজেদা চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক করে আওয়ামী লীগের নবযাত্রা শুরু হয়। স্বল্পকাল পরেই পুরোনো কমিটি বিলুপ্ত করে জোহরা তাজউদ্দীনকে আহ্বায়ক করে নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়। ইতোমধ্যে আবদুর রাজ্জাক ও তোফায়েল আহমেদ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ জেল থেকে বেরিয়ে আসেন। ১৯৭৮ সালের ৩, ৪ ও ৫ মার্চ হোটেল ইডেনে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এই কাউন্সিলে দলে সুদৃঢ় ঐক্য প্রতিষ্ঠা তো দূরের কথা, নতুন করে ভাঙন সৃষ্টি হয়। কাউন্সিলে আবদুল মালেক উকিলকে সভাপতি ও আবদুর রাজ্জাককে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। কিন্তু কাউন্সিল থেকে বেরিয়ে প্রবীণ নেতা মিজানুর রহমান চৌধুরী আওয়ামী লীগের নামে স্বতন্ত্র কমিটি গঠন করেন। সমসাময়িককালে সিলেটের দেওয়ান ফরিদ গাজী ও ঢাকা মহানগরীর মোজাফ্‌ফর হোসেন পল্টুও একটি আলাদা আওয়ামী লীগ গঠন করেছিলেন। মালেক উকিলের নেতৃত্বাধীন মূল আওয়ামী লীগেও প্রকাশ্যে দুটি উপদল দলের অস্তিত্বকে বিপন্ন করে তুলেছিল।

এ পটভূমিতে, বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারির কাউন্সিলে দলের ঐক্যের প্রতীক হিসেবে শেখ হাসিনাকে সভাপতি নির্বাচিত করে। শেখ হাসিনা দলের সম্মিলিত ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটিয়ে, দেশের ডাকে মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন। সকলের সহযোগিতায় দলকে পুনর্গঠনের জন্য বিপুল কর্মযজ্ঞ শুরু করেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে সভাপতি করলেও দলের অভ্যন্তরে কোন্দল চলতেই থাকে। সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ তাঁর অঙ্গুলি হেলনে চলবে। কিন্তু শেখ হাসিনা নমনীয় নীতি এবং সবাইকে নিয়ে চলার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দলকে সুসংগঠিত করতে চাইলেও, কিছু সংখ্যক উচ্চাকাঙ্ক্ষী নেতার সংকীর্ণতার জন্য তা সে-মুহূর্তে হয়ে ওঠেনি। ১৯৮৩ সালে আবদুর রাজ্জাক ও প্রবীণ নেতা মহিউদ্দিন আহমেদ দল থেকে বেরিয়ে যান। তারা ‘কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ’ অর্থাৎ ‘বাকশাল’ নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন।

দলের এই অনাকাঙ্ক্ষিত ভাঙন ছিল প্রচণ্ড আঘাত স্বরূপ। বাকশাল নিয়ে আওয়ামী লীগে এক ধরনের ভাবাবেগ ছিল। আবদুর রাজ্জাক এই ভাবাবেগকে কাজে লাগিয়ে দলের প্রতিটি অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনে ভাঙন সৃষ্টি করতে সক্ষম হন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ অনুসারী তরুণদের একটি বড় অংশ বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। বলা যেতে পারে, একটি অগ্নিপরীক্ষায় পড়েন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু-হত্যার ফলে সৃষ্ট জাতীয় সংকট ম্যানেজমেন্টের যে সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য থেকে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসেন, সে-সংকটমোচনের জন্য দল ও দেশবাসীকে প্রস্তুত করার আগেই তাকে নতুন নতুন সংকট মোকাবিলা করতে হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ও গুরুতর সংকট ছিল ১৯৮৩ সালে দলে আনুষ্ঠানিক ভাঙন।

এসব সংকটমোচনে তাঁর হাতে একটা ‘বই’ ছিল। সেটি হচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামমুখর জীবন। ১৯৫৭ সালে দলের সভাপতি মওলানা ভাসানী তখন বিপুলসংখ্যক কর্মী নিয়ে দল থেকে বেরিয়ে গিয়ে ন্যাপ গঠন করেছিলেন। দলের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিব দলের সেই সংকটকালে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে চারণের বেশে সমগ্র বাংলাদেশ ঘুরে বেড়ান। আওয়ামী লীগ আবার শক্ত ভিতের ওপর শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ১৯৬৬ সালেও প্রায় একই রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। বঙ্গবন্ধু বাঙালির মুক্তি সনদ ৬-দফা উত্থাপনের পর দলের সভাপতি মাওলানা আবদুর রশিদ তর্কবাগীশ, প্রভাবশালী নেতা আবদুস সালাম খান প্রমুখ দল থেকে বেরিয়ে যান। শেখ মুজিবকে দলের সভাপতির দায়িত্ব নিতে হয়। তিনি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ ও মনসুর আলীর মতো তাঁর প্রায় সমবয়েসী সহকর্মীদের নিয়ে প্রচণ্ড বৈরী পরিবেশে আওয়ামী লীগে নতুন প্রাণ সঞ্চারিত করেন। আওয়ামী লীগ বাঙালি জাতির ঐক্যের প্রতীক হিসেবে সর্ববৃহৎ জাতীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। পিতার অভিজ্ঞতা ও চারিত্রিক দৃঢ়তাকে পুঁজি করে শেখ হাসিনা উল্কার বেগে বাংলাদেশ চষে বেড়ান। তৃণমূল পর্যায়ে তাঁর সরাসরি যোগাযোগ, নেতাকর্মীর প্রকৃত মনোভাব উপলব্ধি করার ঐকান্তিক প্রয়াস এবং সামরিক স্বৈরতন্ত্রের নাগপাশ থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করার লক্ষ্যে একই সঙ্গে তাঁর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার উদ্যোগ দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপট বদলে দেয়। আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী করার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে তিনি ১৫-দলীয় জোট গঠন করেন। এরশাদবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে গিয়ে তিনি জেল-জুলুমের শিকার হন। ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৫-দলীয় জোটের (কার্যত ১০-দল) অনিবার্য জয়কে ছিনিয়ে নেয় জেনারেল এরশাদ। মিডিয়া ক্যুর মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফল এরশাদ পাল্টে দেয়। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সিপিবি ও ন্যাপ ছাড়া ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ ও বাসদ প্রভৃতি বামদলগুলো ১৫-দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে যায়। নানা ষড়যন্ত্র ও টানাপোড়েন সত্ত্বেও ক্রমেই আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হয়ে ওঠে। গোটা প্রায় আশির দশক এরশাদবিরোধী আন্দোলনে দেশ উন্মাতাল ছিল। ১৯৮৬-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রধান বিরোধী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। শেখ হাসিনাও এ সময়ে কর্মী-সংগঠকের ভূমিকা অতিক্রম করে নিজেকে ‘জাতীয় নেতা’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। সংসদে তাঁর ভূমিকা দেখে এরশাদ প্রমাদ গোনেন। ১৯৮৭ সালেই এরশাদ সংসদ ভেঙে দেন এবং ১৯৮৮ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচনে তাঁর রাবার স্ট্যাম্প সংসদ গঠন করেন। জননেত্রী শেখ হাসিনার কুশলী ভূমিকা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলে এরশাদবিরোধী ‘তিন জোট’-এর যুগপৎ আন্দোলন গড়ে ওঠে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানে এরশাদের পতন হয়। ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে জয়ী করা হয়। এটি ছিল সিভিল-মিলিটারি ব্যুরোক্রেসির কারসাজি। সংসদে শেখ হাসিনার পক্ষে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংবিধান সংশোধনী প্রস্তাব আনা হয়। নির্বাচনের আগে ‘তিন জোটের’ অঙ্গীকার (তথা বিএনপিরও) সত্ত্বেও বিএনপি সংসদীয় গণতন্ত্রের পক্ষে বিল আনা নিয়ে গড়িমসি করছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার অনমনীয় ভূমিকা এবং তীব্র জনমতের চাপের কাছে বিএনপিকে সরকারিভাবে বিল আনতে হয়। দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯১-এ সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হচ্ছে আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনার বিশাল রাজনৈতিক বিজয়।

’৯১-এর নির্বাচনেই ‘বাকশাল’-এর অবলুপ্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়। বাকশাল সভাপতি মহিউদ্দিন সাহেব ‘নৌকা’ মার্কা নিয়ে দাঁড়ান। সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজন ভিন্ন মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেন। দলটি ৫টি আসন পেলেও এই নির্বাচনের পর বাকশালের নেতাকর্মীরা দলে দলে আওয়ামী লীগে ফিরে আসেন। আওয়ামী লীগে পুনরেকত্রীকরণ হয়। বিভেদের রাজনীতির পরাজয় ঘটে। কিন্তু অচিরেই ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে আবার উপদলীয় কোন্দল দেখা দেয়। আওয়ামী লীগের একটি ক্ষুদ্র অংশ, বিভক্ত সিপিবি ও ন্যাপের একটি অংশ নিয়ে কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত হয় নতুন রাজনৈতিক দল ‘গণফোরাম’।

এদিকে বিএনপির হাতে দেশের গণতন্ত্রের দিকে অভিযাত্রা মুখ থুবড়ে পড়ে। মিরপুর ও মাগুরা উপনির্বাচনে কারচুপির পটভূমিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি উত্থাপন করেন শেখ হাসিনা। আন্দোলনের মুখে বিএনপি গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে দল ও ভোটারবিহীন নির্বাচনে একটি ঠুঁটো জগন্নাথ সংসদ গঠিত হলেও, সেই সংসদ কার্যকর হতে পারেনি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ‘জনতার মঞ্চ’ ঘিরে এমন আন্দোলন গড়ে ওঠে যে, সরকার ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। খালেদার সরকার তত্ত্বাবধায়ক বিল পাস করেই পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়।

১৯৯৬-এর জুন মাসে অনুষ্ঠিত হয় সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে। শেখ হাসিনা সরকার গঠন করেন। এই প্রথম বাংলাদেশে কোনো নির্বাচিত সংসদ তাঁর মেয়াদ পূর্ণ করে। ’৭৫-এর পর দীর্ঘ ২১ বছরের মাথায় আওয়ামী লীগ প্রথম সরকার গঠন করে। আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে যাওয়া কামাল হোসেনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয় এবং গণফোরাম একটি আসন পেতেও ব্যর্থ হয়।

২০০১-এও জাতীয় জীবনে সংকট নেমে এসেছিল। বিচারপতি লতিফুর রহমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ষড়যন্ত্রমূলক তৎপরতায় বিএনপি ক্ষমতাসীন হয়। গঠিত হয় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। কার্যত বাংলাদেশ পাকিস্তানি ধারায় চলে যায়। হাজার হাজার আওয়ামী লীগ কর্মী, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লাখ লাখ মানুষ হত্যা, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের শিকার হয়। ’৭৫-এর পর দেশের গণতান্ত্রিক শক্তি বিশেষত আওয়ামী লীগ আর কখনও এতটা গভীর সংকটে পড়েনি। অতীতের মতো এবারও জননেত্রী শেখ হাসিনা অসীম সাহস ও ধৈর্য নিয়ে এই সংকট মোকাবিলায় জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেন। কিন্তু ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের শান্তি সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের হত্যার উদ্দেশ্যে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা দেশবাসীকে স্তম্ভিত করে। শেখ হাসিনা আহত হন। গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন। এ ঘটনায় পরিষ্কার হয়ে যায়, দেশে ফ্যাসিজমের উত্থান হয়েছে। এই ফ্যাসিজম রোধ না করতে পারলে বাংলাদেশের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। ২০০৭-০৮ সালে তথাকথিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে দেশান্তরিত করার চক্রান্ত করে। ব্যর্থ হলে তারা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে। তাঁকে দীর্ঘদিন কারাবন্দি করে রাখা হয়।

শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা, অসীম সাহস এবং সংকটমোচনে তাঁর অভূতপূর্ব রাজনৈতিক কলাকৌশল, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে ওঠে। বাংলাদেশের মানুষ উপলব্ধি করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পর তাঁর কন্যা শেখ হাসিনাই একক নেতৃত্বে দেশকে সংকট থেকে পুনরুদ্ধার করতে পারেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশের অধিক আসনে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করে বাংলাদেশের মানুষ সেটিই প্রমাণ করেছে।

২০০৯ সাল থেকে টানা প্রায় তিন মেয়াদ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নির্বাচিত সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত প্রথম মেয়াদে এবং ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তিন মেয়াদে দেশের হাল ধরেছেন শেখ হাসিনা। আমরা রাষ্ট্র পরিচালনায় তাঁর এই ১৯ বছরের সাফল্যের কাহিনি বিভিন্ন সময়ে বিস্তারিত লিখেছি। এ-কথা বিশ্ববাসী জানেন, শেখ হাসিনা প্রায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্ত থেকে বাংলাদেশকে পুনরুদ্ধার করেন। দেশকে খাদ্যে আত্মনির্ভরশীল করা, ভারতের সঙ্গে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি, আশ্রয়ণ, বিধবা ভাতা, দারিদ্র্য বিমোচনে বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ প্রভৃতি ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদের বিশেষ সাফল্য হিসেবে স্বীকৃত। ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সময়কালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। জনগণের মাথাপ্রতি আয় ২০০৬ সালের ৫০৪ ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ২,৮২৪ ডলার। দারিদ্র্য হার ১৮ শতাংশের নিচে এবং অতি দারিদ্র্য ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, বিদ্যুৎ উৎপাদনে স্বয়ম্ভরতা অর্জন, প্রাথমিক ও নারী শিক্ষায় এগিয়ে যাওয়া, মেট্রোরেল চালু, কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণ, মহাকাশে নিজস্ব যোগাযোগ স্যাটেলাইট প্রেরণ, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে অগ্রগতি, পটুয়াখালীতে পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, নারীর ক্ষমতায়ন প্রভৃতি বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে উন্নয়নের অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত (রোল মডেল) হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় ইতোপূর্বে সম্ভব না হলেও, ২০০৯-১০ সালে জাতীয় সংসদে সংবিধান সংশোধনীর বিল উত্থাপিত হয়। সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশ মূলত ’৭২-এর সংবিধানের ধারায় চলে আসে। অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক ধারা তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারায় বাংলাদেশ ফিরে আসে। মুক্তিযুদ্ধের ৪০ বছর পর শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেন। এটা বিশেষ একটা বিরল দৃষ্টান্ত। জীবনের ঝুঁকি, পাকিস্তানসহ রক্ষণশীল কোনো কোনো দেশ (যেমন তুরস্ক) প্রভৃতির চাপ এবং নানানপন্থিদের সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কা মোকাবিলা করেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হয়। এর আগে বিচার করা হয় বঙ্গবন্ধু-হত্যাকাণ্ডের আসামিদের।

শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে দিনবদলের সনদে বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে গড়ে তোলার রূপরেখা দিয়েছিলেন। এখন সেই রূপরেখা বাস্তবায়নের পর ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। আমরা অত্যন্ত গৌরবের সঙ্গে বর্তমান সরকারের বিশেষত রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এসব সাফল্যের বিবরণ ইতোপূর্বে তুলে ধরেছি। আমরা তাই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ৪২ বছরে শেখ হাসিনার রাষ্ট্র পরিচালনার সাফল্য নিয়ে অন্য প্রবন্ধে বিস্তারিত বললেও এখানে বাক্‌বিস্তার করছি না। আমরা বরং ধ্বংসপ্রায় দলটিকে তিনি কী করে একের পর এক সংকট মোকাবিলার পর বর্তমান অবস্থায় এনে দাঁড় করিয়েছেন, তার প্রতি বিশেষ আলোকপাত করার চেষ্টা করেছি। জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে, শেখ হাসিনা ‘মাস্টার অব ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট’। 

শেখ হাসিনা দীর্ঘজীবী হোন।

আরও পড়ুন

×