- চতুরঙ্গ
- বাংলাদেশের সমর্থকদের দেখতে উদগ্রীব মার্টিনেজ
বাংলাদেশের সমর্থকদের দেখতে উদগ্রীব মার্টিনেজ

বিশ্বকাপ জয়ী আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। ছবি: ফাইল
ইচ্ছা ছিল, বিশ্বকাপজয়ী পুরো দল নিয়ে তাঁরা বাংলাদেশে আসবেন জুনে। কিন্তু সে ব্যবস্থা করতে পারেনি বাফুফে। তাতে অবশ্য মানসপটে লালিত বাংলাদেশের ছবিটি ফিকে হয়ে যায়নি এমিলিয়ানো মার্টিনেজের। বাংলাদেশ দর্শনের ইচ্ছা পূরণ হচ্ছে তাঁর। কলকাতার এক ক্রীড়া উদ্যোক্তার মাধ্যমে ৩ জুলাই ঢাকা আসবেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। সারাদিন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে পরদিন কলকাতা যাবেন।
শতদ্রু দত্ত– কলকাতার নামকরা ক্রীড়া উদ্যোক্তা। তিনি বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে বোঝাতে গিয়েছিলেন কলকাতায় ফুটবল উন্মাদনার কথা; শোনাতে গিয়েছিলেন একসময় ম্যারাডোনাও এসে গেছেন সেখানে। কিন্তু মার্টিনেজ নাকি উল্টো তাঁকে বাংলাদেশের ফুটবল উন্মাদনা আর আবেগের কথা শুনিয়ে দেন। ‘সত্যি কথা বলতে কি, প্রথমে আমিও একটু অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আমাকে তিনি জিজ্ঞেস করেছেন, তোমাদের ওখান থেকে বাংলাদেশ কতদূর? আমি বললাম, কাছেই। ৩০ মিনিটের ফ্লাইট। শুনেই মার্টিনেজ যেন উত্তেজিত। আমাকে অনুরোধ করলেন যেন বাংলাদেশে তাঁর একটা সফরের ব্যবস্থা করা হয়। বাণিজ্যিক দিকটি আমাকে দেখভাল করতে বলেন।
তিনি বলছিলেন– বাংলাদেশে যেতে চাই, দেখতে চাই আমাদের সমর্থকদের। আর তার পরই আমি আমাদের বাংলাদেশি পার্টনারদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করি। আশা করছি, ৩ জুলাই এমিলিয়ানো বাংলাদেশে থাকবেন।’ হোয়াটসঅ্যাপ কলে শতদ্রু দত্ত রনি সমকালকে জানান আর্জেন্টাইন এই গোলরক্ষক বাংলাদেশে আসতে ঠিক কতটা উদগ্রীব। ‘তিনি বারবার বলছিলেন, তুমি কি জানো বাংলাদেশে আমাদের আর্জেন্টিনার কত সমর্থক রয়েছে। তারা আমাদের জন্য কী করে। বিশ্বকাপে সব সময় ওরা আমাদের পাশে ছিল। ওখানে আমার অনেক ভক্ত রয়েছে। তারা আমাকে দেখতে চায়। আমিও দেখতে চাই তাদের। তুমি যে করেই হোক, একটা ব্যবস্থা করো।’ কলকাতার চেয়ে ঢাকায় আসার ব্যাপারে মার্টিনেজের আগ্রহ যেন বেশি। ‘আমি তাঁকে বলেছি, কলকাতা আর ঢাকা একই রকম, আমরা একই ভাষা বাংলায় কথা বলি। শুনে তিনি আরও বেশি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’
কিন্তু ঢাকায় এসে ঠিক কী করবেন মার্টিনেজ, কোন প্রতিষ্ঠানই বা তাঁকে আনছে? কৌতূহলটা ধরে রাখতে বললেন শতদ্রু। ‘দু-এক দিনের মধ্যেই ঢাকায় আমরা একটা সংবাদ সম্মেলন করে সবকিছু বিস্তারিত জানাব। আপাতত ঢাকার দু-একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে।’ নাম প্রকাশ না করলেও ঢাকা থেকে জানা গেছে, মোবাইল আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিকাশ ছাড়াও বসুন্ধরার সঙ্গে কথা এগিয়েছে। ঢাকায় এসে এমিলিয়ানো মার্টিনেজ কী করবেন, তার একটা ইঙ্গিতও দিলেন শতদ্রু। ‘দেখুন, ইপিএলে চুক্তিবদ্ধ থাকায় অন্য কোথাও তিনি খেলতে পারবেন না। তবে মাঠে নেমে দু-একটি বল কিক মেরে গ্যালারিতে পাঠাবেন, গোলপোস্টের নিচে দাঁড়িয়ে কিছু শটও হয়তো ঠেকাতে পারেন। আসলে তিনি বাংলাদেশে আর্জেন্টিনার ফুটবল উন্মাদনাটা দেখতে চান। বিশ্বকাপে ওরা সবাই নাকি এটা নিয়ে অনেক আলোচনাও করেছেন।’ কলকাতায় অবশ্য মার্টিনেজের সফরসূচি নির্ধারিত। সেখানে কলকাতা পুলিশের একটি প্রদর্শনী ম্যাচের উদ্বোধন এবং পৃষ্ঠপোষকদের টাইব্রেক প্রতিযোগিতায় উপস্থিত থাকবেন। ‘কাতার বিশ্বকাপের পর বার্সেলোনায় গিয়ে তাঁর ম্যানেজারের সঙ্গে আলোচনা করি।
ম্যানেজার আমাকে জানান, শুধু টাকার জন্য তিনি কিছু করতে চান না। তাঁকে কলকাতায় আনার একটা শর্ত হলো বেশ কিছু ফাউন্ডেশনে সাহায্য করতে হবে। এর পর আমি লন্ডনে চলে যাই মার্টিনেজের সঙ্গে দেখা করতে। সেখানে অ্যাস্টন ভিলার গ্যালারিতে তাঁর পরিবারের সঙ্গেই খেলা দেখি। ম্যাচের পর মাঠে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা এগোয়। বারবার তাঁর বাঁ পায়ের দিকে তাকাচ্ছিলাম, যে পা দিয়েই তিনি বিশ্বকাপ ফাইনালে আর্জেন্টিনার স্বপ্ন পূরণ করেছেন গোল আটকিয়ে। তিনি ভীষণ শান্ত ও বিনয়ী। ভারত, কলকাতার নাম শোনার পরই তিনি বাংলাদেশ প্রসঙ্গ তুলে আনেন।’
শতদ্রুর আশা, বিশ্বকাপজয়ী এই আর্জেন্টাইন গোলরক্ষকের মনে আঁকা বাংলাদেশের ফুটবল উন্মাদনার ছবিটি তিনি ঢাকায় পা রাখার পরই দেখতে পাবেন।
মন্তব্য করুন