ঢাকা মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

শুনানি করতে পারেননি ঢাকা থেকে যাওয়া আইনজীবী

শুনানি করতে পারেননি ঢাকা থেকে যাওয়া আইনজীবী

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ | ০৬:০৩ | আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ | ০৬:০৩

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে আগাম জামিন শুনানিসহ তিনটি আবেদনই খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার অবকাশকালীন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ সাইফুল ইসলামের আদালত এ আদেশ দেন।

আদালতের সহকারী কৌঁসুলি রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী জানান, রবীন্দ্র ঘোষ নামে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম আসা সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী চিন্ময় দাসের পক্ষে আদালতে তিনটি আবেদন দিয়েছেন। কিন্তু ওকালতনামা না থাকায় আদালত সব আবেদনই বাতিল করেন। কারণ ওই আইনজীবী মামলাটির শুনানি, নথি উপস্থাপন এবং জামিন শুনানির তারিখ এগিয়ে আনতে আবেদন করেছিলেন। তাঁর সঙ্গে চট্টগ্রাম বারের কোনো আইনজীবী ছিলেন না। তা ছাড়া আসামির পক্ষে ওকালতনামা এবং ফাইলিং আইনজীবীরও লিখিত অনুমতি ছিল না তাঁর কাছে। তাই আদালত তাঁর আবেদন ‘নট মেইনটেইনেবল’ বলে নামঞ্জুর করেছেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী কফিল উদ্দিন বলেন, সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী আদালতকে বলেছেন চিন্ময়ের মামলাটির তারিখ এগিয়ে আনার জন্য এবং তিনি নথি উপস্থাপন করবেন। আমরা বলেছি, তাঁর এ ধরনের দরখাস্ত দেওয়ার আইনগত অধিকার নেই। কারণ তাঁর কোনো ওকালতনামা নেই এবং যিনি এ মামলা ফাইল করেছেন তাঁর পক্ষ থেকে তাঁকে কোনো ক্ষমতাও দেওয়া হয়নি। শুনানি করার জন্য অথবা নথি উপস্থাপনের জন্য অবশ্যই চট্টগ্রাম বারের একজন আইনজীবীর ওকালতনামা দিতে হবে। অথবা এনগেজড কোনো আইনজীবীকে বলতে হবে যে, ঢাকা থেকে যিনি এসেছেন তাঁকে তিনি ক্ষমতা দিয়েছেন। তাই আদালত এটা খারিজ করে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘তিনটি আবেদন জমা দিয়েছিলাম। এর মধ্যে একটি হলো, যে মামলায় চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাতে তাঁর পক্ষে আইনজীবী হিসেবে শুনানি করার। দ্বিতীয়টি হলো, ২৬ নভেম্বর করা মিস মামলার নথি উপস্থাপনের জন্য এবং তৃতীয় আবেদনটি ছিল চিন্ময় দাসের জামিন শুনানির নির্ধারিত তারিখ এগিয়ে আনার। তবে আদালত সব আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন।

ওকালতনামা ছাড়াই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে মক্কেলের জন্য লড়া যায় দাবি করে রবীন্দ্র ঘোষ বলেন, নিরাপত্তার কারণে চিন্ময়ের আইনজীবী ৩ ডিসেম্বর শুনানিতে অংশ নিতে পারেননি। এ জন্য বুধবার আগাম জামিন শুনানির আবেদন করা হয়। কিন্তু আইনজীবীদের বাধার মুখে আদালত তা নাকচ করে দেন। 

চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর হওয়াকে কেন্দ্র করে গত ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ছয়টি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় ৪০ জনকে। এর মধ্যে হত্যায় জড়িত অভিযোগে ১০ জন রয়েছেন। ২ ডিসেম্বর পুলিশের ওপর হামলা ও কাজে বাধা দেওয়ার মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামির জন্য ওকালতনামা দিলে আইনজীবীদের বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেন অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর সরকারি কৌঁসুলি নেজাম উদ্দিন। এর আগে কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। 

আরও পড়ুন

×