সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ এনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে করা রিট পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। 

বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেন। 

পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেন, 'নির্বাচনের আর তিন-চারদিন আছে। এ সময়ের মধ্যে তথ্যদি যাচাই করা সম্ভব নয়।'

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম। অন্যদিকে তাবিথের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী খায়রুল আলম চৌধুরী।

নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় তাবিথ আওয়াল সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন-এমন অভিযোগ এনে রোববার হাইকোর্টে রিট করেন আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। 

আদেশের পর রিটকারী বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক সমকালকে বলেন, 'হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণসহ রিটটি খারিজ করে দিয়েছেন। এর বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারণ নির্বাচনের আগে কোর্টের কার্যক্রম চলবে মাত্র দুইদিন। তাই আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করেই পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।'

তাবিথের আইনজীবী খায়রুল আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, রিট আবেদনকারী তাবিথ আউয়ালের সিঙ্গাপুরের একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন। কিন্ত নির্বাচনের মাত্র চারদিন বাকি আছে। এ অবস্থায় ওই তথ্যের সত্যতা যাচাই সম্ভব নয়। এ ছাড়া সম্পদরে তথ্য গোপনের যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা নিয়ে নির্বাচনের পরেও আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের সুযোগ আছে। এসব দিক বিবেচনায় নিয়ে আদালত রিটটি সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন।

নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুসারে, ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। কিন্ত এরইমধ্যে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে তাবিথের সম্পদের তথ্য গোপনের বিষয়ে অভিযোগ দাখিল করেন। 

পাশাপাশি রোববার হাইকোর্টে এ বিষয়ে রিটও দায়ের করেন তিনি। 

রিটে বলা হয়, সিঙ্গাপুরের কোম্পানি এনএফএম এনার্জি (সিঙ্গাপুর) প্রাইভেট কোম্পানি লিমিটেডের তিনজন শেয়ারহোল্ডার আছেন, তাদের একজন তাবিথ আউয়াল। অন্য দু'জন তার সহযোগী। তিনজন মিলে এই কোম্পানির সব শেয়ারের মালিক। এই কোম্পানির মুল্য দেখিয়েছে দুই মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। এটা বিশ্বের যেকোনো দেশের টাকার অর্থেই বেশ বড় অংক। এই কোম্পানির কথা তাবিথ আউয়াল তার হলফনামায় উল্লেখ করেননি। আইন হচ্ছে তার ও তার পরিবারের সব সদস্যের সব সম্পদ হলফনামায় দেখাতে হবে। কিন্তু তাবিথ আউয়াল দেখাননি। তাই তাবিথ আউয়ালের মনোনয়ন আইনত বাতিল হতে বাধ্য।