ভুয়া স্মারক নম্বর দিয়ে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার বিল জালিয়াতির ঘটনায় ৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রামে এ অভিযোগ দেওয়া হয়।

দুদক চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক নাজমুছ সাদাত বলেন, এক কর্মকর্তাকে নিয়ে জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক দুদক কার্যালয়ে এসে একটি অভিযোগ জমা দিয়েছেন। অভিযোগটি আমরা গ্রহণ করেছি। এতে হাসপাতালের এক কর্মকর্তাসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, এটি একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা। এ ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটন হওয়া দরকার। 

২৮ জুন ভুয়া স্মারক নম্বর দিয়ে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার বিল জালিয়াতির ঘটনায় হিসাবরক্ষক মো. ফোরকানকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জালিয়াতিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপরই অভিযুক্ত ফোরকানকে সরিয়ে বুধবার এক অফিস আদেশে হাসপাতালটির হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দিন খালেদকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়। অর্থ আত্মসাতে যে স্মারক নম্বরটি ব্যবহার করা হয়েছে সেটি ছিল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটসোর্সিং খাতে নিয়োজিত জনবলের বেতন-ভাতা পরিশোধের আদেশ সংক্রান্ত।

২০১৩-১৪ বছরে আটটি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) শয্যা, আইসিইউ ভেন্টিলেটর ও কার্ডিয়াক পেশেন্ট মনিটর কেনার ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার একটি বিল মামলা সংক্রান্ত কারণে বকেয়া ছিল। দুদকের মামলাটি শুনানির পর্যায়ে রয়েছে।

গত ২৬ জুন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব সুশীল কুমার পালের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ব্যয় মঞ্জুরীর আদেশটি তৈরি করা হয়। আদেশে ব্যবহার করা হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যয় মঞ্জুরীর একটি স্মারক নম্বর। সেই স্মারক নম্বর ব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বকেয়া বিলটি ছাড়ের জন্য প্রস্তুত করেন হাসপাতালের হিসাব রক্ষক মো. ফোরকান। যেখানে হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক সেখ ফজলে রাব্বিরও স্বাক্ষর রয়েছে। মঙ্গলবার বিলটি নিয়ে বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ে যান ফোরকান। পরীক্ষা নিরীক্ষায় বিলটি ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়। হিসাব নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে তাকে পুলিশে দেওয়া হলেও কোনো অভিযোগ না দেওয়ায় হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়কের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।