- সিটি নির্বাচন
- থানা বিএনপির কমিটি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
থানা বিএনপির কমিটি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দলটির নেতারা। এক অংশের নেতাদের অভিযোগ, হঠাৎ করে দেওয়া কমিটিতে ত্যাগী ও সক্রিয় নেতাদের জায়গা হয়নি। উল্টো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের হয়ে বিগত কয়েকটি নির্বাচনে কাজ করা ব্যক্তিদের নেতা বানানো হয়েছে। নতুন কমিটির নেতাদের ভাষ্য, কেন্দ্রীয় নেতাদের মৌখিক নির্দেশে এ কমিটি হয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, রোববার ৫১ সদস্যের কমিটির অনুমোদন দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন। এতে মাজেদুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইকবাল হোসেনকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ১৫ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে গিয়াস উদ্দিনকে আহ্বায়ক, গোলাম ফারুক খোকনকে সদস্য সচিব এবং অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। অন্য ৬ জনকে যুগ্ম আহ্বায়কের পদ দেওয়া হয়। তাঁদের শর্ত দেওয়া হয়, অধীনস্থ ইউনিটের কমিটি গঠনে আহ্বায়ক, ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের যৌথ স্বাক্ষরে অনুমোদন করতে হবে।
সিদ্ধিরগঞ্জের কমিটি করার ক্ষেত্রে শর্ত লঙ্ঘিত হয়েছে বলে মনে করেন জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ। কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে তাঁর সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি বলেও জানান। মামুন মাহমুদ বলেন, এ কমিটি গঠনে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে। কর্মঠ ও ত্যাগী অনেক নেতার কমিটিতে জায়গা হয়নি। আবার অতীতে আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেছেন এমন লোকদেরও কমিটিতে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে মামুদ মাহমুদ উদাহরণ দেন নতুন কমিটির সদস্য সচিব ইকবাল হোসেনের। তিনি বলেন, 'নৌকার (পক্ষে) ভোট করেও ইকবাল সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য সচিব হয়েছেন। সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনের ছেলে জি এম সাদরিলও একই কাজ করে সদস্য পদ পেয়েছেন।' তিনি মনে করেন, ১৪ বছর ধরে রাজপথের আন্দোলনে হামলা-মামলা ও নির্যাতনের শিকার নেতাকর্মীরা এই কমিটির নেতাদের নাম দেখে হতভম্ব হয়ে গেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিদ্ধিরগঞ্জ বিএনপির এক নেতা বলেন, 'হঠাৎ অহি নাজিলের মতো কমিটি গঠনের খবর পেলাম। বিষয়টিতে বিএনপির মতো দলকে সাংগঠনিকভাবে বিধ্বস্ত করার গভীর ষড়যন্ত্র বলে মনে করেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।' এক কর্মী বলেন, ১৪ বছরে যাঁরা আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন না, তারাই এখন মূল নেতৃত্বে এসেছেন। বিষয়টি হতাশাজনক।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও ধরেননি। সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকনের নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। তবে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির নতুন সদস্য সচিব ইকবাল হোসেন বলেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের মৌখিক নির্দেশে এ কমিটি গঠিত হয়েছে। তাঁরা বিষয়টি জানেন।
তবে সরাসরি নৌকার হয়ে নির্বাচন করার অভিযোগ অস্বীকার করেন ইকবাল। তিনি বলেন, 'গত ৫ বছর সেলিনা হায়াৎ আইভী মেয়র ছিলেন, আমিও কাউন্সিলর ছিলাম। সে হিসেবে এলাকায় তাঁর সঙ্গে থাকতে হয়েছে।'
৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জি এম সাদরিল বলেন, 'গত সংসদ নির্বাচনের সময় সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের স্ত্রী সালমা ওসমান ও ছেলে অয়ন ওসমান আমাদের বাড়িতে এসে লিফলেট চেয়ে ভোট চান। এটাকেই নৌকার পক্ষে ভোট করেছি বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে একটি পক্ষ।'
মন্তব্য করুন