- সিটি নির্বাচন
- ‘নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচিতে হামলার জন্য দায়ী মেয়র’
‘নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচিতে হামলার জন্য দায়ী মেয়র’

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি নুরুল আবছার - সমকাল
নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচিতে হামলার জন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী দায়ী বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছে চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা বলছেন, ‘মেয়রের লেলিয়ে দেওয়া গুণ্ডাবাহিনী এ হামলা চালিয়েছে।’ স্থাপনার আয়তনের পরিবর্তে ভাড়ার ভিত্তিতে কর প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্ত হবেন বলেও জানান তারা।
বর্ধিত গৃহকর বাতিলের দাবিতে পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছে চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদ। গত বুধবার করদাতা সুরক্ষা পরিষদ নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে গেলে তা প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে তাদের উপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) শ্রমিক লীগ।
সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের সহ-সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদাউস পপি বলেন, ‘পূর্ব ঘোষিত নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচি চলাকালে আমাদের সঙ্গে আগত নিরীহ নগরবাসীর উপর সিটি মেয়রের লেলিয়ে দেওয়া গুণ্ডাবাহিনী ইট-পাথর দিয়ে আক্রমণ করে। পুলিশের উপস্থিতিতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে এই হামলার ঘটনা ঘটে।’ তিনি বলেন, হামলায় রাশেদ আমির, নেজামত আলী, মো. রানা, ইমতিয়াজ দিদার, রমজান আলী ও ওলি আহমদ নামে ছয়জন গুরুতর আহত হন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘মিছিল নিয়ে নগর ভবনের কাছাকাছি টাইগার পাস মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ আমাদের বাধা দেয়। তাই আমরা সেখানেই শান্তিপূর্ণ অবস্থান করি। মেয়র মহোদয়কে স্মারকলিপি দেওয়ার কথা জানালে পুলিশ আমাদের মধ্য থেকে পরিষদের সভাপতি মো. নুরুল আবছার ব্যতিত অন্য যে কোনো চারজনকে যাওয়ার অনুরোধ করেন। এতে আমরা কিছুটা অবাক হলেও বাধ্য হয়ে চারজন প্রতিনিধি নগর ভবনে যাই।’
তিনি বলেন, ‘তবে পরিষদের প্রতিনিধিদের দেখেই মেয়রের অনুসারীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে শুরু করেন। আমাদের দীর্ঘ দিনের আন্দোলন কর্মসূচিতে কোনোদিন ছাত্রলীগ বা যুবলীগ বাধা দেয়নি। কারণ, তারা জানে, এটা তাদের বাবা-চাচাদের আন্দোলন। কিন্তু আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করলাম, মেয়র সাহেব আমাদের সন্তানদের আমাদেরকে অপদস্ত করার জন্য ব্যবহার করলেন! আমরা নগরবাসীর প্রতি মেয়রের এমন আচরণ প্রত্যাশা করিনি। এর তীব্র নিন্দা জানাই।’
সংবাদ সম্মেলনে জান্নাতুল ফেরদাউস পপি বলেন, ‘মেয়রের গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে এটা সুস্পষ্ট হয়েছে যে, তিনি যতক্ষণ দায়িত্বে আছেন, ততক্ষণ তিনি নগরবাসীর গৃহকরের এই ন্যায্য দাবি মেনে নেবেন না। তাই, পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হবে। এছাড়া উচ্চ আদালতে আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে এই অন্যায্য গৃহকর আদায় বন্ধে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।’
মারধর ও হামলার বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেবেন কি না- জানতে চাইলে করদাতা সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি মো. নুরুল আবছার বলেন, ‘আমরা কোনো মামলা বা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করব না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করে এর জবাব দেব।’
নগর ভবনের আশপাশে ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের অবস্থান ও হামলা অভিযোগ প্রসঙ্গে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘আমি কাউকে এখানে এসে স্লোগান দিতে বলিনি। তবে আমি একটি দলের নেতা এবং দলের মনোনয়নে মেয়র হয়েছি। স্বাভাবিকভাবেই মেয়রকে কেউ চ্যালেঞ্জ করলে কেউ যদি স্ব-উদ্যোগে জড়ো হয়ে স্লোগান দেয়, তাহলে আমার কিছু করার নেই।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিষদের সভাপতি নুরুল আবছার, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল মালেক, সহ-সভাপতি ইসমাইল মনু, মুখপাত্র কাজী শহীদুল হক স্বপন, এরশাদ হোসেন, মুজিবুল হক, অলি আহমদ, আবদুর রহিম, আব্দুর রাজ্জাক, আবুল কাশেম প্রমুখ।
মন্তব্য করুন