
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারি চলছে। এটি সামাল দিতে গিয়ে বিশ্বজুড়ে সবাই হিমশিম খাচ্ছে। বাংলাদেশে শুক্রবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে। মারা গেছেন চারশ'র বেশি মানুষ। প্রতিদিনই সংক্রমণ বাড়ছে। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে বাংলাদেশের মতো একটি জনবহুল রাষ্ট্রকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে অন্য দেশগুলোর তুলনায় এখনও আমাদের অবস্থা ভালো। কিন্তু মানুষের মধ্যে বিধিনিষেধ না মানার প্রবণতা অনেক বেশি। সরকার ও স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে যেসব নির্দেশনা ও পরামর্শ দেওয়া হয়, অধিকাংশ মানুষই তা মানছে না। এতে করে ভাইরাসটি আরও ছড়িয়ে পড়ছে। ভাইরাসটি প্রতিরোধে এখন পর্যন্ত কোনো ওষুধ কিংবা ভ্যাকসিন আবিস্কার হয়নি- এটি সবার জানা। সুতরাং এটি প্রতিরোধে সবার আগে গুরুত্ব দিতে হবে সচেতনতায়। ঘরে থাকা এবং নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার পাশাপাশি বাইরে থেকে ঘরে ফিরে নূ্যনতম ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। কিন্তু মানুষ ঘরে থাকছেন না। ঈদের ছুটিতে হাজার হাজার মানুষ গ্রামে ফিরছেন। এটি আমাদের আতঙ্কিত করে। যেভাবে গাদাগাদি করে মানুষ গ্রামে ফিরছেন তা অত্যন্ত ভয়ংকর। সবচেয়ে সংক্রমিত জোন ঢাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ গ্রামে গিয়ে ভাইরাসটি আরও ব্যাপক মাত্রায় ছড়িয়ে দিতে পারে। সেক্ষেত্রেও পরিস্থিতি আরও নাজুক হবে। আক্রান্ত ও মৃত্যু বাড়বে। স্বাস্থ্য বিভাগ গ্রামে না যাওয়ার অনুরোধ করেছে। কিন্তু অনেকেই তা শুনছেন না। এটি দুঃখজনক। যে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে মানুষ গ্রামে ছুটছেন, সেই প্রিয়জন তার মাধ্যমেই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হতে পারেন, এমনকি তার মৃত্যুও হতে পারে। তখন আনন্দ বিষাদে পরিণত হবে। এই বিষয়গুলো মানুষ বুঝতে চাইছেন না। আপনারা জানেন, ভাইরাসটি সংক্রামক। একজনের শরীরে ভাইরাসটি থাকলে তার সংস্পর্শে কেউ গেলে তিনিও আক্রান্ত হবেন। করোনা প্রতিরোধে কাজ করতে গিয়ে অনেক চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা, কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিক অসুস্থ হয়েছেন। অনেকে মারাও গেছেন। সুতরাং এই পরিস্থিতিতে নিজে সুস্থ থাকতে চাইলে; পরিবার, স্বজন ও প্রতিবেশীদের সুস্থ ও ভালো রাখতে চাইলে প্লিজ, গ্রামে যাবেন না। অনুগ্রহ করে সহযোগিতা করুন, সরকারের সব নির্দেশনা মেনে চলুন এবং চলাচল বন্ধ করুন।
মন্তব্য করুন