অনলাইনে কম দামে পণ্য বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের সাতজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। তাদের মধ্যে রাজধানীর বনানী থানার বরখাস্ত পুলিশ পরিদর্শক শেখ সোহেল রানা ও তার বোন সোনিয়া মেহজাবিনও রয়েছেন। ডিজিটাল প্রতারণার অভিযোগে করা ওই মামলায় চলতি মাসের শুরুতে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা।

অভিযুক্ত অন্য পাঁচজন হলেন- সোনিয়ার স্বামী মাসুকুর রহমান, ব্যবসায়িক অংশীদার বীথি আক্তার, সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল আলম, প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আমানুল্লাহ ও কাউসার আহমেদ।

ই-অরেঞ্জের কর্ণধার হিসেবে সোনিয়াকে সামনে রাখা হলেও প্রকৃতপক্ষে তার ভাই সোহেল রানাই প্রতিষ্ঠানটি চালাতেন। প্রতারণার নেপথ্যে তার জড়িত থাকার বিষয়টি সামনে এলে তিনি পালিয়ে যান। গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর তাকে ভারতে আটক করা হয়। তাকে দেশে ফেরত আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ।

কম দামে পণ্য বিক্রির ফাঁদে ফেলে গ্রাহকের ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে। টাকা দেওয়ার পর পণ্য না পেয়ে এবং শেষে টাকাও ফেরত না পেয়ে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা একের পর এক মামলা করেন। তখন সোহেলের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা হয়। এর মধ্যে রাজধানীর গুলশান থানায় হওয়া ডিজিটাল প্রতারণার মামলায় অভিযোগপত্র দিয়েছে সিআইডি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির এসআই হাবিবুর রহমান জানান, সোহেল, সোনিয়াসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। তাদের প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের লোভনীয় বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে অনেক গ্রাহক পণ্য কিনতে টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা পণ্য না দিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে টাকা আত্মসাৎ করেন।

তদন্ত সূত্র জানায়, রাজধানীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী বি এম সুলতান ডিজিটাল প্রতারণার মামলাটি করেন। তিনি ই-অরেঞ্জের ফেসবুক পেজে লোভনীয় দামে মোটরসাইকেল বিক্রির বিজ্ঞাপন দেখে আকৃষ্ট হন। এর পর গত বছরের ১৪ জুন ২ লাখ ৮০ হাজার টাকায় মোটরসাইকেলটি কেনার জন্য টাকা দেন। কিন্তু আরও অনেক গ্রাহকের মতো তাকেও মোটরসাইকেল দেওয়া হয়নি।