- অপরাধ
- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আ. লীগের কর্মসূচিতে বিশৃঙ্খলা
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আ. লীগের কর্মসূচিতে বিশৃঙ্খলা

ঢাকা দক্ষিণ আ. লীগের কর্মসূচিতে নেতাকর্মীরা। ছবি-সমকাল
ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে চরম বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই বিশৃঙ্খলা চলাকালে নেতাকর্মীদের চেয়ার ছোঁড়াছুড়ি ও ভাঙচুর করতে দেখা যায়।
পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী এদিন বিকেল সাড়ে তিনটায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। এতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী-ভাতৃপ্রতীম সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীরা যোগ দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিকেল পৌনে চারটায় সমাবেশের সামনের জায়গা দখল ও স্লোগান-পাল্টা স্লোগান দেওয়া নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা থেকে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। একপর্যায়ে শুরু হয় চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও ভাঙচুর। এ সময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। সমাবেশ বন্ধ করে নেতারা মাইকে সবাইকে শান্ত হওয়ার অনুরোধ করেন। নিজেরাও স্লোগান দিতে থাকেন।
এক পর্যায়ে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়ে এলেও বিকেল সোয়া চারটায় দ্বিতীয় দফায় নেতাকর্মীরে মধ্যে চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ সময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে অন্য নেতাকর্মীদের মাঝেও। তারাও যে যার মত ছোটাছুটি শুরু করেন। উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মীরা সাংবাদিকদের বসার চেয়ার ও টেবিলের ওপর দাঁড়িয়ে পা দিয়ে মাড়িয়ে ব্যবহার অনুপযোগী করেন।
বিশৃঙ্খলা থামাতে মঞ্চে উপস্থিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা ছাড়াও পুলিশকেও হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। এই বিশৃঙ্খলায় সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহতও হয়েছেন।
সমাবেশে আসা অনেকের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এবং কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও এই আসনে নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী শাহীন আহাম্মেদের সমর্থকদের মধ্যে স্লোগান ও পাল্টা স্লোগান নিয়ে এমন বিশৃঙ্খলা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এছাড়া সমাবেশের পুরোটা সময়জুড়ে ব্যানার নিয়ে মঞ্চের একেবারে কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে দেখা যায় শত শত নেতাকর্মীকে। মাইকে বারবার ব্যানার নামাতে ও স্লোগান বন্ধ করতে বলা হলেও কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতাদের কথায় কর্ণপাত করতে দেখা যায়নি কাউকেই। বৃষ্টির কারণে মঞ্চের সামনে তেরপল বিছিয়ে কর্মীদের বসার জায়গা করা হলেও সেখানে বসতে দেখা যায়নি কাউকে। বরং তেরপল বিছানোর কয়েক মিনিটের মধ্যেই তা মাড়িয়ে ব্যবহার অনুপযোগী করে তোলেন কর্মীরা।
এমন বিশৃঙ্খলার মধ্যেই বক্তব্য দিতে এসে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফও সবাইকে শান্ত হওয়ার অনুরোধ জানান। এছাড়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির সবাইকে শৃঙ্খলা মেনে শান্ত থাকার অনুরোধ করেন। মঞ্চের একেবারে কাছে এসে স্লোগান দিতে থাকায় নেতাকর্মীদের ধমকও দেন তারা। এ সময় মঞ্চ থেকে বারবার মাইকে বলতে শোনা যায়, ‘সমাবেশে বিএনপি-জামায়াতের অনুচররা ঢুকে বিশৃঙ্খলা করতে পারে। সেটি যাতে করতে না পারে- সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।’ এত কিছুর পরও উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মীদের শান্ত করা যায়নি।
মন্তব্য করুন