- অপরাধ
- মসজিদ-মাদ্রাসা থেকে মোবাইল চুরি চক্রের ৯ সদস্য গ্রেপ্তার
মসজিদ-মাদ্রাসা থেকে মোবাইল চুরি চক্রের ৯ সদস্য গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার মোবাইল চুরি চক্রের ৯ সদস্য। ছবি-সমকাল
ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, ওয়াজ মাহফিল ও জানাজার নামাজ আদায় করতে যাওয়া মুসল্লিদের টার্গেট করত একটি চক্র। পরে কৌশলে মুসল্লিদের মোবাইল চুরি করত তারা। এরপর চোরাই মোবাইলের আইএমইআই পরিবর্তন করে নামিদামি মার্কেটে বিক্রি করত। চক্রটি এই কাজের কোড নাম দেয় 'বডিকাজ' ও ‘মসজিদ কাম’। এই চোর চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
গত বুধবার রাজধানীর চাঁনখারপুল, জুরাইন বিক্রমপুর প্লাজা ও বুড়িগঙ্গা সেতুমার্কেট, যমুনা ফিউচার পার্কসহ কয়েকটি এলাকা থেকে চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)।
গ্রেপ্তাররা হলেন— বাহাউদ্দিন হোসেন মিজি অরফে বাহার (৩৫), রমজান আলী (২৯), হামিম আহমেদ অরফে হামিম (৩৪), আতিকুল ইসলাম (২৮), পারভেজ হাসান (১৮), মাসুদুর রহমান ওরফে মাসুদ (৩২), সাইফুল ইসলাম (২৮), ফয়সাল আহমেদ রনি (৩৪) ও মিল্লাত হোসেন (২৬)। তাদের কাছ থেকে ল্যাপটপ, মোবাইল, কম্পিউটার ও মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তনের কাজে ব্যবহৃত ১৬টি ডিভাইস জব্দ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী এভিনিউয়ের এটিইউ সদর দপ্তরে মিডিয়া কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন।
ছানোয়ার হোসেন বলেন, চক্রটির সদস্যরা অনলাইনের মাধ্যমে খুঁজতে থাকে কোথায় জানাজা আছে। জানাজার সন্ধান পাওয়ার পর, তারা খোঁজখবর নিতে থাকে মানুষের সমাগম কেমন হবে সেটার জন্য। সেখানে গিয়ে তারা কয়েকটি গ্রুপে ভাগ হয়ে যায়। প্রত্যেকটি গ্রুপে তিনজন করে সদস্য থাকে। এই কাজের কোড নাম দেয় 'বডিকাজ'। জানাজার স্থান নির্ধারণ হওয়ার পর তারা সেখানে পায়জামা, পাঞ্জাবি ও টুপি পরে যায়। চক্রের সদস্যরা জানাজার ভিড়ের মধ্যে কৌশলে মোবাইল চুরি করে গ্রুপের দ্বিতীয় সদস্যকে দেয়। দ্বিতীয় সদস্য মোবাইলটি আবার তৃতীয় সদস্যকে দেয়। পরে সেই ব্যক্তি জানাজার স্থান ছেড়ে চলে যায়।
তিনি বলেন, পকেট থেকে মোবাইলটি যে চুরি করে তাকে ‘মহাজন’ বলা হয়। জানাজা ছাড়াও চক্রটির জুম্মার নামাজেও একই কাজ করে। এই চুরিকে তারা ‘মসজিদ কাম’ বলে থাকে। জুমার নামাজকে কেন্দ্র করে চক্রটির সব থেকে বেশি গ্রুপ সক্রিয় থাকে বায়তুল মোকাররম মসজিদে।
এই কর্মকর্তা বলেন, চক্রের সদস্য বাহার চোরাই মোবাইল গ্রুপগুলো থেকে সংগ্রহ করত। বাহারের একজন মোটরসাইকেল চালক আছে। বাহারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গ্রুপগুলো থেকে মোবাইল সংগ্রহ করে। পরে মোবাইলগুলো গ্রেপ্তার মাসুদের কাছে পাঠিয়ে দিত। গ্রেপ্তার মাসুদের কাজ হচ্ছে চোরাই মোবাইলগুলো নির্দিষ্ট দোকানে পৌঁছে দেওয়া।
তদন্তে চোরাই মোবাইল কেনাবেচা করে এমন তিনটি দোকানের খোঁজ পেয়েছে এটিইউ। এর মধ্যে— জুরাইনের বিক্রমপুর প্লাজার এসআই টেলিকম, যার মালিক গ্রেপ্তার সাইফুল। জুরাইনের সেতু মার্কেটের ফয়সাল টেলিকম যার মালিক গ্রেপ্তার ফয়সাল। এছাড়া যমুনা ফিউচার পার্কের চতুর্থ তলার একটি দোকান যার মালিক গ্রেপ্তার মিল্লাত। এসব দোকানে প্রথমে মোবাইলগুলোর আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করা হতো তারপর বিক্রি করা হতো।
মন্তব্য করুন