ঢাকা বুধবার, ২১ মে ২০২৫

শতকোটি টাকার সেতু দখল করে ব্যবসা

শতকোটি টাকার সেতু দখল করে ব্যবসা

শেখ হাসিনা তিতাস সেতু দখল করে চলছে ব্যবসা সমকাল

বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৩ | ০০:২৯

বাঞ্ছারামপুর ও হোমনা উপজেলার মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী ওয়াই আকৃতির ‘শেখ হাসিনা তিতাস সেতু’ দখল করে চলছে ব্যবসা। সেতুর ওপর রীতিমতো চেয়ার পেতে বসেছে অর্ধশতাধিক 
চটপটি ও হালিমের দোকান। দোকানপাটের কারণে সেতুর ওপর রাস্তা সংকুচিত হয়ে গেছে। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

দোকানপাট ঘিরে সন্ধ্যার পর সেতুর ওপর বসে জুয়া ও মাদকের আসর। পথচারীদের চলাচলের জায়গা দখল হয়ে যাওয়ায় লোকজনকে হাঁটতে হয় সেতুর ওপর দিয়ে। এতে একাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও অবৈধ দোকান উচ্ছেদে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি উপজেলা প্রশাসন।

‘শেখ হাসিনা তিতাস সেতু’ দিয়ে বাঞ্ছারামপুর, হোমনা ও মুরাদনগর উপজেলার মানুষ ঢাকা, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত 
করে। ওয়াই সেতুর দুই অংশে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ভুরভুরিয়া ও চরলহনিয়া, এক অংশে হোমনা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর এলাকায় যুক্ত। দৃষ্টিনন্দন সেতুটি দেখতে প্রতিদিন ভিড় করেন দর্শনার্থী। এই সুযোগ কাজে লাগিয়েই সেতুর ওপর গড়ে উঠেছে দোকানপাট।

বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলীর কার্যালয়ের তথ্যমতে, বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে ২০১১ সালের ১৬ জুন নির্মাণকাজ শুরু হয়। ৭৭১ দশমিক ২০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৮ দশমিক ১০ মিটার প্রস্থের সেতুর নির্মাণকাজ ২০১৭ সালের জুন মাসে শেষ হয়। ২২টি পিলার ও ২৪টি স্প্যান রয়েছে এই সেতুতে। নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ১০৪ কোটি টাকা। তিতাস নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি কুমিল্লা দিয়ে চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কের বিকল্প পথ হিসেবেও ব্যবহৃত হবে বলে জানায় এলজিইডি। প্রতিদিন এই সেতু ব্যবহার করে কুমিল্লার হোমনা ও মুরাদনগর, দেবিদ্বার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মানুষ ও যানবাহন যাতায়াত করে।
চরলহনিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন আমাদের যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু সেতুতে অবৈধ দোকান থাকার কারণে যান চলাচলে সমস্যা হয়। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।’
রামকৃষ্ণপুর গ্রামের সুজন আহমেদ জানান, চটপটি ও হালিমের দোকানের কারণে সেতু দিয়ে চলাচল করা কষ্টকর। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর উচ্ছৃঙ্খল ছেলেপেলের আড্ডা ও মাদক সেবন নিয়মিত ব্যাপার।

চটপটির দোকানদার শাহ আলম বলেন, ‘সেতু উদ্বোধনের পর থেকে এখানে ব্যবসা করছি। কেউ কোনোদিন বাধা দেয়নি। আগে আরও অনেক বেশি দোকান ছিল, এখন বেচাকেনা না হওয়ার কারণে কিছুটা কম। চেয়ার ছাড়া তো কাস্টমারকে বসানো যাবে না, তাই সেতুর মধ্যেই আমরা চেয়ার বসিয়ে দোকান চালাই। দুঘটনা কয়েকবারই এখানে ঘটেছে, মারাও গেছেন কয়েকজন।’
এলজিইডির প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর হোসেনের ভাষ্য, শেখ হাসিনা তিতাস সেতুর ওপর চটপটি ও হালিমের দোকান রয়েছে। কিন্তু এগুলো তাঁর দ্বারা উচ্ছেদ করা সম্ভব নয়। এটা করতে পুলিশ লাগবে। উপজেলা আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক সভায় বিষয়টি আলোচনা করা হবে। দোকানগুলোর কারণে সেতুর পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
ইউএনও একি মিত্র চাকমা জানান, সেতু ওপরে কোনোভাবেই দোকান বসানোর সুযোগ নেই। বিষয়টি দেখে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন

×