ঢাকা মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ইমিউনিটি কীভাবে বাড়াবেন

ইমিউনিটি কীভাবে বাড়াবেন

ডাক্তারবাড়ি ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩ | ০১:২৯

সুস্থ শরীর মানে পুষ্টিকর খাবার। রোজকার ডায়েটে সবই তো রাখা হচ্ছে এখন। তা সত্ত্বেও ইমিউনিটির এত অভাব, খাবার থেকে পুষ্টি আসে, এ কথা ঠিক। তবে ইমিউনিটির সঙ্গে যখন আপস করাই হচ্ছে, তার মানে পুষ্টিতে কমতি রয়েছে, সেটা স্পষ্ট। ভাত, ডাল, তরিতরকারি, মাছ-মাংস, ডিম, দুধ, ফল, পানি এসব খেলে সুস্থ থাকবেন তখনই, যখন তার পরিমাণটা ঠিক ঠিক হবে। আপনার শরীরে যতটা দরকার, মেপে মেপে ঠিক ততটাই দিতে হবে এবং তা যে শরীর ভালোভাবে গ্রহণ করছে সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।
ব্যালান্সড ডায়েট মানে কিন্তু শাকসবজি বা লাগজারিয়াস খাবার নয়। বাজারে যা পাওয়া যায়, যা প্রতিনিয়ত খেয়ে আসছি আমরা, সেগুলো দিয়েই ব্যালান্সড ডায়েট চার্ট তৈরি করা সম্ভব। উপকরণের চেয়েও এখানে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো পরিমাণ এবং রান্নার ধরন। 
এমনভাবে রোজকার ডায়েট সাজাতে হবে, যাতে খাবারের মূল যে ছয়টা উপকরণ– প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন, মিনারেল এবং পানি– এই প্রতিটিই পরিমিত পরিমাণে থাকে। কার্বোহাইড্রেট বলতে মূলত আমরা বুঝি ভাত-রুটি। রোজকার যে এনার্জি আমাদের দরকার, সেটা কিন্তু কার্বোহাইড্রেট থেকেই আমরা পাই। প্রোটিন জরুরি মাসল বিল্ডিংয়ের জন্য। আমরা যখনই কোনো অসুখে ভুগি, তখন সাংঘাতিক পরিমাণে মাসল ব্রেকডাউন হয়। যেটা এখন খুব হচ্ছেও সংক্রমণের কারণে। দীর্ঘদিন অসুখে ভুগলে আমরা যে রোগা হয়ে যাই, সেটা মূলত এই মাসল ব্রেকডাউনের কারণেই। আর সেজন্যই প্রোটিন নিয়ে এত জোরাজুরি এখন। শরীর যাতে সেই পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকে, তাই নিয়মিত প্রোটিন খেতে হবে। ইনস্ট্যান্ট এনার্জি সোর্সের অনেকটা আসে ফ্যাট থেকেও। এ ছাড়া শরীরের অনেক জরুরি প্রক্রিয়াই ফ্যাট ছাড়া অসম্পূর্ণ। অনেকেই ভাবেন, ডায়েট থেকে ফ্যাট বাদ দিয়ে দিলেই তা স্বাস্থ্যকর হয়ে যায়। এই ধারণা কিন্তু ভুল। এমন অনেক ভিটামিন আছে যা শরীরে অ্যাবসর্ব হয় ফ্যাটের সাহায্যে। তাই ফ্যাটও ডায়েটে সমান গুরুত্বপূর্ণ।
ভিটামিন ও মিনারেল প্রধানত ইমিউনিটির জন্য জরুরি। নানা ধরনের অসুখ থেকে সুরক্ষা দিতে শরীরে ভিটামিন ও মিনারেল দরকার। এ ছাড়া দরকার ফাইবার। খাবার শুধু খেলেই তো হয় না, তা যাতে শরীরে ভালোমতো অ্যাবসর্ব হয়, সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। খাবারের যথাযথ ডাইজেশন তাই খুব জরুরি। আর সে কাজটাই করে ফাইবার। হজমশক্তি এবং বাওয়েল সিস্টেম ভালো রাখতে তাই প্রতিদিনের খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার রাখতে হবে। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবশ্যই ফ্লুইড বা পানি। শুধু এই সময়ের জন্য নয়, সারা বছরই শরীরে পর্যাপ্ত পানি দরকার। শরীর যাতে ডিহাইড্রেটেড না হয়ে পড়ে, সেই খেয়াল রাখতে হবে। এসব কয়টাই যদি দৈনন্দিন ডায়েটে পরিমিত পরিমাণে থাকে, তাহলে সেটাই হবে ব্যালান্সড ডায়েট। এই উপকরণগুলোর মধ্যে শরীরে যদি কোনো একটারও অভাব হয়, সে ক্ষেত্রে সবার আগে প্রভাব পড়বে এনার্জি লেভেলে। কাজ করায় উৎসাহ পাবেন না, ক্লান্ত লাগবে। তারপর প্রভাব পড়বে ইমিউন রেসপন্সে। শারীরিক বিভিন্ন প্রক্রিয়া অসম্পূর্ণ থেকে যাবে আর বাহ্যিক রোগ-জীবাণুর সঙ্গে লড়াইয়েও শরীর পেরে উঠবে না। পরিমাণের মোটামুটি একটা হিসাব ধরতে হলে রোজকার খাবারে ফ্যাট, প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেটের অনুপাত ৪:৪:৯ হলে আদর্শ। অর্থাৎ, একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ ব্যক্তির দৈনন্দিন যত কিলোক্যালরির দরকার, কার্বোহাইড্রেট লাগবে তার ৫৫-৬৫ শতাংশ, ফ্যাট লাগবে ১৫-৩০ শতাংশ এবং প্রোটিন লাগবে ১০-১৫ শতাংশ। এই পরিমাণটা জেন্ডার, বয়স এবং শরীরভেদে আলাদা হতে পারে। কারও যদি ডায়াবেটিস থাকে, তার যেমন কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কমাতে হতে পারে, তেমনি ওবেসিটিতে ফ্যাটের পরিমাণ হয়তো খানিকটা কমবে। v

whatsapp follow image

আরও পড়ুন

×