ঢাকা মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

হেলথ টিপস

চোখের রোগ গ্লুকোমা

চোখের রোগ গ্লুকোমা

.

 ডা. আহসান কবির 

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৩:২০

পৃথিবীর যাবতীয় বস্তু আমরা চোখের সাহায্যেই দেখি। সেই দেখা যদি ধীরে ধীরে অজান্তেই হারাতে বসে, এমনকি পুরোপুরি অন্ধ হওয়ার আগের দিনও বুঝতে না পারেন আপনি অন্ধ হয়ে যাচ্ছেন, সেই রোগের নাম ‘গ্লুকোমা’। 
গ্লুকোমা কী? 
চোখ গোলাকৃতির। তার কারণ, চোখ পানির সাহায্যে নির্দিষ্ট পরিমাণ চাপে থাকে। চোখের পানির চাপ সাধারণত ১৫-২০ মিমি (পারদের) হয়। যদি কোনো কারণে সেই চাপ বাড়তে থাকে, তাহলে চোখের পেছনে অপটিক নার্ভ (শিরা) চাপ সহ্য করতে পারে না। তখন দেখার পরিধি কমতে থাকে। ফলে নার্ভ শুকিয়ে তার কার্যক্ষমতা হারাতে থাকে। 
গ্লুকোমার ধরন
অনেক ধরনের গ্লুকোমা আছে। যেমন– ১. প্রাথমিক (প্রাইমারি); ২. পরবর্তী (সেকেন্ডারি)। 
প্রাথমিক গ্লুকোমা সমস্যাবিহীন। রোগী বুঝতেই পারেন না। সাধারণত চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরীক্ষায়, প্রেশার মাপার সময় কিংবা চোখের ভেতরে দেখা (ফান্ডাল) পরীক্ষায় এ রোগ ধরা পড়ে। চোখের দৃষ্টি পরিধি পরীক্ষায় (ভিজ্যুয়াল ফিল্ড) দৃষ্টি সংকীর্ণতা ধরা পড়লে রোগীকে বলা হয় প্রাথমিক গ্লুকোমা রোগে ভুগছেন। এই রোগে চোখের ভেতরের কোনা খোলা থাকে। উপসর্গহীন এই রোগ অত্যন্ত মারাত্মক।
আরেক ধরনের গ্লুকোমা আছে, যাতে চোখে প্রচণ্ড যন্ত্রণার সঙ্গে উচ্চচাপ থাকে। একে একিউট কনজেস্টিভ গ্লুকোমা বলা হয়। এ ক্ষেত্রে রোগীর চোখের ভেতরের কোনা বন্ধ থাকে। প্রচণ্ড জ্বালা-যন্ত্রণা, বমি নিয়ে রোগী চিকিৎসকের কাছে আসেন বলে এই গ্লুকোমায় চোখের ক্ষতির পরিমাণ কম। এ ছাড়া শরীরে অন্য কারণে গ্লুকোমা (সেকেন্ডারি) হতে পারে। শিশুরাও কিন্তু গ্লুকোমা থেকে মুক্ত নয়। 
লক্ষণ
চোখব্যথা, মাথাব্যথা, লাল হওয়া, অনেক সময় বমি হওয়া। আলো কমলে কম দেখা, রাতে আলোর পাশে গোল লাল-নীল রং দেখা, হাঁটাচলা করার সময় আশপাশের বস্তু দেখতে না পাওয়া। ছোট শিশুর কর্নিয়া অনেক বড় দেখা, আলো সহ্য করতে না পারা, ঘন ঘন চশমার পাওয়ার বদলানো ইত্যাদি। 
রোগের কারণ
এটি অনেকটা বংশগত রোগ। যাদের উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস আছে, তারা আক্রান্ত হতে পারেন। কারণে-অকারণে চোখে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ব্যবহার কিংবা মূত্রথলি রোগ বা মানসিক রোগের জন্য কিছু ওষুধ ব্যবহারে এ রোগ দেখা দিতে পারে। 
চিকিৎসা
একবার রোগ ধরা পড়লে নিয়মিত চোখের ভেতর (ফান্ডাল), চোখের চাপ ও দৃষ্টি পরিধি পরীক্ষা করা, স্নায়ুস্তর পরীক্ষা (ওসিটি) এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ ব্যবহার করা। প্রয়োজনে অপারেশন বা লেজার চিকিৎসা লাগতে পারে। নিয়মিত চিকিৎসা নিলে এ রোগে ভয়ের কারণ নেই।
[চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও ফেকো সার্জন এবং কনসালট্যান্ট ]
 

আরও পড়ুন

×