গ্লুকোমা কি সত্যিই ভয়ের রোগ ?
ফাইল ছবি
ডা. আহসান কবির
প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫ | ০১:১৯
জনসচেতনতা বা প্রচার মাধ্যমের উন্নতির কারণে আমাদের দেশের মানুষ মানবদেহের অনেক ভালো-মন্দ রোগ সম্বন্ধে কমবেশি জানতে পারছেন।
চোখের একটা রোগ ‘গ্লুকোমা’ নিয়ে আজকাল বেশ আলোচনা হচ্ছে। বর্তমানে সচেতনতামূলক ‘বিশ্ব গ্লুকোমা দিবস’ও পালন হচ্ছে। যন্ত্রণাবিহীন অন্ধত্বের এই রোগের নাম ‘গ্লুকোমা’।
আসলে রোগটা যতটা ভয়ংকর মনে করা হচ্ছে ততটা ভয়ের নয়। তাই জানুন, রোগের কী কী লক্ষণ আর চিকিৎসাইবা কী। তাহলে সমস্যা কোথায়?
আমাদের শরীরে হরহামেশাই কিছু রোগ দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ডায়াবেটিস, রক্তের উচ্চচাপ, বা হার্টের রোগ উল্লেখযোগ্য। যারা সচেতন তারা এসব রোগ নিয়ে বছরের পর বছর দিব্যি সুস্থ আছেন।
গ্লুকোমা রোগটা কী:
চোখের নির্দিষ্ট আকৃতি বজায় রাখার জন্য এর ভেতরে দুই ধরনের পানি আছে। যেমন– পাতলা পানি, ঘন পানি। এই পাতলা পানি অনবরত তৈরি হয়, শরীরে ফিরে আসে। যদি এই যাওয়া-আসার মধ্যে চোখে কোনো বাধার সৃষ্টি হয় তখন চোখের পানির চাপ বেড়ে চোখের নার্ভ বা রেটিনা ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও আস্তে আস্তে দৃষ্টিশক্তি হারানোর ঝুঁকি এসে যায়।
লক্ষণ আর সাবধানতা:
l গ্লুকোমা সাধারণত বংশগত রোগ। তাই বংশের কেউ অন্ধ থাকলে সতর্ক থাকতে হবে।
l৩০ ঊর্ধ্ব যাদের বয়স, যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ আছে বা ঘনঘন চশমা পাওয়ার পরিবর্তন করতে হচ্ছে, কমবেশি মাথা ব্যথা, বমি বমি ভাব, চোখ লাল হচ্ছে, সামনে ভালো দেখা যায় অথচ আশপাশে কেউ থাকলে বুঝতে পারেন না, স্টেরয়েড ব্যবহার করছেন, মানসিক রোগের ওষুধ খাচ্ছেন, রাতের বেলা লাইটের পাশে রংধনু রং দেখতে পাচ্ছেন কিংবা দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে তাদের সতর্ক হতে হবে। কারণ এগুলো ‘গ্লুকোমা’ রোগের বিশেষ লক্ষণ। এগুলো দেখা গেলে সতর্ক থাকতে হবে। যদি এ রোগ শনাক্ত হয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত ওষুধ ব্যবহার ও চোখের কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে।
l ৪০ ঊর্ধ্ব যেকোনো ব্যক্তি নিয়মিত চোখ পরীক্ষার সময় চিকিৎসককে সোজাসুজি প্রশ্ন করবেন তার চোখে গ্লুকোমার কোনো লক্ষণ আছে কিনা। যদি থাকে তাহলে সাবধানতা অবলম্বন করুন, চিকিৎসকের পরামর্শে চলুন। প্রয়োজনে অপারেশন লাগলে চিন্তা করবেন না। ক্ষেত্র বিশেষ লেজার চিকিৎসা লাগে। একদম ভয় নেই। আপনি সুন্দর স্বাভাবিক জীবন পালন করছেন।
[চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও ফেকো সার্জন, যশোর চক্ষু ক্লিনিক অ্যান্ড ফেকো সেন্টার]
- বিষয় :
- রোগ