বারবার প্রস্রাব ও প্রস্রাবে জ্বালা
প্রস্টেট ক্যান্সার

ফাইল ছবি
ডাক্তারবাড়ি ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ | ০০:১৫
প্রস্টেট ক্যান্সার পুরুষকে ভীষণ সমস্যায় ফেলে দেয়। বয়সকালে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। কোন কোন লক্ষণ দেখলে বুঝবেন শরীরে জায়গা করে নিয়েছে এ অসুখ?
বারবার প্রস্রাব, প্রস্রাবে জ্বালা থাকলে সতর্ক হোন। প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের ক্যান্সারকে বলা হয় প্রস্টেট ক্যান্সার। এ অসুখে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা হলে এ রোগ থেকে অনায়াসে বাঁচা সম্ভব। প্রস্টেট ক্যান্সারের লক্ষণ সম্পর্কে জ্ঞান না থাকায় বহু ক্ষেত্রেই রোগ রয়ে যাচ্ছে অন্তরালে।
প্রস্টেট থাকে পুরুষের পেনিসের ঠিক গোড়ায়। এ গ্রন্থিটি অনেকটা ওয়ালনাটের আকৃতির হয়। এ গ্রন্থিতে তৈরি হয় সেমিলাল ফ্লুইড, যা স্পার্মকে রক্ষা করে, এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যায়। এ গ্রন্থিতে প্রথমে একটি, তারপর দুটি– এভাবে সংখ্যা বাড়াতে থাকে ক্যান্সার কোষ। তৈরি হয় টিউমার। এই টিউমার অবশ্যই ক্যান্সারাস। মনে রাখবেন, যত দ্রুত এ অসুখের চিকিৎসা হয়, মানুষের বাঁচার সম্ভাবনা ততটাই বেশি।
এদিকে এ অসুখের লক্ষণ সম্পর্কে অনেকে সন্দিহান। সেক্ষেত্রে উপসর্গ চিনে রাখলে লাভ আপনারই।
প্রস্টেট ক্যান্সার হলে কী কী উপসর্গ দেখা যায়
প্রস্রাব করতে সমস্যা হয়;
প্রস্রাবের ফ্লো থাকে না;
বারবার প্রস্রাব পায়;
পেট খালি করা যায় না;
জ্বালা করে প্রস্রাবের সময়;
রক্ত থাকতে পারে ইউরিনে;
ব্যথা হতে পারে পিঠে, নিতম্বে, পেলভিসে
বীর্যপাতের সময় ব্যথা হতে পারে ইত্যাদি।
কাদের ঝুঁকি বেশি?
পরিবারে আগে কারও এ অসুখ হয়ে থাকলে সাবধান। এক্ষেত্রে পরিবারের মধ্যে জিনের মাধ্যমে এ অসুখ ঘোরাফেরা করে। তাই প্রথম থেকেই সতর্ক থাকতে হবে।
সাধারণত এ অসুখ বেশি বয়সেই হয়। ৫০ বছরের পরই এ রোগ দেখা যায়। অনেক সময় কম বয়সেও এ রোগ হতে পারে। দেখা গেছে, কম বয়সে এ রোগ হলে তা বিপজ্জনক দিকে যায়। এ বিষয়টিও মাথায় রাখা খুব জরুরি।
কীভাবে রোগ নির্ণয়?
প্রস্টেট ক্যান্সার সম্পর্কে জানতে গেলে করতে হবে বায়োপসি টেস্ট। এ পরীক্ষার মাধ্যমে ধরা পড়ে যায় অসুখ। যে জায়গায় ক্যান্সার হয়েছে বলে আশঙ্কা, সেখান থেকে কোষ নিয়ে তার পরীক্ষা করা হয়। তারপরই রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত করে জানা যায়।
তবে রোগের আশঙ্কা রয়েছে কিনা তার একটা ধারণা আগেই করা যায়। এক্ষেত্রে পিএসএ টেস্ট করতে হয়। এ টেস্টের পুরো কথা হলো প্রস্টেট স্পেসিফিক অ্যান্টিজেন। এ টেস্ট এখন সব জায়গাতেই হয়। এ টেস্টের ফলাফলেই অনেক কিছুর ইঙ্গিত মেলে।
চিকিৎসা কী?
যত দ্রুত অসুখ ধরা পড়ে ততই মঙ্গল। হাতের কাছে অনেক বিকল্প খুলে যায় চিকিৎসার। এক্ষেত্রে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে করতে পারেন সার্জারি। সার্জারির মাধ্যমে রোগ সম্পূর্ণ নির্মূল করা সম্ভব। পাশাপাশি রেডিয়েশন থেরাপি করা হয় অনেকের। এক্ষেত্রে এক্সটারনাল রেডিয়েশন থেরাপি ও ইন্টারনাল রেডিয়েশন থেরাপি করা হয়। বর্তমানে চলে এসেছে ক্রায়োথেরাপি। এর মাধ্যমেও চিকিৎসা হয়। এছাড়া কেমোথেরাপি, বায়োলজিক্যাল থেরাপি, হাই ইনটেনসিটি ফোকাসড আলট্রাসাউন্ডের মাধ্যমেও চিকিৎসা সম্ভব। তবে কোন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হবে, তা একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকই ঠিক করবেন। v
- বিষয় :
- ক্যান্সার