- অন্যান্য
- ভূরিভোজের নামে প্রেমিক যুগলের জরিমানা আড়াই লাখ টাকা
ভূরিভোজের নামে প্রেমিক যুগলের জরিমানা আড়াই লাখ টাকা
প্রেমিক-প্রেমিকার বিরুদ্ধে উঠেছে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ। এ ‘অপরাধের’ বিচারে ডাকা হয়েছে গ্রাম্য সালিশ। সালিশে ইউপি মেম্বার ও মাতবররা সিদ্ধান্ত দিলেন, শাস্তি হিসেবে গ্রামবাসীকে এক সন্ধ্যায় ভূরিভোজ করাবেন ওই প্রেমিক যুগল। এজন্য খরচ বাবদ আড়াই লাখ টাকা জরিমানা দেবেন তারা। এর মধ্যে প্রেমিক দেবেন দেড় লাখ টাকা, আর প্রেমিকা দেবেন বাকি এক লাখ।
সালিশে তাৎক্ষণিক এক লাখ টাকা পরিশোধ করেন প্রেমিক। এরপর জরিমানার বাকি টাকা দিতে না পেরে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন ওই যুগল। নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছে তাদের পরিবার। নওগাঁর রানীনগর উপজেলার বড়গাছা ইউনিয়নের দেউলা গ্রামে ঘটেছে এ ঘটনা।
অভিযোগে জানা গেছে, দেওলা গ্রামের সুনীল চন্দ্রের ছেলে সবুজ চন্দ্রের সঙ্গে সাত মাস আগে একই গ্রামের এক গৃহবধূর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ১৯ নভেম্বর রাতে সবুজ ওই গৃহবধূর বাড়িতে গেলে তাদের দু’জনকে আটক করে গ্রামবাসী। তাদের বিরুদ্ধে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ তুলে সালিশ ডাকা হয়।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার অনিমেষ চন্দ্র সরকার ও গ্রাম্য মাতবর মোহসীন মল্লিক সালিশে তাদের দু’জনকে ওই জরিমানা করেন। তাৎক্ষণিক এক লাখ টাকা আদায়ের পর বাকি টাকা পরিশোধের জন্য প্রেমিক-প্রেমিকাকে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। তবে সেই টাকা দিতে না পেরে ওই রাতে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান তারা।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, জরিমানার বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য ওই গৃহবধূ ও তার স্বামী এবং সবুজের পরিবারকে হুমকি দিচ্ছেন মাতবররা। এতে তারা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
সবুজের দাবি, ওই গৃহবধূর সঙ্গে তাকে জড়িয়ে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে গ্রামবাসী। সালিশে তাকে অন্যায়ভাবে জরিমানা করা হয়েছে। বাধ্য হয়ে তাৎক্ষণিক তিনি এক লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন।
অন্যদিকে গৃহবধূর ভাষ্য, বিয়ের পর থেকে তিনি সংসার জীবনে সুখী নন। স্বামীর পরিবারের অত্যাচারে অতিষ্ঠ। এ অবস্থায় প্রতিবেশী সবুজের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান তিনি। তারা বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এই সম্পর্কের কথা কয়েকজন মাতবর জেনে যান। এরপর মিথ্যা অভিযোগ তুলে সবুজ ও তাকে জিম্মি করে জরিমানা করেন।
এ ব্যাপারে ইউপি মেম্বার অনিমেষ চন্দ্র সরকার বলেন, সালিশে গ্রামবাসী শাস্তির ওই সিদ্ধান্ত দিয়েছে। আমরা তা বাস্তবায়ন করছি।
রানীনগর থানার ওসি শাহিন আকন্দ বলেন, এ বিষয়ে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, কেউ অনৈতিক সম্পর্কে জড়ালে তাদের আইনের কাছে সোপর্দ করতে হবে। গ্রামে সালিশ বসিয়ে জরিমানা করা যাবে না। ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন