ঢাকা শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫

বাজারে নজরদারি বাড়াতে হবে: সিপিডি

বাজারে নজরদারি বাড়াতে হবে: সিপিডি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২২ | ২০:৪৯ | আপডেট: ০৫ জুন ২০২২ | ২০:৪৯

গত বছরের তুলনায় এ বছর চাল ৬০ লাখ টন বেশি আমদানি হয়েছে। ধানের মৌসুমে ধানও কৃষকের ঘরে উঠেছে। তারপরও বাজারে চালের দাম চড়া। এ ধরনের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির পেছনের কারণ খুঁজে বের করতে বাজারে নজরদারি বাড়ানোর সুপারিশ করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। পাশাপাশি ডলারের বাজারেও নজর দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে। সরকারি সংস্থার পাশাপাশি কার্যকর নজরদারির জন্য বেসরকারি খাতকেও সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দিয়েছে সিপিডি।

'বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০২১-২২: তৃতীয় অন্তর্বর্তীকালীন পর্যালোচনা' প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা তুলে ধরেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান ও গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। রোববার রাজধানীর ধানমন্ডিতে সংস্থার নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রতিবেদন তুলে ধরেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

চালের বাজারে অস্থিরতা প্রসঙ্গে খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, অর্থবছরের চেয়ে এ বছর চালের আমদানির টন বেশি। মজুত ১২ লাখ টন। সেটিও যথেষ্ট ভালো। এই পরিস্থিতিতে বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার কোনো কারণ নেই। বাজার অব্যবস্থাপনার কারণেই এ পরিস্থিতি। তিনি বলেন, ভোজ্যতেলের বাজারেও একই অবস্থা। ব্যবস্থাপনা ত্রুটির কারণে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারে কয়েক মাস লেগে যায়। তখন হয়তো আর দর কমানোর খুব প্রয়োজন থাকে না। এতে অন্যরা লাভবান হচ্ছে। গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ডলারের বাজারেও একই পরিস্থিতি। অনেকে ডলার মজুত করছেন। বৈধ চ্যানেলে ডলারের প্রবাহ কমছে। বাজার ব্যবস্থাপনায় আরও দক্ষতা এখন জরুরি। প্রতিযোগিতা কমিশন ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সঠিক তথ্য-উপাত্তেরও আবশ্যকতা রয়েছে। এখানেও দুর্বলতা আছে।

এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রেমিট্যান্সে আপাতত প্রণোদনা দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়ার কারণে রেমিট্যান্সে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা করা যেতে পারে।

ঢালাওভাবে প্রণোদনা না দেওয়ার পক্ষে অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শুধু বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান এবং উৎপাদনশীল খাতে যারা অবদান রাখছেন কেবল তাদেরই প্রণোদনা রাখা যেতে পারে। এই মুহূর্তে রেমিট্যান্সে প্রণোদনা দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। পণ্যবাজার সম্পর্কে তিনি বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনা ও সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলে পণ্যমূল্য স্থির রাখা যাবে। এ জন্য বাজার তদারকিতে বেশি নজর দিতে হবে। সিপিডির প্রতিবেদনে বলা হয়, এ মুহূর্তে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি নানা চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। প্রধান চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে- মূল্যস্ম্ফীতি, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি, রাজস্ব আয়, সরকারের উন্নয়ন ব্যয় ও দরিদ্রদের সামাজিক সুরক্ষা দেওয়া ইত্যাদি।

প্রতিবেদন উপস্থাপনায় ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, এসব চ্যালেঞ্জ সহসাই কাটার সম্ভাবনা কম। কারণ চ্যালেঞ্জগুলোর উৎস অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, আন্তর্জাতিক সমস্যা। এসব আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে মূল্যস্ফীতির চাপ, বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি, চলতি হিসাবে ঘাটতি, বিনিময় হারে অস্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভের ওপর চাপ।

আরও পড়ুন

×