বাম্পার ফলনেও দাম বাড়ার কারণ জানাল ব্রি
করপোরেট প্রতিষ্ঠান চালের বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায়

ছবি: ফাইল
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ | ১৮:০০ | আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ | ২০:৪৯
সংকট নেই, তবু চালের দাম বেড়েই চলেছে। এমনকি শুল্ক্ক কমিয়ে বিদেশ থেকে চাল আমদানির পরও দাম কমার লক্ষণ নেই। বহুদিন ধরেই চালের বাজার অস্থির। ধান-চালের ওপর করপোরেট প্রতিষ্ঠানের চোখ পড়েছে। তারা চালের বাজারে ঢুকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। মৌসুমি ধান ব্যবসায়ী ও মিলাররা বেশি মুনাফা করছেন। ধান-চালের বাজারে কৃষক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাতে পাঁচবার হাতবদল হয়। প্রতিবার হাতবদলের সময় যোগ হয় খরচ আর মুনাফা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুনাফা করছেন চালকল মালিকরা। তাঁরা প্রতি কেজি চাল ও এর উপজাত বিক্রি করে ৮ থেকে ১৪ টাকা পর্যন্ত মুনাফা করছেন।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল শনিবার গাজীপুরে ব্রির বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, সামনের দিনগুলোতে চালের চাহিদা আরও বাড়বে। একদিকে জনসংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে কৃষিজমি কমছে। জটিল পরিস্থিতিতে চালের উৎপাদন বাড়াতে গবেষণায় আরও জোর দিতে হবে। একই সঙ্গে উদ্ভাবিত জাতের দ্রুত সম্প্রসারণ করতে হবে।
চালের বাম্পার ফলনের পরও কেন দাম কমছে না, এর প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে বস্তুনিষ্ঠ গবেষণার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, ব্রির গবেষণায় আমরা অনেক কারণ খুঁজে পেয়েছি। ব্রির পাশাপাশি বিআইডিএস, সিপিডিসহ অন্য প্রতিষ্ঠানকেও এ বিষয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন।
ব্রির মহাপরিচালক শাহজাহান কবির বলেন, আমনে বাম্পার ফলন হয়েছে। আগামী জুন পর্যন্ত চালের কোনো সংকট হবে না, বরং ৪২ লাখ টন উদ্বৃত্ত থাকবে। ১৭ কোটি মানুষের চালের চাহিদার পাশাপাশি মানুষের বাইরে (নন-হিউম্যান) ভোগ ২৬ শতাংশকেও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। তার পরও বাজারে কেন চালের দাম কমছে না, তা জানতে ব্রি মাঠ পর্যায়ে গবেষণা করেছে।
ব্রির মহাপরিচালক জানান, গবেষণায় দেখা গেছে, চালকল মালিক ও খুচরা বিক্রেতারা অতিরিক্ত মুনাফা করছেন। চালকল মালিকরা কেজিতে ৮-১৪ টাকা লাভ করছেন। কৃষকের উৎপাদন খরচও কিছুটা বেড়েছে। এ ছাড়া, করপোরেট গ্রুপগুলো চালের বাজারে ঢুকতে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম ও কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার। বক্তব্য দেন বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার, বিএডিসির চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস প্রমুখ।
- বিষয় :
- চালের বাজার