ঢাকা মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ঢাকায় জাপানের অর্থনীতিবিষয়কমন্ত্রী

আরও জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশে আসতে চায়

আরও জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশে আসতে চায়

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৩ | ১৮:০০

বাংলাদেশ সরকারকে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত করার পরামর্শ দিয়েছেন জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্পবিষয়কমন্ত্রী ইয়াসুতোশি নিশিমুরা। রোববার ঢাকায় ‘আগামী ৫০ বছরে বাংলাদেশ-জাপান অর্থনৈতিক সম্পর্ক’ শীর্ষক দিনব্যাপী সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো), বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) যৌথভাবে ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে এ সম্মেলনের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইয়াসুতোশি নিশিমুরা।

সম্মেলনে ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং জেট্রোর মধ্যে একটি সমঝোতা  স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করা হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ এসইজেড লিমিটেড ও বাংলাদেশ আইআরআইএস কোম্পানি লিমিটেড এবং বাংলাদেশ এসইজেড ও ব্র্যাক কুমন লিমিটেডের সঙ্গে এমওইউ স্বাক্ষর করা হয়েছে। সম্মেলনে বাংলাদেশে উৎপাদন খাতের সম্ভাবনা, আইসিটি, স্টার্টআপ এবং জ্বালানি বিষয়ে আলোচনা হয়।

ইয়াসুতোশি নিশিমুরা বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগতি বিশ্বব্যাপী নজর কেড়েছে। ৩০০ টিরও বেশি জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে।  আরও কোম্পানি বাংলাদেশে আসতে চায়। এ জন্য বিনিয়োগ পরিবেশ আরও উন্নত করতে হবে। জ্বালানি নিরাপত্তা ও জলবায়ু পরিবর্তনে জাপান বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরবর্তী স্তরের উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের বন্দর, উৎপাদন ও তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের মানোন্নয়নে কাজ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বিগত ৫০ বছরের সম্পর্কের আলোকে আমাদের আগামী ৫০ বছরের দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করতে হবে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষরের জন্য দুই দেশের জয়েন্ট স্টাডি গ্রুপ কাজ করছে। এ চুক্তি স্বাক্ষরের কাজ এগিয়ে নিতে শিগগির জাপানের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে আসবে।  

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সফলতার সঙ্গে ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হয়ে যাবে। এ উত্তরণ-পরবর্তী আগেই ইপিএ চুক্তি হলে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর জাপানের বাজারে পণ্য রপ্তানিতে তেমন প্রভাব পড়বে না। বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে জাপানের অনেক উদ্যোক্তা বিনিয়োগ করেছেন। এ দেশে সমুদ্রকেন্দ্রিক ব্যাপক বিনিয়গের সুযোগ রয়েছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিগত ৫০ বছর বাংলাদেশকে নানাভাবে সহযোগিতা দিয়ে আসছে দেশটি। বাংলাদেশের বড় রপ্তানি বাজারে পরিণত হয়েছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ এসেছে, আরও আসছে। আগামীতেও জাপান বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে বলেও আশা করেন তিনি।  

শিল্পমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে কৃষি, মেট্রোরেল, শিল্পোন্নয়ন, জাহাজ রিসাইক্লিং, শুল্কসংক্রান্ত বিষয়, মেধাসম্পদ, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, আইসিটি ও সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে আটটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ আরও বাড়িয়ে আগামীতে তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞান বাড়ানো এবং স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম নিয়ে কাজ করা যেতে পারে। আগামীতে জাপানি সহযোগিতা, বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের ধারা আরও বাড়বে বলে তিনি আশা করেন।

এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, জেট্রোর সম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করছে এমন ৬২ শতাংশ জাপানি কোম্পানি মনে করে, ২০২৩ সালে তারা লাভজনক অবস্থায় থাকবে। একই সঙ্গে আগামী দুই বছরে ৭২ শতাংশ কোম্পানি বাংলাদেশে তাদের ব্যবসার পরিধি বাড়াবে।

সম্মেলনের পর ইয়াসুতোশি নিশিমুরের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বৈঠকের পর বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, জাপান বাংলাদেশের বড় বড়  প্রকল্পে বিনিয়োগ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণের পরও জাপানে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য অগ্রাধিকার বিষয়েও কথা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির (ইপিএ) কাজ চলমান। খুব শিগগির এ চুক্তি করার বিষয়ে উভয় দেশ সম্মত হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সরকার সবসময় কঠোর অবস্থান নিয়ে থাকে। যারা অবৈধভাবে খাদ্যপণ্য মজুত করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকার আইনও পাস করেছে।

আরও পড়ুন

×