ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

বাজেট ব্যবসাবান্ধব: এফবিসিসিআই

বাজেট ব্যবসাবান্ধব: এফবিসিসিআই

সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য পাঠ করেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম -সমকাল

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ জুন ২০১৯ | ১০:০১ | আপডেট: ১৫ জুন ২০১৯ | ১৪:১০

প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটকে ব্যবসাবান্ধব হিসেবে মনে করছে দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। ব্যবসায়ী নেতারা বলেছেন, এ বাজেট ব্যবসাবান্ধব এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।

শনিবার বাজেটের ওপর আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় এফবিসিসিআইর পক্ষ থেকে এমন মতামত জানানো হয়েছে। রাজধানীর মতিঝিলে ফেডারেশন ভবনে এ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য দেন সংগঠনটির সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম।

বিনা প্রশ্নে ফ্ল্যাট, জমি ও শিল্পে কালো টাকা বা অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগ করার সুযোগ দেওয়াকে স্বাগত জানান শেখ ফজলে ফাহিম। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগকে এফবিসিসিআই স্বাগত জানায়। বৈধভাবে উপার্জিত অর্থও কোনো কারণে অপ্রদর্শিত থাকতে পারে। সেই অর্থ উৎপাদন খাতে গেলে সেটিকে নেতিবাচক হিসেবে দেখার কিছু নেই। তা ছাড়া অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগ হলে অর্থ পাচারও বন্ধ হবে।

লিখিত বক্তব্যে বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা, গবেষণা ও উদ্ভাবন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কৃষি খাতকে গুরুত্ব দেওয়ায় এফবিসিসিআই সভাপতি সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, বাজেটে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়নের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান প্রক্রিয়া গতিশীল হবে। এ ছাড়া দেশীয় শিল্প সহায়ক বিভিন্ন পদক্ষেপ রয়েছে বাজেটে। যুবকদের জন্য বাজেটে ১০০ কোটি টাকার স্টার্টআপ তহবিল গঠনের প্রস্তাব খুবই ইতিবাচক।

তবে বাজেটের ঘাটতি মেটানোর জন্য এফবিসিসিআই সভাপতি ব্যাংকের বাইরে অন্য উৎস থেকে টাকা নেওয়ার জন্য সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের বাজেটের ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক খাত থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। এটি হলে বেসরকারি খাতকে ঋণ পেতে বেগ পেতে হবে। এজন্য বাজেট ঘাটতি পূরণে ব্যাংক খাতের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে বৈদেশিক উৎস, অবকাঠামো তহবিল, অবকাঠামো বন্ড ও অন্যান্য আর্থিক উপাদানের ওপর জোর দেওয়ার অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, সরকার তিন লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য নিয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১৬ দশমিক ২৮ শতাংশ বেশি। এফবিসিসিআই মনে করে, হয়রানিমুক্ত রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থাপনা ও সঠিক অটোমেশনের মাধ্যমে সাধারণভাবে স্বচ্ছ ও ধারাবাহিকতার সঙ্গে কাজ করলে এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। রাজস্ব আয়ের এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, ব্যবসায়ীদের আশা কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে বড় ব্যবসার ক্ষেত্রে কোনো হয়রানি থাকবে না। ভোক্তা পর্যায়ে খরচ বাড়বে না। ব্যবসা সহজীকরণে কোনো বাধা থাকবে না। ভেজালমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত হবে এবং করের আওতা বাড়বে। সুষ্ঠু তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করলে প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় মুক্তিযোদ্ধা, বয়স্ক ব্যক্তি, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত নারী, অসচ্ছল প্রতিবন্ধী, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠী, চা শ্রমিকসহ সব উপকারভোগীর সংখ্যা ও আর্থিক সুবিধা বাড়ানোর যে প্রস্তাব এসেছে, তা মানবিক পদক্ষেপ।

নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করায় ছোট ব্যবসায়ী যারা প্যাকেজ ভ্যাট দিতেন তারা সমস্যায় পড়বে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত টার্নওভার যাদের তাদের ভ্যাট দেওয়া লাগবে না। এটা প্যাকেজ ভ্যাটের একটা সুবিধা। এর বাইরে যারা আছে তাদের কোনো সমস্যা হলে তা আলোচনা করে সমাধানের সুযোগ রয়েছে।

প্রস্তাবিত বাজেটকে কেন ব্যবসাবান্ধব বলছেন- সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে এফবিসিসিআইর সহসভাপতি ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আগের বাজেটগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবসার সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে। কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা থাকলেও তা আলোচনার মাধ্যমে সংশোধনের সুযোগ এখনও আছে।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পরিচালক নিজাম উদ্দিন আহমেদ, হাসিনা নেওয়াজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

×