জাতীয় জনসম্মিলনে বক্তারা
এসডিজি অর্জনে বড় বাধা ক্ষুধা ও বৈষম্য

শনিবার রাজধানীর প্রেসক্লাবে এসডিজি ও মধ্যবর্তী পর্যালোচনা বিষয়ক জাতীয় জনসম্মিলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অর্থনীতিবিদ ড. জামাল উদ্দিন- সমকাল
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৩:৫১ | আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৩:৫১
দারিদ্র, ক্ষুধা ও অসমতা মুক্ত সমাজ তৈরি করাই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-এসডিজির প্রধান উদ্দেশ্য। জাতিসংঘের উন্নয়ন এজেন্ডা ২০৩০ অর্জনে বাংলাদেশ অঙ্গীকারাবদ্ধ। ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে। কিন্তু করোনাকালে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী আরও দারিদ্র্য এবং বিপন্নতার মুখে পড়েছে। পাশাপাশি বাজার ব্যবস্থারও চরম অবনতি ঘটেছে। ফলে দেশ এক সংকটময় সন্ধিক্ষণে আছে। যেখানে ক্ষুধা, দারিদ্র, বৈষম্য ও জলবায়ু সংকট এসডিজির অর্জনকে বাধাগ্রস্ত করছে।
শনিবার রাজধানীর প্রেসক্লাবে এসডিজি এ্যাকশন এলায়েন্স বাংলাদেশ ও গ্লোবাল এ্যাকশন এগেনইস্ট পভার্টি (জিক্যাপ) আয়োজিত এসডিজি ও মধ্যবর্তী পর্যালোচনা বিষয়ক জাতীয় জনসম্মিলনে এসব কথা বলেন বক্তারা।
বক্তারা বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট, বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা ও নয়া উদারবাদী অর্থনৈতিক নীতিতে বাংলাদেশে বৈষম্য না কমে অনেকাংশে বেড়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ছিল ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। যা ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। সব মানুষের জন্য স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে হলে এখাতে বরাদ্দ ১৫ শতাংশে উন্নীত করতে হবে।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থনীতিবিদ ড. জামাল উদ্দিন বলেন, পাকিস্তান আমলে আমাদের সব সম্পদ ধ্বংস করা হয়েছে। কিন্তু ওই সময় যে রাজনৈতিক দর্শন ছিল সেই দর্শন এখন আর নেই। এখন এটা পরিবর্তন হয়ে অন্যদিকে যাচ্ছে। সংবিধান, বিচার ব্যবস্থা, ব্যাংক ও রাষ্ট্র যদি তার নিয়ম অনুযায়ী না চলে তবে বৈষম্য তৈরি হবে। সেখানে লুটপাটও হবে। বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে অর্থ প্রাচার হচ্ছে। কিন্তু সরকার চাইলে এখনি অর্থপ্রচার বন্ধ হবে। তার জন্য প্রশাসক ও রাজনীতিবিদসহ সবাইকে দেশপ্রেমিক হতে হবে।
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসডিজি একশন এলায়েন্স এর জাতীয় সমন্বয়কারী আবদুল আউয়াল বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে উপকূলীয় অঞ্চলসহ ঝুকিপূর্ণ অঞ্চলসমূহে মানুষের দুর্গতি বেড়ে গেছে। গ্রাম থেকে মানুষ শহরে চলে আসছে। এর ফলে শহরেও দারিদ্র্যের হার বেড়ে গিয়েছে।
তিনি বলেন, জনপরিসেবায় বরাদ্ধ বাড়াতে হলে প্রত্যক্ষ কর বাড়ানোসহ কর ফাঁকি বন্ধ করা দরকার। কর্পোরেটদের দ্বারা বিদেশে মুনাফা স্থানান্তর এবং ব্যক্তি পর্যায়ে কর ফাঁকি প্রবণতা অর্থনীতিকে আরও চাপের মুখে ফেলেছে। যা এসডিজির সার্বিক অগ্রগতিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের পরিচালক রাহা নবকুমার, দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ডা. দিবালোক সিংহ, সেভ দা চিল্ড্রেনের এডভোকেসি এন্ড ক্যাম্পেইন ম্যানেজার সামিয়া আহমেদ, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি বদরুল আলম, গার্মেন্টস ট্রেড ইউনিয়ন নেত্রী সালেহা ইসলাম শান্তনা, এনজিও প্রতিনিধি আফজাল হোসেন, রুহী দাস, আসমা আক্তার মুক্তা, বদরুল আলম, কে জি এম ফারুক, সালেহা ইসলাম শান্তনা, বিমল রবিদাস, নাগরিক প্রতিনিধি মাহতাব উদ্দীন, মো. সেলিম, মনোয়ারা আক্তার মিনু, কানন প্রমুখ।