ব্যাংকের অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী (এডি) শাখাগুলোও অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় রপ্তানি বিল ডিসকাউন্ট করতে পারবে। এতোদিন শুধুমাত্র অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট থেকে বিল ডিসকাউন্টিং করা যেতো। তবে অফশোর ব্যাংকিং নীতিমালা কঠোর করায় এখন বিল ডিসকাউন্টিং প্রক্রিয়া জটিল হয়ে গেছে। এরকম প্রেক্ষাপটে নতুন এই সুযোগ দেওয়া হলো।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে জারি করা সার্কুলারে বলা হয়েছে, এখন থেকে ব্যাংকের এডি শাখা নিজস্ব উৎস থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় বিল ডিসকাউন্টিং করতে পারবে। এক্ষেত্রে ব্যাংকের কাছে এমন উদ্বৃত্ত তহবিল থাকতে হবে যা অন্য কোনো জায়গায় পরিশোধের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ না। এই বিল ডিসকাউন্টিংয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় নীতিমালা ও ২০১৯ সালের ৭ আগস্ট জারি করা সার্কুলারের সব ধরনের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা জানান, আগে অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট থেকে যে কোনো পরিমাণের বিল ডিসকাউন্ট করা গেলেও এখন সীমা আরোপ করা হয়েছে। এতে করে রপ্তানিকারকরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এরকম প্রেক্ষাপটে স্থানীয় ব্যাংকগুলোকেও বিল ডিসকাউন্টিংয়ের সুযোগ দেওয়া হলো।

বিল ডিসকাউন্টিং হলো- নির্দিষ্ট কমিশন নিয়ে রপ্তানি আদেশের বিপরীতে সৃষ্ট বিলের বিপরীতে টাকা দেওয়া। এক্ষেত্রে বিদেশি আমদানিকারকের ব্যাংকের গ্যারান্টির বিপরীতে সৃষ্ট বিল রপ্তানিকারক স্থানীয় ব্যাংকে জমা রাখেন। ব্যাংক বিল নিয়ে নির্দিষ্ট কমিশনের বিপরীতে ৮০ বা ৯০ শতাংশ টাকা দেয়। রপ্তানিমূল্য দেশে আসার পর সেখান থেকে ব্যাংক আবার বিল সমন্বয় করে নেয়। সাময়িক সময়ের জন্য রপ্তানিকারককে টাকা দেওয়ায় ব্যাংকগুলো কিছু কমিশন পায়। এই পদ্ধতিকে বিল ডিসকাউন্টিং বলা হয়। সাধারণভাবে পণ্য জাহাজীকরণের পর ১২০দিনের মধ্যে রপ্তানিমূল্য ফেরত আনার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যদিও করোনাভাইরাসের এ সঙ্কটের সময়ে রপ্তানিমূল্য প্রত্যাবাসনের সময় বাড়িয়ে ১৮০ দিন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

করোনাভাইরাসের সঙ্কটের সময়ে ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পর্যায়ে নানা সুবিধা দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রপ্তানিকারকদের জন্য ইডিএফের সুদহার কমানো, ঋণসীমা বাড়ানো, পণ্য জাহাজীকরণের জন্য ৭ শতাংশ সুদেও ঋণ, রপ্তানিমূল্য প্রত্যাবাসনে সময় বাড়ানো, স্বল্প মেয়াদি ঋণের বিপরীতে আমদানির দায় পরিশোধের সময় বাড়ানোসহ নানা সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সামগ্রিকভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য সচল রাখতে স্বল্প সুদের এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা, কিস্তি না দিলেও আগামী সেপ্টেম্বও পর্যন্ত খেলাপি না করাসহ নানা সুবিধা দেওয়া হয়েছে।