নতুন করে আরো ৩০ কোম্পানির শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস তুলে দিয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। রোববার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। ফলে এসব কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা কোম্পানিগুলোর শেয়ারদরে কী পরিবর্তন হয়-তা নিয়ে কিছুটা চিন্তিত।

নিজের শেয়ার নিয়ে চিন্তিত এসব বিনিয়োগকারীরা এর আগে যে ৬৬ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার ফল দেখলে কিছুটা আশ্বস্ত হতে পারেন। 

প্রথম দফায় ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া শেয়ারগুলোর লেনদেনের পরিমাণ এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার আগের দিনগুলোর তুলনায় বহুগুণ বেড়েছে। একইসঙ্গে বেশিরভাগের শেয়ারদর।

ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া শেয়ারে লেনদেন বেড়েছে

গত ৮ এপ্রিল প্রথম দফায় ৬৬ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে দিয়েছিল বিএসইসি। গত বৃহস্পতিবার ডিএসইতে এই ৬৬ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হওয়া শেয়ার ও ইউনিটের মোট মূল্য ছিল ১৭০ কোটি ৭৬ টাকা, যা ওইদিনের মোট লেনদেনের ৭.৪৬ শতাংশ। ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার আগে এসব শেয়ারের লেনদেনের পরিমাণ আধা শতাংশেরও কম ছিল।

দরও বেড়েছে

এর আগে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া ৬৬ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৩টির গত বৃহস্পতিবার দর বেড়ে কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে ফ্লোর প্রাইসের তুলনায় দ্বিগুণ দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছে দুই শেয়ার। দর হারিয়ে কেনাবেচা হয়েছে ২৯টি। বাকি চারটির দর আগের ফ্লোর প্রাইসের সমানে ছিল।

সবচেয়ে বেশি ১৪৪ শতাংশ বেড়ে প্রায় আড়াই গুণ দরে কেনাবেচা হচ্ছে কাট্টলী টেক্সটাইলের শেয়ার। বৃহস্পতিবার ডিএসইতে শেয়ারটি ২২ টাকা ৭০ পয়সায় কেনাবেচা হয়েছে। এর ফ্লোর প্রাইস ছিল ৯ টাকা ৩০ পয়সা।

দরবৃদ্ধির ক্ষেত্রে এরপর ৯৯ শতাংশ বা প্রায় দ্বিগুণ দর বেড়ে কেনাবেচা হয়েছে মেট্রো স্পিনিংয়ের শেয়ার। এ কোম্পানিটির শেয়ারে ফ্লোর প্রাইস ছিল ৮.৫০ টাকা। ডিএসইতে এ শেয়ার ১৯.৯০ টাকা। সাড়ে ৬৮ শতাংশ দর বেড়ে এর পরের অবস্থানে ছিল স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স। ফনিক্স ফাইন্যান্স প্রথম মিউচুয়াল ফান্ডের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৭ টাকা, সর্বশেষ এটি কেনাবেচা হয় ১১.৬০ টাকায়। দরবৃদ্ধির হার ৬৫.৭১%। ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দর ফ্লোর প্রাইস (৪০.১০ টাকা) থেকে ৫৮.৮৫% বেড়ে ৬৩.৭ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে।

ফ্লোরের তুলনায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ দর বেড়ে এখন কেনাবেচা হচ্ছে-প্যাসিফিক ডেনিম, এসইএমএল এফবিএসএলজি মিউচুয়াল ফান্ড, আরএন স্পিনিং, আইপিডিসি, এস্ক্যোয়ার নিট, রিং শাইন টেক্সটাইল ও রূপালী ব্যাংক।

১০ থেকে ২০ শতাংশ দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছে- আইএফআইএল ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড, সাফকো স্পিনিং, জাহীন স্পিনিং, রিজেন্ট টেক্সটাইল, কুইন সাউথ টেক্সটাইল, ডিবিএইচ প্রথম মিউচুয়াল ফান্ড, ফনিক্স ফাইন্যান্স এবং প্রাইম টেক্সটাইল।

তবে বিডি সার্ভিসেস এবং পিপলস লিজিংয়ের শেয়ারদর অপরিবর্তিত। কারণ এর মধ্যে বিডি সার্ভিসেসের ফ্রি-ফ্লোট শেয়ার না থাকার এ কোম্পানির শেয়ারের কোনো ক্রেতা-বিক্রেতা নেই। আর অবসায়নের উদ্যোগ নেওয়ার পর থেকে পিপলস লিজিংয়ের শেয়ার লেনদেন স্থগিত আছে।

ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার পর বাকি ২৯ শেয়ার যে দর কমার ধারায় ছিল, সে ধারা এখনও আছে। সর্বনিম্ন ১ থেকে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ পর্যন্ত দর হারিয়েছে এসব শেয়ার। তুলে নেওয়া ফ্লোর প্রাইসের তুলনায় সর্বাধিক ৩৯.৮০ শতাংশ দর হারিয়ে গতকাল এমএল ডাইং কেনাবেচা হয়েছে ৩০.১০ টাকায়। এর ফ্লোর প্রাইস ছিল ৫০ টাকা।

অবশ্য ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার পর পরই এসব শেয়ারের বেশিরভাগের দরপতন হয়েছিল। বড় দরপতন ঠেকাতে সার্কিট ব্রেকারে নিয়ম সংশোধন করে এসব শেয়ারের ক্ষেত্রে দিনের সর্বোচ্চ দরপতন ২ শতাংশে বেধে দেওয়া হয়। এর পর দরপতন কমেছে। নতুন করে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া শেয়ারের সার্কিট ব্রেকারের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।

ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া ৩০ শেয়ার

রেনউয়িক যজ্ঞেশ্বর, মুন্নু এগ্রো অ্যান্ড জেনারেল মেশিনারিজ, বাটা সু, কহিনূর কেমিক্যাল, নর্দার্ন জুট, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, ওয়াটা কেমিক্যাল, সোনালী পেপার, এপেক্স ফুটওয়্যার, কেএন্ডকিউ, বিডি অটোকার, স্টাইল ক্রাফট, জেমিনি সী ফুডস, ইস্টার্ন কেবলস, এপেক্স স্পিনিং, মুন্নু সিরামিক, বঙ্গজ, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, এটলাস বাংলাদেশ, এপেক্স ট্যানারি, সমতা লেদার, ন্যাশনাল টিউবস, আজিজ পাইপস, সী পার্ল হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট, হাক্কানি পাল্প অ্যান্ড পেপার, ওরিয়ন ইনফিউশনস, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার, এসকে ট্রিমস, ন্যাশনাল পলিমার এবং ডেফোডিল কম্পিউটার্স।