- অর্থনীতি
- এসএমই খাতের জন্য পৃথক শেয়ারবাজার চালু সিএসইতে
এসএমই খাতের জন্য পৃথক শেয়ারবাজার চালু সিএসইতে

দেশের শেয়ারবাজারে যাত্রা শুরু করলো স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোর শেয়ারবাজার ‘এসএমই বোর্ড’। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামকেন্দ্রিক দেশের দ্বিতীয় শেয়ারবাজার সিএসইতে নিয়ালকো অ্যালয় নামের কোম্পানির তালিকাভুক্তি ও লেনদেনের মাধ্যমে এ বাজারের কার্যক্রম শুরু হলো।
সকাল ১০টায় এসএমই বোর্ডের কার্যক্রম উদ্বোধন এবং নিয়ালকো অ্যালয় কোম্পানির তালিকাভুক্তির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম।
আসিফ ইব্রাহিম বলেন, বর্তমান কমিশন শেয়ারবাজার উন্নয়নে অনেক উদ্যোগ নিয়েছে। স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোর জন্য পৃথক প্ল্যাটফর্ম করা তারই অংশ। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এসএমই খাত ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে। আজ বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে এসএমই নামে নতুন প্ল্যাটফর্ম নতুন যুগের সূচনা হলো।
সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুন রশীদ বলেন, এসএমই প্ল্যাটফর্ম চালুর মধ্য দিয়ে দেশের শেয়ারবাজারে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। ছোট ও মাঝারি যেসব শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, চাইলে তারা এখন সহজে ও দীর্ঘমেয়াদী মূলধন সংগ্রহ করতে পারবে।
তিনি বলেন, ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সিএসই দেশের শেয়ারবাজারে নতুনত্ব দিয়েছে। ইলেট্রনিক শেয়ার লেনদেন প্রথম শুরু হয় সিএসইতে। এসএমই খাতের কোম্পানির জন্য পৃথক বাজার প্রতিষ্ঠার মধ্য নিয়ে নতুন এক পথের শুরু করলো।
নিয়ালকো অ্যালয় কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গাজী মোকাররম আলী চৌধুরী বলেন, শেয়ারবাজারই দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের প্রধান উৎস। বিদেশিদের কাছে তালিকাভুক্ত কোম্পানির গুরুত্ব অনেক। আগামীতে আইপিও প্রক্রিয়ায় মূল শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন তিনি।
এসএমই বোর্ড কী
এসএমই বোর্ড হলো স্বল্প ও মাঝারি মূলধনী কোম্পানিগুলোর জন্য পৃথক শেয়ারবাজার। তবে মূল শেয়ারবাজারের অধীনে এটি পরিচালিত হয়।
যেসব কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৫ কোটি টাকা বা তার বেশি, কিন্তু ৩০ কোটি টাকার বেশি নয়- এ ধরনের কোম্পানির জন্যই এ বাজার।
বর্তমান আইপিও আইনে ৩০ কোটি টাকার কম পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানির আইপিওতে আসার সুযোগ নেই। ফলে এমন কোম্পানি মূল শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির সুযোগ পায় না। এমন কোম্পানিগুলোর জন্য পৃথক বাজার তৈরি করা হয়েছে।
মূল বাজারের আইপিওর মত এ বাজারে তালিকাভুক্ত হতে ইচ্ছুক কোম্পানি প্রাইমারি শেয়ারবাজারের মাধ্যমে শেয়ার বিক্রি করে মূলধন সংগ্রহ করতে পারে। এই শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়ার নাম কোয়ালিফাইড ইনভেস্টরস অফার বা কিউআইও।
এ প্রক্রিয়ার এমন নামের কারণ মূল শেয়ারবাজারে যেকোনো বিনিয়োগকারী যেকোনো কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা করতে পারেন, যা এ বাজারে সম্ভব নয়।
এখানে মূলত আর্থিকভাবে ধনী (এনবিআরে জমা দেওয়া আয়কর রিটার্ন অনুযায়ী যাদের অন্তত ১ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে) তারাই এ শেয়ারবাজারে (এসএমই বোর্ড) তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা করতে পারবেন। এজন্য শুধু বিও অ্যাকাউন্ট থাকলেই চলবে না, লাগবে পৃথক রেজিস্ট্রেশন।
নিয়ালকো অ্যালয়
দেশের শেয়ারবাজারে এসএমই বোর্ডের প্রথম তালিকাভুক্ত কোম্পানি নিয়ালকো অ্যালয়। ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রামের এ কোম্পানিটি মূলত উন্নত মানের ব্রোঞ্জ পণ্য উৎপাদন ও রফতানি করে থাকে।
বর্তমানে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ২৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অভিহিত মূল্য ১০ টাকা ৭৫ লাখ শেয়ার বিক্রি করে কোম্পানিটি সাড়ে সাত কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করেছিল।
মন্তব্য করুন