- অর্থনীতি
- শেয়ারবাজারে দরপতন থামলেও লেনদেনে অস্থিরতা
শেয়ারবাজারে দরপতন থামলেও লেনদেনে অস্থিরতা

বড় দরপতনের পরদিনই আজ সোমবার সকালে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল শেয়ারবাজার। দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছিল অধিকাংশ শেয়ার। এতে লেনদেনের প্রথম ঘণ্টা পর্যন্ত বেশ ঊর্ধ্বমুখী ধারা ছিল। কিন্তু এর পর থেকে ক্রমে বৃদ্ধি পাওয়া দর হারাচ্ছে অনেক শেয়ার। এমনকি কিছু শেয়ার গতকালের থেকেও দর হারিয়েছে।
লেনদেন শুরুর প্রথম দুই ঘণ্টা শেষে দুপুর ১২টায় প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৯ পয়েন্ট বেড়ে ৬০০১ পয়েন্টে অবস্থান করতে দেখা গেছে। যদিও বেলা ১১টায় সূচকটি গতকালের তুলনায় প্রায় ৬২ পয়েন্ট বেড়ে ৬০৫৬ পয়েন্ট ছাড়িয়েছিল।
তবে সূচকের বৃদ্ধি শুরুর তুলনায় অনেকটাই কমে আসার পরও দুপুর ১২টায় ডিএসইতে ১৮৬ শেয়ার দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছিল। এ সময় দর হারিয়ে ১১৬ শেয়ারকে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে। দর অপরিবর্তিত অবস্থায় ছিল ৭০ শেয়ার।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সর্বাত্মক লকডাউনের ঘোষণার পর গতকাল রোববার ডিএসইর ৮২ শতাংশের বেশি শেয়ারের দরপতন হয়েছিল। এতে ডিএসইএক্স সূচক হারিয়েছিল ১০০ পয়েন্ট, নেমেছিল ৫৯৯২ পয়েন্টে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, লকডাউনের পাশাপাশি বাজারে এমন গুজবও ছিল, এ লকডাউনে ব্যাংকের লেনদেন বন্ধ হয়ে যাবে। তাতে শেয়ারবাজারের লেনদেনও বন্ধ হবে। এই গুজবও দরপতনকে উস্কে দেয়।
যদিও সরকারের দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে বলা হয়েছে, আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হতে চলা সর্বাত্মক লকডাউনে তৈরি পোশাকসহ রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো কঠোর স্বাস্থ্য-বিধি মেনে উৎপাদন কার্যক্রম চালাতে পারবে।
রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন কার্যক্রম চালু থাকলে ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ করার কোনো উপায় নেই। তবে ব্যাংকিং কার্যক্রম বর্তমানের তুলনায় সীমিত করা হতে পারে।
বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম ঘোষণা দিয়েছেন- ব্যাংক খোলা থাকলে যেকোনো অবস্থাতেই শেয়ারবাজারের লেনদেন কার্যক্রম চালু থাকবে। এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের কোনো গুজবে কান না দিতে এবং বিভ্রান্তিতে না পড়ারও অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
দুপুর ১২টায় খাতওয়ারি লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বেশিরভাগ খাতেরই অধিকাংশ শেয়ার দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছিল। ব্যাংক খাতের ৩১ কোম্পানির মধ্যে ১১টির দর বেড়ে, ৬টি দর হারিয়ে এবং ১৪টি দর অপরিবর্তিত অবস্থায় কেনাবেচা হচ্ছিল। বীমা খাতের ৫০ কোম্পানির মধ্যে ২৯টির দর বেড়ে, ১৯টি দর হারিয়ে এবং ২টি দর অপরিবর্তিত অবস্থায় কেনাবেচা হচ্ছিল। এ সময় গড়ে এ খাতের দর বেড়েছিল ১ শতাংশ।
বস্ত্র খাতের ৫৮ কোম্পানির মধ্যে ২২টির দর বেড়ে, ৩০টি দর হারিয়ে এবং ৬টি দর অপরিবর্তিত অবস্থায় কেনাবেচা হতে দেখা গেছে। গতকাল এ খাতের বেশ কিছু শেয়ারের দর উল্লেখযোগ্য হারে বাড়লেও আজ কিছুটা ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যাচ্ছে লেনদেনের শুরু থেকে। ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৩২ কোম্পানির মধ্যে ১৬টির দর বেড়ে, ১০টি দর হারিয়ে এবং ৩টি দর অপরিবর্তিত অবস্থায় কেনাবেচা হচ্ছিল।
ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের ২২ কোম্পানির মধ্যে ১০টির দর বেড়ে, ৪টি দর হারিয়ে এবং ৮টি দর অপরিবর্তিত অবস্থায় কেনাবেচা হচ্ছিল।
খাদ্য ও আনুসঙ্গিক খাতের ২০ কোম্পানির মধ্যে ১৫টির দর বেড়ে, ৪টি দর হারিয়ে এবং ১টি দর অপরিবর্তিত অবস্থায় কেনাবেচা হচ্ছিল। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের ২২ কোম্পানির মধ্যে ১৬টির দর বেড়ে, ৩টি দর হারিয়ে এবং ৩টি দর অপরিবর্তিত অবস্থায় কেনাবেচা হচ্ছিল। সিরামিক খাতের ৫ কোম্পানির সবগুলোর দর বেড়ে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে। অন্য খাতগুলোতে ছিল মিশ্রধারা।
দুপুর ১২টায় ডিএসইতে মোট ১৩ কোম্পানির শেয়ারদর ৯ থেকে ১০ শতাংশ দর বেড়ে দরবৃদ্ধির শীর্ষে অবস্থান করছিল।
এর মধ্যে সর্বাধিক ১০ শতাংশ দর বেড়ে শীর্ষে ছিল সাভার রিফ্যাক্টরিজ এবং জিলবাংলা সুগার মিলস। এর পরের অবস্থানে ছিল বিডি মনোস্পুল পেপার, দুয়ামিয়া কটন, জুট স্পিনার্স, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মুন্নু ফেব্রিক্স, শ্যামপুর সুগার মিলস, তমিজুদ্দিন টেক্সটাইল, পেপার প্রসেসিং, অলিম্পিক এক্সেসরিজ, বিচ হ্যাচারি এবং প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
বিপরীতে সাড়ে ৯ শতাংশ দর হারিয়ে দরপতনের শীর্ষে ছিল ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স। ৭ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে এর পরের অবস্থানে ছিল ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, মালেক স্পিনিং, কুইন সাউথ টেক্সটাইল।
সর্বাধিক ১৩৬ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা নিয়ে লেনদেনের শীর্ষে ছিল ডেল্টা লাইফ। ২৯ কোটি টাকার লেনদেন নিয়ে এর পরের অবস্থানে ছিল মালেক স্পিনিং।
মন্তব্য করুন