পুনঃতালিকাভুক্তির পর টানা ১৪তম দিনে এসে দরের চূড়া খুঁজে পেয়েছে মুন্নু ফেব্রিক্স এবং বিডি মনোস্পুল পেপারের শেয়ার। আজ বুধবার উভয় কোম্পানির শেয়ারদর সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে ওঠার পর সেখান থেকে দর কমে কেনাবেচা হচ্ছে।

এমনকি বিক্রেতাশূন্য অবস্থা থেকে ক্রেতাশূন্য অবস্থায় নেমেছে মুন্নু ফেব্রিক্সের শেয়ার। 

তবে গত ১৩ জুন ওটিসি বাজার থেকে মূল শেয়ারবাজারে ফেরা পেপার প্রসেসিং এবং তমিজুদ্দিন টেক্সটাইলের শেয়ার, এখনো সার্কিট ব্রেকারের  সর্বোচ্চ দরেই কেনাবেচা হচ্ছে এবং এ দুই শেয়ারে এখনো বিক্রেতাশূন্য অবস্থা বিরাজ করছে।

সার্কিট ব্রেকার হলো নির্দিষ্ট দিনে কোনো শেয়ার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন কোনো দর সীমার মধ্যে কেনাবেচা হতে পারবে, তার দিক-নির্দেশনা।

দিনের লেনদেন পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আজ সকাল ১০টায় দিনের লেনদেনের শুরুতে মুন্নু ফেব্রিক্স কোম্পানির শেয়ার সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দর সীমার সমান ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৩৭ টাকা ২০ পয়সা দরে কেনাবেচা হচ্ছিল। 

এ সময় আরো দর বাড়বে, এমন আশায় বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডারদের সিংহভাগ শেয়ার ধরে রাখার চিন্তায় ছিলেন। ফলে আগের ১৩ দিনের মত বিক্রেতাশূন্য ছিল। কিন্তু কিছু শেয়ারহোল্ডার ওই দরে সন্তুষ্ট থেকে শেয়ার বিক্রি করা শুরু করলে পরিস্থিতি পুরো পাল্টে যায়। 

এক পর্যায়ে গতকালের তুলনায় ১০ শতাংশ কমে বা সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিম্ন দরে এবং সকালের তুলনায় ২০ শতাংশ কম দর ৩০ টাকা ৬০ পয়সায় নেমেছে। দুপুর সাড়ে ১২টায় ১২ লাখের বেশি শেয়ার বিক্রির আদেশ থাকলেও কোনো ক্রেতা দেখা যায়নি।

ওটিসি থেকে ফেরার সময় কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল মাত্র ১০ টাকা।

মুন্নু ফেব্রিক্সের যখন এ অবস্থা তখনও কিছুটা ভালো অবস্থায় বিডি মনোস্পুল পেপারের শেয়ার। তবে গতকালের তুলনায় সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দর ১৮৯ টাকায় ওঠার পর অনেকে শেয়ার বিক্রি শুরু করেন। এতে ক্রমে শুরুর তুলনায় দর কমে আসে।

দুপুর সাড়ে ১২টায় মনোস্পুল পেপারের শেয়ার ১৭৯ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছিল। এ দর গতকালের তুলনায় ৫ শতাংশ বেশি। যদিও মাঝে শেয়ারটি ১৭৩ টাকায়ও কেনাবেচা হয়েছিল। ওটিসি থেকে ফেরার সময় কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৫০ টাকা।

এদিকে মুন্নু ফেব্রিক্স এবং মনোস্পুল পেপারের সঙ্গে একই দিনে ওটিসি থেকে মূল শেয়ারবাজারে ফেরা অপর দুই কোম্পানি পেপার প্রসেসিং এবং তমিজুদ্দিন টেক্সটাইলের শেয়ার দিনের সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হচ্ছে। রয়েছে বিক্রেতাশূন্য অবস্থায়। অর্থাৎ এ কোম্পানি দুইটি বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডাররা মনে করছেন, এগুলোর বাজারদর আরো বাড়বে।

গত ১৩ জুন পুনঃতালিকাভুক্তির আগে পেপার প্রসেসিং কোম্পানির শেয়ারদর ছিল ১৬ টাকা। ১৪তম দিনের প্রতিদিনই সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়ে শেয়ারটির দর এখন ৫৯ টাকা ৬০ পয়সায়।

এছাড়া তমিজুদ্দিন টেক্সটাইলের শেয়ার ১২ টাকা থেকে মাত্র শুরু করে আজ এখন কেনাবেচা হচ্ছে ৪৪ টাকা ৫০ পয়সায়।

বছরের পর বছর শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ না দেওয়া বা ঠিক মত এজিএম না করার কারণে ২০০৯ সালে দুই দফায় প্রায় ৭০টি কোম্পানিকে মূল শেয়ারবাজার থেকে তালিকাচ্যুত করেছিল তৎকালন শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসি।

তবে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার কেনাবেচা সুযোগ করে দিতে অপেক্ষাকৃত দুর্বল মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোর জন্য গড়া বিকল্প শেয়ারবাজার ওটিসিতে লেনদেনের সুযোগ রাখা হয়।

তবে বর্তমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি, ওই সব কোম্পানিগুলোর মধ্যে যেগুলো কিছুটা ভালো করছে, তাদের মূল শেয়ারবাজারে ফেরার অনুমতি দিচ্ছে।

এদিকে আজ দিনের লেনদেনের শুরু থেকে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় আছে সার্বিক শেয়াবাজার। 

দুপুর সাড়ে ১২টায় ডিএসইতে ২৯০ শেয়ার দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছিল। এ সময় দর হারিয়ে কেনাবেচা হচ্ছিল মাত্র ৪১ শেয়ার এবং দর অপরিবর্তিত ছিল ৪০টির।

এ সময় প্রতিটি খাতেরই অধিকাংশ শেয়ার দর বেড়ে কেনাবেচা হওয়ায় তার ইতিবাচক প্রভাব মূল্য সূচকেও ছিল।

ডিএসইএক্স সূচক গতকালের তুলনায় ৬৫ পয়েন্ট বেড়ে ৬১০৮ পয়েন্টে অবস্থান করতে দেখা গেছে। এ সময় পর্যন্ত ডিএসইতে কেনাবেচা হয় ৬১০ কোটি টাকার শেয়ার।