- অর্থনীতি
- মাত্র ৩ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে ফের উৎপাদনে বিচ হ্যাচারি!
মাত্র ৩ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে ফের উৎপাদনে বিচ হ্যাচারি!

মাত্র ৩ লাখ ২৭ হাজার নগদ টাকা নিয়ে পুনরায় ব্যবসা শুরু করেছে তালিকাভুক্ত কোম্পানি বিচ হ্যাচারি। উৎপাদন ও ব্যবসা কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার ৫ বছরেরও বেশি সময় পর গত সোমবার কোম্পানিটির পক্ষ থেকে পুনরায় উৎপাদনে ফেরার ঘোষণা এসেছে।
সামান্য নগদ অর্থ নিয়ে কী করে কোম্পানিটি পুনরায় ব্যবসা কার্যক্রম শুরু করলো- এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। এর নেপথ্যে শেয়ার কারসাজির উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলেও সন্দেহ তাদের।
উৎপাদনে ফেরার ঘোষণার তিন দিন আগে গত ২৩ জুন থেকে হঠাৎ দরবৃদ্ধিতে রকেট গতি পেয়েছিল এ কোম্পানির শেয়ার। মাত্র চারদিনে ৩৮ শতাংশ দর বেড়ে ১৮ টাকা ৯০ পয়সা পর্যন্ত দর উঠেছিল গতকাল।
যদিও আজ বুধবার বেলা দেড়টায় শেয়ারটির দর গতকালের তুলনায় ২ শতাংশের ওপর হারিয়ে ১৭ টাকায় কেনাবেচা হতে দেখা গেছে।
গত ২৮ জুন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে কোম্পানিটির প্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্যে বলা হয়েছে, ওইদিন থেকেই কোম্পানিটি উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করেছে।
কংক্রিট নির্মিত ছোট ১৫টি চৌবাচ্চায় তেলাপিয়া, কৈ, পাঙ্গাস এবং পাবদা মাছ চাষ করার মাধ্যমে এ উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করেছে। বছরে মাত্র ১০৫ টন মাছ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের কথা জানিয়েছে কোম্পানিটি।
কিন্তু এত অল্প পরিমাণ চাষের কৈ, পাবদা ও পাঙ্গাস মাছ বিক্রি করে কোম্পানিটি কত টাকা মুনাফা করবে, আর পরিচালন খরচ শেষে নিট মুনাফা থাকবে কি-না, বা বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিতে পারবে কি-না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
গত ৩১ মার্চ তৃতীয় প্রান্তিক শেষে বিচ হ্যাচারির অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানিটির নগদ ও ব্যাংকে জমা মিলে মোট টাকা ছিল ৩ লাখ ২৭ হাজার ৪৩৯ টাকা।
কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ নির্মাণের সময় সাগরতীরে অবস্থিত কোম্পানিটির স্থাপনার একটি অংশ অধিগ্রহণ করেছিল সরকার। এর পর ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল কোম্পানিটির উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হওয়ার আগে কোম্পানিটির ব্যবসা ছিল চিংড়ির রেণু পোনা উৎপাদন।
এ বিষয়ে জানতে জানতে কোম্পানির সিইও রাদীব ইসলামের মোবাইলে কয়েক দফায় ফোন করেও সংযুক্ত হওয়া যায়নি।
বিচ হ্যাচারির কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ নূর ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি শুধু কোম্পানিটির উৎপাদন কার্যক্রমে ফেরার তথ্যটি নিশ্চিত করেন। এর বাইরে অন্য কোনো তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোম্পানিটির অপর এক সূত্র জানায়, সিইও রাবীদ ইসলাম হঠাৎ করেই পুনরায় ব্যবসা কার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ নেন। ব্যবসা শুরুর জন্য তিনিই অর্থ সংগ্রহ করেছেন।
এরই মধ্যে মাত্র ৫৫ হাজার লিটার ধারণ ক্ষমতার ১৫টি কংক্রিটের চৌবাচ্চায় তেলাপিয়া, পাঙ্গাস মাছের পোনা ছাড়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বুধবার দুপুর দেড়টায় ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ার গতকালের তুলনায় সোয়া ২ শতাংশ কমে ১৭ টাকা ১০ পয়সা দরে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে। গত ১৮ এপ্রিলও শেয়ারটি ১১টাকায় কেনাবেচা হয়েছিল। এর পরই দর বাড়তে থাকে।
গত ২২ জুন ১৩ টাকা দরে শেয়ার কেনাবেচার পরই এটি দরবৃদ্ধির ক্ষেত্রে রকেট গতি পায়। মাত্র চারদিনেই শেয়ারটির দর ৩৮ শতাংশ বেড়ে প্রায় ১৯ টাকায় ওঠে।
মন্তব্য করুন