বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি)-এর অধীন বন্ধ ঘোষিত মিলগুলোর ২১ হাজার ৫৫২ জন বদলি শ্রমিকের বকেয়া পাওনা পরিশোধের জন্য  মোট ২১২ কোটি ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রদান করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। 

বিজেএমসি’র বন্ধ ঘোষিত পাটকলগুলোর  বদলি শ্রমিকদের জাতীয় মজুরি স্কেল ২০১৫ ও জাতীয় মজুরি স্কেল ২০১০-এর পার্থক্যজনিত বকেয়া পাওনা পরিশোধের এ অর্থ প্রদান করবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার  অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ অর্থ বরাদ্দ  বুঝে পায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। বরাদ্দকৃত এ অর্থ শ্রমিকদের নিজ নিজ অ্যাকাউন্টে চেকের মাধ্যমে দেওয়া হবে। 

অর্থ মন্ত্রণালয় 'পরিচালন ঋণ' বা 'অপারেশন লোন' হিসেবে এ টাকা বরাদ্দ পাট মন্ত্রণালয়কে প্রদান করেছে ।

তবে শর্ত রয়েছে, বরাদ্দকৃত অর্থ  ২০২১-২২ অর্থ বছরের বিজেএমসি’র অধীন ১৮টি মিলের ২১ হাজার ৫৫২ জন বদলি শ্রমিকের বকেয়া পাওনা পরিশোধ ব্যতিত অন্য কোনো খাতে ব্যয় করা যাবে না।

শর্তে বলা হয়েছে, বদলি শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধের ক্ষেত্রে প্রত্যেক শ্রমিকের মিল প্রদত্ত টোকেন ও ইউনিক আইডি নম্বর, এনআইডি এবং ব্যাংক হিসাব থাকতে হবে। আবশ্যিকভাবে এনআইডি যাচাই করে ব্যাংক হিসাব-এর মাধ্যমে বদলি শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করতে হবে। কোনোভাবেই এনআইডি এবং ব্যাংক হিসাব ব্যতীত বদলি শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করা যাবে না।

বদলি শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধকালে মিল কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বকেয়া পাওনার বিষয়টি সরকারি বিধি বিধানের আলোকে পুনরায় যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত হয়ে পরিশোধ করবে।

বকেয়া পাওনা পরিশোধকালে পাওনার বিষয়ে কোনো অসঙ্গতি দৃষ্টিগোচর হলে বিজেএমসি বা মিল কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে তা সংশোধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ে সরকারের বিদ্যমান বিধি-বিধান অনুসরণ করতে হবে। বিধি বহির্ভূতভাবে কোনো অর্থ পরিশোধ করা হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা দায়ী থাকবেন। বরাদ্দকৃত অর্থের জন্য অর্থ বিভাগের সঙ্গে বিজেএমসিকে একটি ঋণচুক্তি সম্পাদন করতে হবে ।

বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি)-এর অধীন বন্ধঘোষিত মিলগুলোর বদলি শ্রমিকদের এনআইডি ও ব্যাংক হিসাব আছে এরূপ ২১ হাজার ৬৪৩ জন শ্রমিকের বকেয়া পাওনার পরিমাণ ২১৩ কোটি ১২ লাখ টাকা।

এই শ্রমিকদের মধ্যে ত্রুটিপূর্ণ এনআইডি রয়েছে ৯১ জনের ও তাদের অনুকূলে আর্থিক সংশ্লেষ ১ কোটি  ৪ লাখ টাকা।

ত্রুটিপূর্ণ এনআইডিভূক্ত শ্রমিক বাদে অবশিষ্ট ২১ হাজার ৫৫২ জন বদলি শ্রমিকের অনুকূলে বকেয়া পাওনা বাবদ মোট ২১২ কোটি ৮ লাখ  টাকা  ২০২১-২২ অর্থবছরে ‘পরিচালন ঋণ’ খাত হতে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীন বিজেএমসি’র অনুকূলে বরাদ্দ প্রদান করা হয়।

বিজেএমসির বন্ধ মিলগুলোর কার্যক্রম  বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ভাড়াভিত্তিক বা ইজারা (লীজ) পদ্ধতিতে চলমান আছে।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় বলছে, বেসকারি ব্যবস্থাপনায় পুনরায়  চালু হওয়া মিলগুলোতে অবসায়নকৃত শ্রমিকেরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজের সুযোগ পাবে। একইসঙ্গে এসব মিলে কর্মক্ষম ও দক্ষ শ্রমিকদের নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সব শ্রমিককে পর্যায়ক্রমে অবশ্যই পুনর্বাসন করা হবে।