- অর্থনীতি
- কারখানা চালু থাকবে কিনা সিদ্ধান্ত সোমবারের মধ্যে
কারখানা চালু থাকবে কিনা সিদ্ধান্ত সোমবারের মধ্যে

বাংলাদেশের একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি (ছবি: সংগৃহীত)
ঈদের পর লকডাউনের সময় শিল্প-কারখানা খোলা রাখার জন্য উদ্যোক্তাদের দাবির বিষয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনা চলছে। সোমবারের মধ্যে এ দাবির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শনিবার পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ঈদের পর শিল্প-কারখানা খোলার বিষয়ে শনিবার পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, লকডাউনের সময় কারখানা খোলা রাখা হবে কিনা এ নিয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনা চলছে। দুই-একদিনের মধ্যেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে কারখানা খোলা রাখার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। কিন্তু শনিবার পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কারণ শিল্প কারখানা খোলার সঙ্গে যেমন অর্থনীতি জড়িত তেমনি করোনা মহামারি থেকে বেঁচে থাকাটাও জরুরি।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে বৈঠকে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএসহ বস্ত্র ও তৈরি পোশাক খাতের পাঁচটি সংগঠনের নেতারা বৈঠকে করে ঈদের পর লকডাউনে কারখানা খোলা রাখার সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণের দাবি জানান। এ বিষয়ে অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি দেন তারা। এর আগে মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ঈদের পর লকডাউনের ১৪ দিন সব ধরনের শিল্প-কারখানা বন্ধ থাকবে।
এদিকে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন শনিবার চুয়াডাঙ্গায় বিজিবি-৬ এর ৯৬ তম রিক্রুটিং ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে বলেছেন, ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগষ্ট পর্যন্ত ১৪ দিনের লকডাউন হবে আরও কঠোর। বন্ধ থাকবে গার্মেন্টসসহ সব শিল্প প্রতিষ্ঠান। প্রসঙ্গত, এ বছর কোনো লকডাউনে পোশাক কারখানা কিংবা কোনো শিল্প কারখানা বন্ধ ছিল না।
জানতে চাইলে বিকেএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম সমকালকে বলেন, সোমবার নাগাদ সিদ্ধান্ত পেলে শ্রমিকদের ছুটি নিয়ে সমস্যা হয়ে যাবে। কারণ ঈদের ছুটির আগে সোমবার শেষ কর্ম দিবস। শেষ মুহূর্তে তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হবে। এছাড়া রপ্তানি আদেশ বাতিল এবং স্থগিত না করার জন্য ক্রেতাদের কাছে শনিবার পর্যন্ত সময় চেয়েছিলেন তারা। এখন তাদের কাছে আবারও সময় চাইতে হবে। মোহাম্মদ হাতেমের আশা, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লকডাউনে কারখানা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত দেবেন। কারণ, রপ্তানি আদেশ বাতিল এবং স্থগিত হয়ে হচ্ছে। ক্রেতারাও বারবার ফোনে এবং ইমেইলে সিদ্ধান্ত জানতে চাইছেন।
পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এ খবর প্রচারের পরপরই ক্রেতারা উদ্বেগ জানিয়ে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে ইমেইলে ও ফোনে যোগাযোগ করতে শুরু করেন। অনেকেই রপ্তানি আদেশ স্থগিত করছেন। বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ সূত্রে জানা গেছে, লকডাউনে শিল্প কারখানা বন্ধ রাখার ঘোষণায় তৈরি পোশাকের শতাধিক রপ্তানি আদেশ স্থগিত হয়ে গেছে। অনেক কারখানার রপ্তানি আদেশ বাতিল করা হয়েছে। রপ্তানি আদেশ নিয়ে আলোচনা থমকে গেছে।
প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে সংগঠনগুলো বলেছে, টানা ১৪ দিন কারখানা বন্ধ থাকলে রপ্তানি আদেশ হারাতে হবে। ইউরোপ এবং আমেরিকায় পরিস্থিতি প্রায় করোনার পূর্বের অবস্থায় ফিরে গেছে। সব মার্কেট, দোকানপাট ও ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানগুলোর ফ্লোর খুলে দেওয়া হয়েছে। পোশাকের এখন ব্যাপক চাহিদা। এ অবস্থায় কারখানা বন্ধ থাকলে ক্রেতারা প্রতিযোগী অন্য দেশে চলে যাবে।
মন্তব্য করুন