ঢাকা রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

সার্কুলার অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা

পরিবেশ সুরক্ষায় পোশাক বর্জ্যের পুনর্ব্যবহারে মনোযোগ জরুরি

পরিবেশ সুরক্ষায় পোশাক বর্জ্যের পুনর্ব্যবহারে মনোযোগ জরুরি

ছবি: সমকাল

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ | ১৬:৩৫

বাংলাদেশ বছরে প্রায় ৬০ শতাংশ টেক্সটাইল বর্জ্য রপ্তানি করে। সমস্ত রপ্তানি করা তুলা বর্জ্য পুনর্ব্যবহার করে, বাংলাদেশ তার মোট তুলা আমদানির প্রায় ১৫ শতাংশ কমাতে পারে। ২০৩০ সাল নাগাদ টেক্সটাইল শিল্পের পানির চাহিদা তিনগুণ বাড়বে। এ  অবস্থায় পোশাক শিল্পের টেকসই উন্নয়নে সার্কুলার ইকোনমি বা বৃত্তাকার অর্থনীতির বিকাশ জরুরি। বৃত্তাকার অর্থনৈতিক মডেলে শুধু পরিবেশবান্ধব কলকারখানা স্থাপন নয়, বরং শিল্পের বর্জ্যকে শিল্পের উপকরণ হিসেবে পুনরায় ব্যবহার, সংরক্ষণ ও পুনঃপ্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশে পোশাক শিল্পে সার্কুলারিটি, ডিকার্বোনাইজেশন ও প্রতিযোগিতামূলক বাজার’ শীর্ষক সংলাপে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। পলিসি একচেঞ্জ বাংলাদেশ ও লাইটক্যাসল পার্টনার্স যৌথভাবে এর আয়োজন করে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বা আধুনিক স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পোশাক শিল্পে যেসব পদ্ধতিগত পরিবর্তন আসছে তা নিয়ে পলিসি একচেঞ্জের সহযোগিতায় লাইটক্যাসল পার্টনার্স ‘বুনন ২০৩০’ নামে একটি বিস্তৃত কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। 

আলোচনায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘের শিল্প উন্নয়ন সংস্থার বাংলাদেশকান্ট্রি প্রতিনিধি ড. জাকি উজ জামান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কতৃপক্ষের মহাপরিচালক আরিফুল হক, বিজিএমইএর পরিচালক ভিদিয়া অমৃত খান,বিকেএমইএর সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, টিম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, এইচ এন্ড এমের স্টেকহোল্ডার এনগেজমেন্ট এবং পাবলিক অ্যাফেয়ার্স ম্যানেজার ফয়সাল রাব্বি প্রমুখ। লাইটক্যাসল পার্টনার্সের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন এর সহ প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক জাহেদুল আমিন, বিজনেস কনসালট্যান্ট সামিহা আনোয়ার, মৃন্ময় সোবহান ও অন্যান্য কর্মকর্তারা।  সঞ্চালনা করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম. মাসরুর রিয়াজ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি প্রতিনিধি কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ।

‘নীতি কর্মশালা: বুনন ২০৩০: সার্কুলারিটি এবং প্রতিযোগিতামূলক কৌশল সংলাপ’ শীর্ষক উপস্থাপনায় বলা হয়, দেশে পোশাক খাত বছরে প্রায় ৫ লাখ ৭৭ হাজার টন টেক্সটাইল বর্জ্য উৎপাদন করে। বাংলাদেশ বছরে সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার মূল্যের কাঁচামাল আমদানি করে, একই সঙ্গে উচ্চমানের ঝুট রপ্তানি করে। তাই প্রতিযোগিতামূলক বাজারে শুধু পরিবেশগত নয় বরং অর্থনৈতিক বিবেচনায়  সবুজ কারখানার গুরুত্ব অনেক বাড়ছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিজিএমইএর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে ২০০ টির অধিক শিল্পবান্ধব কারখানা রয়েছে। দেশে আনুমানিক সাড়ে ৩ হাজার কারখানার মধ্যে অধিক সংখ্যক সবুজ কারখানা স্থাপনের পাশাপাশি ‘কার্বন ফুটপ্রিন্ট’ কমানো এবং পরিবেশ সুরক্ষায় টেক্সটাইল বর্জ্যের পুনর্ব্যবহারযোগ্য পদ্ধতির দিকে মনোনিবেশ করা জরুরি।

ড. জাকি উজ জামান বলেন, বাংলাদেশ ব্র্যান্ডিংয়ে ভালো করছে। যদিও বাংলদেশ সবুজ কারখানা স্থাপনে বিশ্বে সবচেয়ে এগিয়ে, আর মূল দূষণকারী দেশের মধ্যেও বিবেচিত নয়। তারপরও আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন ভালোভাবে অণুসরণ করলে কারখানাগুলো আরও পরিবেশবান্ধব হবে। আরিফুল হক বলেন, প্রতিযোগিতামূলক বাজারে পুনর্ব্যবহারযোগ্য পণ্যের গুণগত মান যথেষ্ঠ ভালো হতে হবে। অন্যথায় ভোক্তারা এসব পণ্য কেনার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। ভিদিয়া অমৃত খান সবুজ কারখানার প্রসার ঘটাতে স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সবদিক বিচার বিশ্লেষণ করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নীতি গ্রহণের উপর গুরুত্ব দেন।

আরও পড়ুন

×