দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে ওয়ালটনের মুনাফায় ব্যাপক উত্থান

ওয়ালটনের লোগো
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৪ | ২২:৪৮ | আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৪ | ২২:৪৮
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি ও পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি, টালমাটাল বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেও পুঁজিবাজারে প্রকৌশল খাতের তালিকাভুক্ত কম্পানি ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির মুনাফায় ব্যাপক উত্থান।
চলতি হিসাব বছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর-২০২৩) বিগত বছরের একই সময়ের তুলনায় কম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে প্রায় ২৩ গুণ। এ সময়ে কম্পানিটির মুনাফা বৃদ্ধিসহ আর্থিক প্রায় সব সূচকেই ব্যাপক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।
ওয়ালটন হাই-টেকের চলতি হিসাব বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর-২০২৪ পর্যন্ত সময়ের প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।
গতকাল সোমবার কম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের ৩৭তম সভায় আলোচ্য সময়ের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর আর্থিক ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩-২০২৪ হিসাব বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে- অর্থাৎ প্রথম ছয় মাসে কম্পানিটির মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৪০ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা হয়েছিল ১৪ দশমিক ৩৬ কোটি টাকা।
এদিকে চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর-২০২৩) কম্পানির মুনাফা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৮ দশমিক ২৮ কোটি টাকা।
আগের হিসাব বছরের একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা হয়েছিল ৬০ দশমিক ৪৬ কোটি টাকা।
বিক্রয়ের বিপরীতে কাঁচামাল ও ফ্রেইট কস্ট উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস পাওয়ায় কম্পানিটি তার মোট মুনাফার শতকরা হার আগের তুলনায় উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য আর্থিক সূচকেও ব্যাপক উন্নতি হয়েছে ওয়ালটন হাই-টেকের।
চলতি হিসাব বছরের প্রথম ছয় মাসে কম্পানিটির প্রশাসনিক ও বিক্রয় সংক্রান্ত ব্যয়গুলো সার্বিকভাবে হ্রাস পাওয়ায় অপারেটিং প্রফিট মার্জিন উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে।
এ ছাড়া মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রার মান কমে যাওয়ার ফলে সৃষ্ট আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস পাওয়ায় কম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফার পরিমাণ বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে কম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস), শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস)।
প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সমাপ্ত সময়ে (জুলাই-ডিসেম্বর) প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ২৪ টাকা; যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ০ দশমিক ৪৭ টাকা। একই সময়ে কম্পানির শেয়ার প্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) পুনর্মূল্যায়ন ব্যতীত দাঁড়িয়েছে ২৪৪ দশমিক ২৬ টাকা এবং পুনর্মূল্যায়নসহ ৩৪৫ দশমিক ৭৫ টাকা। প্রথম ছয় মাসে শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ১৬ টাকা।
চলতি হিসাব বছরের অর্ধ-বার্ষিক সময় শেষে কম্পানির আর্থিক ব্যয়ের পরিমাণ ও শতকরা হার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। প্রথম ছয় মাসে বিক্রয়ের বিপরীতে আর্থিক ব্যয়ের শতকরা হার দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৫১ শতাংশ, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১৮ দশমিক ১৫ শতাংশ।
এ ছাড়া মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রার মান কমে যাওয়ায় গত বছরের প্রথম অর্ধ-বার্ষিকে কম্পানিটি ৩৩৬ দশমিক ১০ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। সেই ক্ষতি চলতি বছরের আলোচ্য সময়ে প্রায় ৮৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ হ্রাস পেয়ে মাত্র ৪৩ দশমিক ৭৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
এদিকে ছয় মাস (জুলাই-ডিসেম্বর) শেষে কম্পানির মোট আর্থিক ব্যয় হয়েছে ১৭৭ দশমিক ৯৩ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৪৬৯ দশমিক ৩৩ কোটি টাকা। ফলে চলতি হিসাব বছরের আলোচ্য সময়ে কম্পানির কর-পরবর্তী মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ; যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল মাত্র ০ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
এ ছাড়া পরবর্তী দুই প্রান্তিকে (জানুয়ারি-জুন ২০২৪) কম্পানির মুনাফা আরো সন্তোষজনক অবস্থানে যাবে বলে আশা করছে কোম্পানিটি।
- বিষয় :
- ওয়ালটন