ঢাকা সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫

এই মুহূর্তে টাকার দরপতন আটকাতে হবে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

এই মুহূর্তে টাকার দরপতন আটকাতে হবে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ফাইল ছবি

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২২ | ০১:০২ | আপডেট: ১০ মার্চ ২০২২ | ০১:০২

সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন চাহিদার পণ্যের দাম যে পর্যায়ে গেছে তাতে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে পিছিয়ে পড়া মানুষের ক্রয় ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষকে সুরক্ষা দিতে হবে। আয় বাড়াতে হবে, জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। 

‘এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সংগঠনটির আহ্বায়ক ডক্টর দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এসব কথা বলেছেন। অতিমারি দেশের পিছিয়ে পড়া মানুষের উপর এবং এসডিজি সূচকগুলোর উপর কী প্রভাব ফেলেছে তার মূল্যায়ন তুলে ধরতে এ সভার আয়োজন করে প্ল্যাটফর্মটি। দেশের ৪০ জন গবেষকের সঙ্গে আলোচনা করে এই মূল্যায়ন তৈরি করেছে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম। 

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, পিছিয়ে পড়া মানুষের সুরক্ষার জন্য এই মুহূর্তে টাকার দর পতন আটকাতে হবে। টাকার দরপতন আটকানো না গেলে আমদানি করবে। এতে মূল্যস্ফীতি আমদানি হবে। সুতরাং বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার সময় এসেছে। পাশাপাশি ঋণের হার কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। 

তিনি বলেন, জ্বালানি ও অন্যান্য পণ্যের শুল্ক করে তারিফ কমাতে হবে। বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া মানুষ বেশি ব্যবহার করে যেসব পণ্য সেগুলোর আমদানি খরচ কমানোর উদ্যোগ দরকার। একইসঙ্গে যারা পিছিয়ে পড়া মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করবে তাদেরকে কর রেয়াত দেওয়ার প্রস্তাব করেন তিনি। 

টিসিবির সরবরাহ বাড়ানো, খাদ্য গ্যাস সারে ভর্তুকি বাড়ানো এবং কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচিসহ অন্যান্য কর্মসূচি বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন তিনি। তিনি বলেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরকারকে সাশ্রয়ী হতে হবে। গ্রামীণ স্বাস্থ্য সেবা এবং শিক্ষা খাতে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। 

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের প্রতিনিধি ফাতেমা ইউসুফ। আর সভাপতিত্ব করেন হেলথ ওয়র্কের প্রধান ডক্টর মোস্তাক রেজা চৌধুরী। 

অনুষ্ঠানে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের মূল্যায়ন তুলে ধরেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি জানান, টিকাদানে কিছুটা হলেও বৈষম্য হয়েছে। টিকার প্রথম ডোজ ঢাকা বিভাগের মানুষ সবচেয়ে বেশি পেয়েছে। সবচেয়ে কম পেয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে। এ থেকে বোঝা যায় যেখানে আয়-ব্যয় সম্পদ কেন্দ্রীভূত সেখানে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়ায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তবে দ্বিতীয় ডোজের ক্ষেত্রে খুলনা বিভাগ সবচেয়ে এগিয়ে, অন্য বিভাগগুলো পিছিয়ে। টিকা বিতরণের ক্ষেত্রে সংক্রমণ হারের বিষয়টি যুক্ত কিনা সেটা এখানে অবশ্য বিবেচনাযোগ্য। তবে তৃতীয় ডোজ টিকার ক্ষেত্রে পুরুষদের তুলনায় নারীরা কম পেয়েছে। 

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এসডিজির এমন কোনো অভিষ্ট নেই যেখানে এই অতিমারির নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। তবে প্রথাগতভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের উপরে এই প্রভাব অনেক বেশি। নতুনভাবে যারা পিছিয়ে পড়েছে তাদের উপর অনেক প্রভাব ফেলেছে। 

তিনি বলেন, অতিমারির প্রভাবকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে কম মাত্রা, মাঝারি মাত্রা ও উচ্চমাত্রা। গবেষণায় দেখা গেছে কম মাত্রার কোনো প্রভাব নেই। মাঝারি মাত্রায় প্রভাব ৫৭ শতাংশ আর উচ্চমাত্রার প্রভাবের হার ৪৩ শতাংশ । 

তিনি বলেন এই প্রভাব অন্তত তিন বছর থাকবে। তিন বছরের বেশিও হতে পারে। বিশেষ করে বয়স্ক শিশু, চর, হাওর অঞ্চলের মানুষ, আদিবাসী, দলিত ও প্রতিবন্ধীদের উপর প্রভাব সবচেয়ে বেশি। সামগ্রিক বিবেচনায় অতিমারি অর্থনীতিতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে। এর পরেই প্রভাব পড়েছে সামাজিক, সুশাসন ও পরিবেশের ওপর।

আরও পড়ুন

×