পিছিয়ে পড়াদের ক্রয়ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে হবে
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২২ | ১২:০০
করোনার অভিঘাতে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বা এসডিজির সব সূচক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। ফলে দারিদ্র্য বেড়েছে। এ ছাড়া সামাজিক, সুশাসন ও পরিবেশগত ক্ষতি হয়েছে। এতে এসডিজি বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ আরও বেড়েছে। কারণ করোনা অতিমারির আগে থেকেই বাংলাদেশ এসডিজির লক্ষ্যগুলো ঠিকমতো বাস্তবায়নে পিছিয়ে ছিল। ফলে আগামী ৮ বছরে এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে সরকারকে এখন বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। নতুবা এসডিজির মূলনীতি 'কাউকে পেছনে রাখা যাবে না' এজেন্ডা বাস্তবায়ন হবে না।
গতকাল বৃহস্পতিবার এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত 'বাংলাদেশে এসডিজি বাস্তবায়নে অতিমারি কী প্রভাব ফেলবে?' শীর্ষক অবহিতকরণ ও পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রতিবেদন তুলে ধরেন নাগরিক পল্গ্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। দেশের ৪০ জন গবেষকের সঙ্গে আলোচনা করে এ গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করেছে নাগরিক পল্গ্যাটফর্ম। এ সময় তিনি করোনার ক্ষতির প্রেক্ষিতে আগামী অর্থবছরের বাজেটে কোন ধরনের উদ্যোগ দরকার, সে বিষয়েও আলোচনা করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, করোনার প্রভাবে দারিদ্র্য বেড়েছে। নতুন করে অনেকে দরিদ্র হয়েছেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে দরিদ্র শ্রেণির মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এ পরিস্থিতিতে পিছিয়ে পড়া মানুষের ক্রয়ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য আয় বাড়ানো ও পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার উদ্যোগ দরকার। এর বাইরে তিনি টাকার মান ধরে রাখা, সুদের হার সমন্বয় করা, গরিব মানুষের প্রয়োজন বেশি এমন নিত্যপণ্যের শুল্ক্ক-কর কমানো, নতুন কর্মসংস্থান করলে করপোরেট কর কমানোসহ প্রস্তাব করেন। একই সঙ্গে টিসিবির কার্যক্রম বাড়ানো, বিদ্যুৎ-জ্বালানি, খাদ্যপণ্য ও সারের মতো ভর্তুকির খাত পুনর্বিন্যাস করা, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাড়ানো, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) টাকা খরচে সাশ্রয়ী হওয়া এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর সুপারিশ করেন।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, করোনার প্রভাবে এসডিজির সূচকগুলো কী অবস্থায় আছে, তা জানার মতো পর্যাপ্ত তথ্য নেই। অনেক ক্ষেত্রে বিকৃত তথ্য ব্যবহারের প্রবণতা দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে মূল্যস্টম্ফীতি বড় ইস্যু হয়ে উঠেছে। সামনে নির্বাচন, তাই মূল্যস্টম্ফীতির ইস্যু রাজনৈতিক নেতৃত্বের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নাগরিক পল্গ্যাটফর্মের কোরগ্রুপ সদস্য ও বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের সমন্বয়ক আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী। তিনি বলেন, কভিডকে বড় সুযোগ হিসেবে দেখতে হবে। এ সুযোগে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের সংস্কার করা উচিত। তবে সে জন্য পথনকশা তৈরি করা দরকার।
উপস্থাপিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, টিকার প্রথম ডোজ ঢাকা বিভাগের মানুষ সবচেয়ে বেশি পেয়েছে। সবচেয়ে কম পেয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগের মানুষ। তবে দ্বিতীয় ডোজের ক্ষেত্রে খুলনা বিভাগ সবচেয়ে এগিয়ে। তবে তৃতীয় ডোজ টিকার ক্ষেত্রে পুরুষদের তুলনায় নারীরা কম পেয়েছে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, এসডিজির এমন কোনো অভীষ্ট নেই যেখানে অতিমারির নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। তবে প্রথাগতভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের ওপরে এ প্রভাব অনেক বেশি। তিনি বলেন, অতিমারির প্রভাবকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে কম মাত্রা, মাঝারি মাত্রা ও উচ্চমাত্রা। গবেষণায় দেখা গেছে কম মাত্রার কোনো প্রভাব নেই। মাঝারি মাত্রার প্রভাব ৫৭ শতাংশ আর উচ্চমাত্রার প্রভাবের হার ৪৩ শতাংশ। তিনি বলেন, এ প্রভাব অন্তত তিন বছর থাকবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তিন বছরের বেশিও হতে পারে। বিশেষ করে বয়স্ক, শিশু, চর, হাওরাঞ্চলের মানুষ, আদিবাসী, দলিত ও প্রতিবন্ধীদের ওপর প্রভাব সবচেয়ে বেশি। অর্থনীতি এবং সামাজিক খাত পুনরুজ্জীবিত না করতে পারলে অতিমারির আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়া যাবে না।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, এসডিজির বিভিন্ন সূচকে অতিমারির প্রভাব মূল্যায়নে যথাযথ ডাটা পাওয়া যাচ্ছে না। তথ্য-উপাত্ত ঠিকমতো তৈরি না হলে এসডিজি বাস্তবায়ন ব্যাহত হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন নাগরিক পল্গ্যাটফর্মের সমন্বয়ক আনিসাতুল ফাতেমা ইউসুফ, মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ওয়াটারএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক রুমানা হক। বক্তারা বলেন, অতিমারিতে লিঙ্গবৈষম্য বেড়েছে। বেড়েছে নগর দারিদ্র্য। এ জন্য শহর এলাকায় সামাজিক নিরাপত্তা আরও প্রসারিত করা দরকার। দরকার কাজের সুযোগ বাড়ানোর। অন্যদিকে পরিবেশ ও জলবায়ুও ক্ষতির মুখে পড়েছে। সর্বোপরি শিশুশিক্ষায় বিশেষ মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত 'বাংলাদেশে এসডিজি বাস্তবায়নে অতিমারি কী প্রভাব ফেলবে?' শীর্ষক অবহিতকরণ ও পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রতিবেদন তুলে ধরেন নাগরিক পল্গ্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। দেশের ৪০ জন গবেষকের সঙ্গে আলোচনা করে এ গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করেছে নাগরিক পল্গ্যাটফর্ম। এ সময় তিনি করোনার ক্ষতির প্রেক্ষিতে আগামী অর্থবছরের বাজেটে কোন ধরনের উদ্যোগ দরকার, সে বিষয়েও আলোচনা করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, করোনার প্রভাবে দারিদ্র্য বেড়েছে। নতুন করে অনেকে দরিদ্র হয়েছেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে দরিদ্র শ্রেণির মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এ পরিস্থিতিতে পিছিয়ে পড়া মানুষের ক্রয়ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য আয় বাড়ানো ও পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার উদ্যোগ দরকার। এর বাইরে তিনি টাকার মান ধরে রাখা, সুদের হার সমন্বয় করা, গরিব মানুষের প্রয়োজন বেশি এমন নিত্যপণ্যের শুল্ক্ক-কর কমানো, নতুন কর্মসংস্থান করলে করপোরেট কর কমানোসহ প্রস্তাব করেন। একই সঙ্গে টিসিবির কার্যক্রম বাড়ানো, বিদ্যুৎ-জ্বালানি, খাদ্যপণ্য ও সারের মতো ভর্তুকির খাত পুনর্বিন্যাস করা, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাড়ানো, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) টাকা খরচে সাশ্রয়ী হওয়া এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর সুপারিশ করেন।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, করোনার প্রভাবে এসডিজির সূচকগুলো কী অবস্থায় আছে, তা জানার মতো পর্যাপ্ত তথ্য নেই। অনেক ক্ষেত্রে বিকৃত তথ্য ব্যবহারের প্রবণতা দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে মূল্যস্টম্ফীতি বড় ইস্যু হয়ে উঠেছে। সামনে নির্বাচন, তাই মূল্যস্টম্ফীতির ইস্যু রাজনৈতিক নেতৃত্বের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নাগরিক পল্গ্যাটফর্মের কোরগ্রুপ সদস্য ও বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের সমন্বয়ক আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী। তিনি বলেন, কভিডকে বড় সুযোগ হিসেবে দেখতে হবে। এ সুযোগে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের সংস্কার করা উচিত। তবে সে জন্য পথনকশা তৈরি করা দরকার।
উপস্থাপিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, টিকার প্রথম ডোজ ঢাকা বিভাগের মানুষ সবচেয়ে বেশি পেয়েছে। সবচেয়ে কম পেয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগের মানুষ। তবে দ্বিতীয় ডোজের ক্ষেত্রে খুলনা বিভাগ সবচেয়ে এগিয়ে। তবে তৃতীয় ডোজ টিকার ক্ষেত্রে পুরুষদের তুলনায় নারীরা কম পেয়েছে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, এসডিজির এমন কোনো অভীষ্ট নেই যেখানে অতিমারির নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। তবে প্রথাগতভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের ওপরে এ প্রভাব অনেক বেশি। তিনি বলেন, অতিমারির প্রভাবকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে কম মাত্রা, মাঝারি মাত্রা ও উচ্চমাত্রা। গবেষণায় দেখা গেছে কম মাত্রার কোনো প্রভাব নেই। মাঝারি মাত্রার প্রভাব ৫৭ শতাংশ আর উচ্চমাত্রার প্রভাবের হার ৪৩ শতাংশ। তিনি বলেন, এ প্রভাব অন্তত তিন বছর থাকবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তিন বছরের বেশিও হতে পারে। বিশেষ করে বয়স্ক, শিশু, চর, হাওরাঞ্চলের মানুষ, আদিবাসী, দলিত ও প্রতিবন্ধীদের ওপর প্রভাব সবচেয়ে বেশি। অর্থনীতি এবং সামাজিক খাত পুনরুজ্জীবিত না করতে পারলে অতিমারির আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়া যাবে না।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, এসডিজির বিভিন্ন সূচকে অতিমারির প্রভাব মূল্যায়নে যথাযথ ডাটা পাওয়া যাচ্ছে না। তথ্য-উপাত্ত ঠিকমতো তৈরি না হলে এসডিজি বাস্তবায়ন ব্যাহত হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন নাগরিক পল্গ্যাটফর্মের সমন্বয়ক আনিসাতুল ফাতেমা ইউসুফ, মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ওয়াটারএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক রুমানা হক। বক্তারা বলেন, অতিমারিতে লিঙ্গবৈষম্য বেড়েছে। বেড়েছে নগর দারিদ্র্য। এ জন্য শহর এলাকায় সামাজিক নিরাপত্তা আরও প্রসারিত করা দরকার। দরকার কাজের সুযোগ বাড়ানোর। অন্যদিকে পরিবেশ ও জলবায়ুও ক্ষতির মুখে পড়েছে। সর্বোপরি শিশুশিক্ষায় বিশেষ মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
- বিষয় :
- এসডিজি
- ক্রয়ক্ষমতা
- ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য