আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে পণ্যের সরবরাহ চেইনে মানবাধিকারের ইস্যু সামনে আসছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মানবাধিকার প্রশ্নে করপোরেট প্রতিষ্ঠানের ওপর বাধ্যবাধকতা আরোপ করছে। বাংলাদেশের রপ্তানিকারক এবং ব্যবসায়ীদের বৈশ্বিক এ চাহিদা মোকাবিলা করতে হবে। রোববার মেট্রোপলিটান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ঢাকা (এমসিসিআই) এবং বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন (বিইএফ) আয়োজিত 'মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধে সাপ্লাই চেইনে করপোরেট ডিউ ডিলিজেন্স অবলিগেশন' বিষযক ব্রিফিং সেশনে এমন তথ্য জানানো হয়। সভার উদ্দেশ্য ছিল জার্মান সরকারের সাম্প্রতিক ডিউ ডিলিজেন্স অবলিগেশন বিষয়ে ব্যবসায়ীদের জানানো এবং এর বাস্তবায়ন।

এমসিসিআই জানিয়েছে, সম্প্রতি জার্মানি 'করপোরেট ডিউ ডিলিজেন্স অবলিগেশন ইন সাপ্লাই চেইন' বিষয়ে একটি আইন প্রণয়ন করেছে। এ ছাড়া ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সাসটেইনেবল করপোরেট ডিউ ডিলিজেন্স অবলিগেশনের ওপর একটি দিকনির্দেশনামূলক প্রস্তাব নিয়ে এসেছে। জার্মান আইনটি ২০২৩ সালে কার্যকর হবে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের গাইডলাইন গত ফেব্রুয়ারিতে প্রস্তাব করা হয়।

এমসিসিআই সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, যেহেতু বর্তমান বিশ্ব কঠোর মানবাধিকার ডিউ ডিলিজেন্স চাহিদার দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশের ব্যবসাকেও সেভাবেই এর মোকাবিলা করতে হবে। তিনি বলেন, ডিউ ডিলিজেন্স মেনে চলার ক্ষেত্রে ব্যবসার খরচ বাড়ার ব্যাপার আসবে। তবে এর মাঝেই প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন একসঙ্গে চালিয়ে যেতে হবে।

বিইএফের সভাপতি আরদাশির কবির বলেন, বাংলাদেশের মালিক পক্ষ শ্রমিকদের মূল্য বোঝে এবং তাদের রক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তিনি মানবাধিকার বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করেন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত আকিম ট্রোস্টার ডিউ ডিলিজেন্স অবলিগেশন বিষয়ে জার্মান আইন এবং ইইউর প্রস্তাবের বিষয়ে মতামত দেন। নতুন জার্মান আইনের দায়বদ্ধতা যে সরাসরি জার্মান কোম্পানির ওপরেই পড়বে, তা তুলে ধরেন তিনি।

আইএলও বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর টুওমো পুতিআইনেন 'হিউম্যান রাইটস ডিউ ডিলিজেন্স' বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশ ডিউ ডিলিজেন্স বাস্তবায়নের জন্য রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড উন্নত করতে হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, জার্মান আইন বাংলাদেশে প্রত্যক্ষভাবে প্রয়োগ হবে না। কিন্তু বিষয়টি মানতে হবে। কেননা এর উপাদানগুলো জিএসপি প্লাস প্রণোদনার সঙ্গে গৃহীত হবে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহসান-ই-এলাহী বলেন, সরকার শ্রমজীবী মানুষকে এবং মানবাধিকার রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এমসিসিআইর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কামরান টি রহমান।