এখন থেকে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কনসোর্টিয়াম ও জয়েন্ট ভেঞ্চার বা যৌথ উদ্যোগের প্রতিষ্ঠান নিজেরাই আমদানি ঋণপত্র বা এলসি খুলে প্রকল্পের মালপত্র আমদানি করতে পারবে। এ জন্য তাদের আমদানি নিবন্ধন সনদ বা আইআরসি নেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। তবে যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তর (আরজেএসসি) ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) থেকে অনাপত্তি নিতে হবে।

সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তর, বিডা, আরজেএসসি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এ এইচ এম সফিকুজ্জামান সমকালকে বলেন, আরজেএসসি ও বিডার অনাপত্তি নিয়ে কনসোর্টিয়াম ও জয়েন্ট ভেঞ্চার প্রতিষ্ঠানকে প্রকল্পের মালপত্র আমদানি করার সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হবে।

এতদিন কনসোর্টিয়াম বা জয়েন্ট ভেঞ্চার প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের মালপত্র নিজেরা আমদানি করতে পারত না। কারণ বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করতে আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে আইআরসি নিতে হয়। আর আইআরসি পেতে হলে আরজেএসসি ও বিডাতে নিবন্ধন থাকা দরকার হয়। কিন্তু কনসোর্টিয়াম বা জয়েন্ট ভেঞ্চার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরজেএসসি ও বিডাতে নিবন্ধন দেওয়া হয় না। কারণ এ ধরনের প্রতিষ্ঠান শুধু একটি নির্দিষ্ট প্রকল্পের জন্য নিয়োজিত হয়। প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে প্রতিষ্ঠানগুলোর আর কোনো কার্যক্রম থাকে না। ফলে এ ধরনের কোম্পানিকে এতদিন তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে আমদানি করত। এতে তাদের পণ্য কেনা বাবদ খরচ বেশি হতো।

সম্প্রতি পাঁচটি জয়েন্ট ভেঞ্চার প্রতিষ্ঠান বিডা ও আরজেএসসিতে নিবন্ধন চেয়ে আবেদন করে। পাশাপাশি আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে আইআরসি চেয়ে আবেদন করে। বিডা ও আরজেএসসি তাদের নিবন্ধন দিতে ব্যর্থ হয়। যে পাঁচটি কোম্পানি আবেদন করে, সেগুলো হচ্ছে- এভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়াম, সিওয়াইডব্লিউইবি-সিসিইসিসি-জেভি, আফকনস কেপিটিএল জেভি, পিভিএল আইসিএম জেভি এবং ওটি জয়েন্ট ভেঞ্চার। এসব কোম্পানি প্রকল্পের পাথর ও অন্যান্য মালপত্র আমদানির জন্য আইআরসি চায়। কিন্তু আইন অনুযায়ী কোম্পানিগুলোকে অনুমোদন দেওয়া সম্ভব হয়নি।

এরপর আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে বিষয়টি সমাধানের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠি দেওয়া হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গতকাল সভাটির আয়োজন করে। সভায় আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তর, বিডা, আরজেএসসি, এনবিআরসহ সংশ্নিষ্ট সব পক্ষ সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কনসোর্টিয়াম ও জয়েন্ট ভেঞ্চার প্রতিষ্ঠানকে সরাসরি আমদানির অনুমোদন দেওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে।

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) থাকা প্রকল্পের একটি অংশ কনসোর্টিয়াম ও জয়েন্ট ভেঞ্চার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হচ্ছে। বিভিন্ন পণ্য ও যন্ত্রপাতি আমদানি করতে হয় এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে।