স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। পাশাপাশি মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করতে হবে। পাশাপাশি উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে এলডিসির সুবিধা অব্যাহত রাখতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনাও দরকার।

শনিবার ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই আয়োজিত 'এক্সপোর্ট চ্যালেঞ্জেস অব বাংলাদেশ আফটার গ্র্যাজুয়েশন ফ্রম এলডিসি স্ট্যাটাস: অপশনস ফর দ্য প্রাইভেট সেক্টর' শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। রাজধানীর মতিঝিলে ফেডারেশন ভবনে আয়োজিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, এলডিসি উত্তরণের পরে যেসব চ্যালেঞ্জ আসবে সেগুলোর মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এখন দরকার সরকারি-বেসরকারি উভয়পক্ষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করা।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, সবচেয়ে চ্যালেঞ্জে পড়বে রপ্তানি খাত। কারণ রপ্তানি আয়ের সিংহভাগ আসছে শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা থেকে। যা এলডিসি উত্তরণের পরে শেষ হয়ে যাবে। এজন্য রপ্তানি খাত ও অভ্যন্তরীণ শিল্পকে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষম করে গড়তে হবে।

মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য মোস্তফা আবিদ খান বলেন, শুল্ক্কমুক্তসহ অন্যান্য সুবিধা হারালে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এজন্য দীর্ঘমেয়াদে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে হবে। বাড়াতে হবে উৎপাদনশীলতা। বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, দক্ষতা উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসতে হবে। পোশাক খাতের মতো করে অন্যান্য রপ্তানি খাতকেও সমান সুবিধা দিতে হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, বাজার কোনো সমস্যা না। পণ্য তৈরি ও পণ্য বাজারে পৌঁছানোই সমস্যা। সেটি কাটিয়ে উঠতে সরকার নীতিমালা করছে। বৈচিত্র্যময় পণ্য উৎপাদনে যাওয়ার পরামর্শ দেন শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা। পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শরিফা খান বলেন, দেশে যত পণ্য তৈরি হয়, তার বড় অংশ রপ্তানি করা গেলে এলডিসি উত্তরণের চ্যালেঞ্জ বড় হবে না। সেজন্য উদ্যোক্তা, কর্মী, সরকার সব পর্যায়ে সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, এখন সময় হয়েছে এলডিসি উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় করণীয় ঠিক করে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া। আগামী বাজেটেই এ বিষয়ে উদ্যোগ থাকা উচিত বলে তিনি মনে করেন।

অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের পরও বাড়তি মেয়াদে সুবিধা চাইতে হবে বিভিন্ন দেশ ও জোটের কাছে।

ব্যবসা প্রক্রিয়াকে সহজ করা এবং দক্ষতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন পিডব্লিউসির ব্যবস্থাপনা অংশীদার মামুন রশিদ। এফবিসিসিআইয়ের উপদেষ্টা মঞ্জুর আহমেদ বলেন, উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে জোর দিতে হবে।

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলেন, ফাইন্যান্সিয়াল ডাইভারসিটির প্রস্তুতি দরকার।