দেরিতে মূল্য পরিশোধের শর্তে আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খোলা কমানোর পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডলারের দর আরও বাড়লে আমদানিকারককে যাতে বাড়তি অর্থ গুণতে না হয় সে জন্য এমন পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ডলার সরবরাহ বাড়াতে রপ্তানি বিল দ্রুত নিস্পত্তি করতে বলা হয়েছে।

রোববার ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাফেদার সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এসব পরামর্শ দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন গভর্নর ফজলে কবির। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল ও কাজী ছাইদুর রহমান, এবিবির চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি সেলিম আর এফ হোসেন, বাফেদার চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের এমডি আতাউর রহমান প্রধানসহ বিভিন্ন ব্যাংকের এমডি উপস্থিত ছিলেন। বৈদেশিক মুদ্রাবাজার পরিস্থিতি নিয়ে এ বৈঠক ডকা হয়। ডলারের দর বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানানো হয়।

জানা গেছে, বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, ডলারের সরবরাহ বাড়াতে ব্যাংকগুলোকে পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স কতো সহজে আনা যায় সে ব্যবস্থা নিতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো নীতি সহায়তার প্রয়োজন হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তা দেওয়া হবে।

ব্যাংকাররা জানান, সাধারণভাবে আমদানি করা পণ্য বুঝে পাওয়ার পর সঙ্গে-সঙ্গে গ্রাহকের পক্ষে দায় পরিশোধ করে ব্যাংক। তবে মূলধনী যন্ত্রপাতি এবং শিল্পে ব্যবহারিত কাঁচামাল বাকিতে আমদানি করতে পারেন। আর এক্ষেত্রে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে পণ্য পাওয়ার সর্বোচ্চ এক বছর এবং শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালে সর্বোচ্চ ৬ মাসের বাকি রাখা যায়।

কিছুদিন আগেও আমদানি দায় পরিশোধে ডলারের দর ছিল ৮৫ টাকার নিচে। এখন প্রতি ডলার কিনতে হচ্ছে ৯৩ টাকা বা তার বেশি দরে। এতে করে আমদানিকারকরা অনেক ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। আগামীতে ডলারের দর আরও বাড়লে আরও ক্ষতিতে পড়বেন। যে কারণে এমন পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

অন্যদিকে, রপ্তানিকারক পণ্য পাঠানোর পর অর্থ দেশে আনতে ১২০দিন পর্যন্ত সময় পান। তবে ডলারের সরবরাহ বাড়াতে ক্রেতার সঙ্গে সমঝোতা করে যতো দ্রুত সম্ভব রপ্তানি বিল ফেরত আনতে হবে। ব্যাংকগুলো জোর করে এমন করবে তা নয়। বরং গ্রাহকদের ভালো-মন্দ দিক বুঝিয়ে এটি করতে হবে।