- অর্থনীতি
- কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ চায় রিহ্যাব
কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ চায় রিহ্যাব

প্রতীকী ছবি
আসছে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে বিনা প্রশ্নে অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। এ ছাড়া জমি ও ফ্ল্যাটের নিবন্ধন ব্যয়, নির্মাণসামগ্রীর খরচ কমানোসহ আবাসন খাতের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠনের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
শনিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান সংগঠনটির সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন (কাজল)।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, 'রিহ্যাবের বাজেট প্রস্তাবনায় আমরা বিনা প্রশ্নে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলাম। ২০২০-২১ অর্থবছরে বিনা প্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ থাকায় ২০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা অর্থনীতির মূল ধারায় এসেছে। সরকার দুই হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব পেয়েছে।'
তিনি বলেন, গত এক বছরে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকার পরিমাণ বেড়েছে ৫৫ শতাংশ। গত বাজেট অনুমোদনের পর অপ্রদর্শিত অর্থের বিনিয়োগ সম্পর্কে স্পষ্ট ব্যাখ্যার অভাবে দেশে বিনিয়োগ কম হয়েছে। অপ্রদর্শিত অর্থ বিনা প্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত থাকলে অর্থনীতিতে এর সুফল আসবে।
পাচার করা টাকা দেশে আনার উদ্যোগকে 'সাহসী পদক্ষেপ' উল্লেখ করে রিহ্যাব সভাপতি বলেন, দেশ থেকে যাতে টাকা পাচার না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বৈদেশিক মুদ্রা কীভাবে দেশের ভেতরে রাখা যায়, তার ব্যবস্থা করছে। এই অবস্থায় যদি অপ্রদর্শিত অর্থ পাচারের সুযোগ না রেখে মূল ধারার অর্থনীতিতে নিয়ে আসা যায়, তাহলে রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে। আসন্ন সংকট মোকাবিলা করাও সহজ হবে।
নানা রকম কর আরোপ ও সরকারের নীতি সহায়তার অভাবে আবাসন খাত মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনার ধাক্কা, নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি, মানুষের সামর্থ্যের মধ্যে মাসিক কিস্তি সুবিধা দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত আর্থিক ঋণ প্রবাহ না থাকায় অনেকের বাসস্থানের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না। গৃহায়ন খাতের বিক্রি কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে 'হাউজিং লোন' নামে ২০ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন, জমি ও ফ্ল্যাট নিবন্ধনে ব্যয় কমানোর অনুরোধ জানিয়ে আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, সেকেন্ডারি বাজারে ব্যবসা সৃষ্টির সুযোগ তৈরি করতে হবে এবং নির্মাণসামগ্রীর দাম কমাতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
বাজেটে নির্মাণ খাত-সংশ্নিষ্ট কয়েকটি পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করায় হতাশা প্রকাশ করে রিহ্যাব সভাপতি বলেন, গত কয়েক মাস দফায় দফায় রডের দাম বেড়েছে। ইস্পাতের কাঁচামালের ওপর শুল্ক কর কমানো দরকার। অথচ উল্টো বিক্রয় পর্যায়ে প্রতি টন বিলেটের ওপর ২০০ টাকা ও রডে ২০০ টাকা ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। লিফটের কর এক লাফে ১৯ শতাংশ বেড়ে ৩০ শতাংশে উঠেছে। বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক তারের বিদ্যমান শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ, পাইপের ক্ষেত্রে শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। নতুন করে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলের ওপর ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ফলে নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাবে। এ কারণে নতুন ও নির্মাণাধীন প্রকল্পগুলোর প্রতি বর্গফুটের ব্যয় প্রায় এক হাজার ৫০০ টাকা করে বেড়ে যাবে, যা বহন করতে হবে গ্রাহককে।
সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাবের সিনিয়র সহসভাপতি ইন্তেখাবুল হামিদ, প্রথম সহসভাপতি কামাল মাহমুদ, সহসভাপতি নজরুল ইসলাম, শরীফ আলী খান, মোহাম্মদ সোহেল রানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন