- অর্থনীতি
- অর্থনীতি গতিশীল রাখতে কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে
সিজিএসের সেমিনারে বক্তারা
অর্থনীতি গতিশীল রাখতে কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে

দেশে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় সামাজিক নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, নারী ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বিষয়ে জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলেছেন, দেশ-বিদেশে দক্ষ কর্মীর চাহিদা রয়েছে। তাই দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে বড় প্রকল্প নেওয়া দরকার। কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারলে অর্থনীতি গতিশীল থাকবে।
শুক্রবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে 'জাতীয় বাজেট এবং অর্থনৈতিক গতিধারা' শীর্ষক সেমিনারে তাঁরা এসব কথা বলেন। সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) এ আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, দেশ চালাতে সুশাসন অবশ্যই দরকার। তবে সবার আগে প্রয়োজন জনগণের চাহিদাকে মূল্যায়ন করা। সুশাসনের রাস্তা অনেক দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় সরাসরি কেউ যেতে পারে না। পৃথিবীর বৃহৎ গণতন্ত্রের দেশগুলোও বহু বছরের অপেক্ষার পর সুশাসন অর্জন করতে পেরেছে।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে। সংসদে পাস হওয়ার আগে এ নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হবে।
বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনের তথ্য দিয়ে সেমিনারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পরিসংখ্যান- সক্ষমতার দিক থেকে বাংলাদেশের স্কোর ৬০, যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন। বর্তমান পরিস্থিতিতে সামাজিক নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে সবচেয়ে বেশি সরকারি বিনিয়োগ দরকার। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে এই খাতগুলো অবহেলিত হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারপারসন ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, মূল্যস্ফীতিকে কেবল সংখ্যা দিয়ে বিচার করলে হবে না। এর সঙ্গে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়ের প্রসঙ্গও জড়িত। করোনাকালে কর্মসংস্থান অনেক কমে গেছে। নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন অনেকে। তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কমসূচিতে যাঁদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কথা, তাঁরা অন্তর্ভুক্ত হতে পারছেন না। তাই কর্মসংস্থান বৃদ্ধির বিকল্প নেই।
এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, বর্তমানে দেশে রাজনীতি অর্থনীতিকে ছাপিয়ে উঠেছে। ফলে বাস্তবায়নযোগ্য বাজেট হচ্ছে না। তাঁর মতে, পদ্মা সেতুর টোলের দায়িত্ব বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দিলে জনগণের আয়ের একটি অংশ দেশের বাইরে চলে যাবে। এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আলোচনা করা হচ্ছে না।
অনুষ্ঠানে দেশের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোকে যুগোপযোগী করে দক্ষ জনবল তৈরির পরামর্শ দেন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ)।
এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন বলেন, শিক্ষাব্যবস্থাকে সার্টিফিকেটমুখী না করে বাস্তবমুখী করতে হবে। এ ছাড়া এনবিআরের সংস্কার দরকার বলেও মনে করেন তিনি।
বারভিডার সাবেক সভাপতি আবদুল হক বলেন, দেশে অপরিকল্পিত উন্নয়ন হচ্ছে। ফলে রাজস্ব ব্যয় বাড়ছে; কিন্তু আয় সেভাবে বাড়ছে না। এই ব্যয় কমানোর জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেই।
বাজেটে নারীদের জন্য অর্থ বরাদ্দ থাকলেও সেই অর্থ ঠিকভাবে খরচ হয় না বলে অভিযোগ করেন উইমেন এন্টারপ্রেনারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি নাসরিন ফাতেমা আউয়াল।
সভাপতির বক্তব্যে সিজিএসের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, ডেলটা প্ল্যানের উদ্যোগকে কীভাবে পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো যায়, তা ভাবতে হবে। পানিদূষণ রোধে বাজেটে বরাদ্দ রাখতে হবে।
মন্তব্য করুন